১৯ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৭:১১:০৮ পূর্বাহ্ন


কথার কথকতা
মাইন উদ্দিন আহমেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০৫-২০২২
কথার কথকতা


বছরটা ছিলো ২০২১। ওই বছরই ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা থেকে ‘তরফদার প্রকাশনী’ আমার ইংরেজি কবিতার বই ‘লভ ইজ সফ্টওয়্যার বন্ডেজ’ প্রকাশ করেছিলো। এটি নিউইয়র্কে এনে অনেককেই উপহার দিয়েছিলাম। তখন সাংবাদিক-সাহিত্যিক আকবর হায়দার কিরন সাহেবকে দেয়ার জন্য একটা বই হাতে করে আমাদের ব্রুকলিনের বাসা থেকে জ্যাকসন হাইটে এলাম। ফোনে যোগাযোগ করে জানলাম, তিনি দূরে আছেন। বইটা কার কাছে দিলে উনি পাবেন তা জানতে চাইলে সাকিল সাহেবের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গ্রাফিক্স ওয়ার্ল্ডে রেখে যেতে বললেন। আমি তা-ই করলাম। সেদিন গ্রাফিক্স ওয়ার্ল্ড প্রতিষ্ঠানটিতে পদার্পণ ছিলো একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। পরবর্তী সময়ে দেখলাম, স্থানটি একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বটে, এরও বেশি যা দেখা গেলো তা হচ্ছে, স্থানটিতে বাছাই করা কিছু মানুষের সমাগম হয়, যাঁরা সত্যিকার অর্থেই বিভিন্ন ক্ষেত্রের উজ্জ্বল তারকা। সেখানেই একসময় পরিচয় হলো এক ইয়ংম্যানের সাথে, যাকে আমি দেখেছি আয়োজন করে যাচ্ছেন তারকাদের নিয়ে বিভিন্ন জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান, নিউইয়র্কের বিভিন্ন নামকরা সমাবেশস্থলে। তিনি সবারই পরিচিত মানুষ, নাম তার আলমগীর খান আলম।

নিউইয়র্কে সবাই জানে যে, আলম সাহেবের প্রতিষ্ঠানের নাম শো-টাইম মিউজিক’, এই ব্যানারে তিনি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকেন যেগুলোর কলেবর আকর্ষণীয় এবং বৃহৎ পরিসরের হয়ে থাকে। ওনার বেশিরভাগ অনুষ্ঠানই হয়ে থাকে তারকাকেন্দ্রিক, চিত্রজগত এবং সংগীত জগতের। সাহিত্য ক্ষেত্রেও এখানে ‘হুমায়ূন মেলা’ এবং ‘হুমায়ূন কনভেনশন’ আয়োজন করে সাড়া জাগাতে সফল হয়েছেন তিনি। অতি সম্প্রতি ল করা গেছে যে, তিনি তাঁর কর্মকাণ্ডের পরিধি আরো প্রসারিত করেছেন। এগুলো উল্লেখ করার আগে এই ভদ্রলোকের কর্মকাণ্ড কীভাবে আমাকে স্পর্শ করলো তার একটা সংপ্তি বর্ণনা দিতে হয়।

নিউইয়র্কে আমার অবতরণ হয়েছিলো ২০১৮-এর শেষদিকে। ঢাকায় চার দশকেরও বেশি সময় সংবাদপত্র জগতে কাজ করার প্রেক্ষিতে উল্লেখযোগ্য অবস্থানে কয়েকজন শুভাকাক্সক্ষী আমাকে নিউইয়র্কের বাংলা মিডিয়া সম্পৃক্ত কয়েকজনের সান্নিধ্যে আসার পরামর্শ দিলেন। ওনারা চাচ্ছিলেন এদের কাছাকাছি এলে এখানে আমার জীবনযাপন সহজ হয়ে যাবে। কিন্তু চেষ্টা করেও যখন আমি এখানকার মিডিয়ায় কর্মরত লোকজনকে বুঝতে পারছিলাম না, তখন আমার খুবই হতাশ হয়ে ভেঙেপড়ার মতো অবস্থা হলো। এ অবস্থা থেকে উঠে আসতে আমাকে সাহায্য করেছিলেন সাংবাদিক ও সাহিত্যিক আকবর হায়দার কিরন। মিলিয়ন থ্যাংক্স এই ভদ্রলোককে। সাকিল সাহেবের গ্রাফিক্স ওয়ার্ল্ড নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যেখানে বিভিন্ন ভুবনের আন্তরিক তারকাগুলো প্রাণবন্ত আড্ডা দেয়, এই স্থানটি আমাকে চেনালেন কিরন সাহেব। এই ইমেজটি ধরে রাখার কৃতিত্ব সাকিল সাহেবেরও বটে। এখানেই পরিচয় হলো আলমগীর খান আলম সাহেবের সাথে। তিনি তাঁর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠাগুলো উপভোগ করার জন্য কিরন সাহেবের সাথে আমাকেও দাওয়াত দিতে থাকলেন। বেশ কয়েকটা অনুষ্ঠানে আমি হাজিরও হয়েছি। ওই রকম একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে একদিন শুনলাম সুর এবং সাধনার জাদুমাখা একটি গান, শিল্পী শাহ মাহবুবের কণ্ঠে। ইনি যখন সুরের ঢেউয়ে শব্দের নৌকা ভাসালেন, ‘মাকে যখন দেখি আমার দেশকে মনে হয়’ সাথে সাথে আমি চিরভক্ত হয়ে গেলাম এই শিল্পীর। আরো অনেককেই পেয়েছি, যাদের কথা আরেক দিন বলবো, আজ আলম সাহেব প্রসঙ্গে ফিরে আসি।

আগেই বলেছিলাম যে, শো-টাইম মিউজিক’ ব্যানারে আলম সাহেব বেশিরভাগ অনুষ্ঠান করতেন চিত্র বা সংগীত জগতের তারকাদের নিয়ে কিন্তু সম্প্রতি দেখা গেলো তিনি তাঁর দৃষ্টি আরো সম্প্রসারিত করেছেন। এবছরই দেখা গেলো তিনি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলে অনুষ্ঠান করেছেন, স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেছেন এবং বৈশাখের ছোঁয়া-সংবলিত ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছেন। পরিকল্পনা সম্পন্ন করেছেন এই মর্মে যে, মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই একটি অনুষ্ঠান করবেন যা একত্রে তিনটি উপলকে ধারণ করবে। ওনার প্রসারণ পরিকল্পনার শেষ তিনটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে এবং সেসব অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সুযোগে আমি ভদ্রলোকের মন-মানসিকতা বোঝার চেষ্টা করার সুযোগ পেয়েছি। আমার মনে হয়েছে, সফলভাবে এসব কর্মযজ্ঞের আয়োজন সাফল্যের সঙ্গে করতে পারাটা এক কঠিন সাধনার ব্যাপার এবং ক্ষেত্রে আলম সাহেব যে সীমাহীন সহনশীলতার সাথে এগিয়ে চলেন তা আসলেই বিস্ময়ের ব্যাপার। আমার একটা অভ্যাস আছে এরকম যে, কোনো গুণী মানুষের সন্ধান পেলে তিনি বয়সে আমার ছোট হলেও আমি তাকে শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে দেখি, হ্যাঁ, স্নেহ তো থাকেই। এই ভদ্রলোকের সুস্থিরতা ধরে রাখার অসাধারণ মতা দেখে আমি আপ্লুত হয়েছি এবং একদিন ওনার সাথে একান্তে কয়েক মিনিট কথা বলেছি। অন্যান্য সময় দেখা হলে সংেেপ সালাম এবং কুশলাদি বিনিময় হয় কিন্তু এদিন কথা বলেছি এই ভেবে যে, ওনাকে নিয়ে অল্প কিছু হলেও লিখবো। কথা বলে বাড়তি যা জানলাম তা অল্প কথায় আপনাদেরকে উপহার দিচ্ছি।

আলমগীর খান আলম সাহেবের শো-টাইম মিউজিক একটি বিনোদনমূলক প্রতিষ্ঠান, যা আমেরিকার সরকারি দফতরে রেজিস্ট্রিকৃত। তিনি এ প্রতিষ্ঠানের প্রেসিডেন্ট এবং সিইও। তাঁর এ প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে তিনি কাজ শুরু করেন ২০০০ সালে। এ পর্যন্ত শতাধিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। সত্যিই বিস্ময়কর! সবাই তাঁর প্রতিষ্ঠান এবং কর্মকাণ্ড পছন্দ করে, এটা তিনি জানেন। তিনি কষ্ট পান তখন, যখন দেখেন এতো কষ্ট করে আয়োজিত অনুষ্ঠানসমূহের সাফল্যে কেউ কেউ ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে তখন। তবে তিনি বিশ্বাস করেন যে, তাঁর ঐকান্তিকতাপূর্ণ সাধনার বিপরীতে এসব অশুভ ইচ্ছা দাঁড়াতে পারে না। শো-টাইম মিউজিক  ব্যানারের কর্মকাণ্ডকে তিনি বিশ্বের অন্যান্য দেশেও প্রসারিত করার স্বপ্ন দেখেন। একধরনের মানবিকতাভিত্তিক কল্যাণবোধ আমরা ল করেছি আলমগীর খান আলমের মধ্যে। তিনি তাঁর হ্যাঁ-সূচক এবং গঠনমূলক এ মন-মানসিকতা নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে যাবেন, আমরা এই প্রত্যাশা করি। ও হ্যাঁ, আরেকটি কথা কানে কানে বলি, আলম সাহেব অচিরেই সংসারী হবার  ইচ্ছা পোষণ করছেন, এটা আমরা জেনে ফেলেছি। আশা করি অবিলম্বে তিনি একজন পছন্দসই জীবনসঙ্গী খুঁজে পাবেন এবং ভবিষ্যতে আমরা আরো অনেক পছন্দ করার মতো অনুষ্ঠান ওনার কাছ থেকে উপহার পাবো। শুভেচ্ছা রইলো, আলমগীর খান আলম সাহেব। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

শেয়ার করুন