২৫ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০৪:৩৮:৩৫ পূর্বাহ্ন


সর্বস্তরে কৃচ্ছ্রতাসাধন অপরিহার্য
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০৫-২০২২
সর্বস্তরে কৃচ্ছ্রতাসাধন অপরিহার্য


ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ প্রতিক্রিয়ায় প্রতিদিন বিশ্ব পরিস্থিতি পাল্টে যাচ্ছে। খাদ্য পণ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, জ্বালানি মূল্য আকাশ ছুঁয়ে যাচ্ছে, মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে। উন্নত দেশগুলো অনাগত দিনগুলোর কথা ভেবে শঙ্কিত। বেশ কিছুদিন দায়িত্বহীন তোতাপাখির মতো কথা বলে সরকারের মন্ত্রীরাও এখন বুঝতে পারছে সংকট সমাগত।প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগী হয়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রতার নির্দেশ প্রদান করেছেন। সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে বিদেশভ্রমণ সীমিত সঙ্কুুচিত করা হচ্ছে , হয়তো অজ্ঞাত দিনে বিলাসদ্রব্যাদির আমদানি নিরুৎসাহিত এমনকি বন্ধ হতে পারে। সরকারপ্রধান খাদ্যদ্রব্য, জ্বালানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবার তাগিদ দিচ্ছেন। অপেক্ষাকৃত কম উপযোগিতার ব্যয়বহুল প্রকল্পগুলো গ্রহণ থেকে বিরত থাকার কথা বলছেন।

আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়া এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ কমায় বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ কমছে। ২০২৬ থেকে মেগাপ্রকল্পগুলোরঋতপরিষদ শুরু হবে, সরকারকে জ্বালানি পরিস্থিতির কারণে জ্বালানি, বিদ্যুৎ অ্যান্ড সার আমদানিতে ভর্তুকি দিতেই হবে- এমতাবস্থায় সর্বস্তরে কৃচ্ছ্রতাসাধন ছাড়া গত্যন্তর নেই।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী নিঃসন্দেহে বাংলাদেশিদের জীবনে বড় উপলক্ষ। কিন্তু সরকার প্রধান কি ভেবে দেখবেন কি পরিমাণ অপচয় হয়েছে? এখনো এইতো সেদিন দেখলাম পঙ্গপালের দল নিউইয়র্ক মেডিসন স্কয়ার গার্ডেন গেলো ১৯৭১ বাংলাদেশ কনসার্ট সরণি অনুষ্ঠানে সরকারি কোষাগারের অর্থ অপচয় করে।  অকারণে এ আর রহমানকে ঢাকায় এনে কনসার্ট করা হলো।

বিসিবি প্রধান কোথায় কোথায় হেলিকপ্টার নিয়ে দেশে যাতায়াত করে। সরকার প্রধান জনগণকে কৃচ্ছ্রতা প্রদানের উপদেশ দিতেই পারেন। কিন্তু একইসঙ্গে সরকারি কর্মকর্তা, দলীয় নেতাদের তিনি অপচয় রোধ করতে কড়া নির্দেশ দিবেন বলে আশা করি।

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য গগণচুম্বী। ডিজেল পেট্রলের ব্যবহার সীমিত হয় প্রয়োজন। সরকাকারের উচ্চ, মধ্যসারির এমনকি সাধারণ স্তরের কর্মকর্তারা দামি গাড়ি ব্যবহার করেন আর ঢাকার যানজটে জ্বালানি খরচ অনেক বেড়ে যায়। সরকার সরকারি গাড়ি ব্যবহার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করতে পারেন। অনেক কর্মকাণ্ড বরাদ্দের থেকেও অধীনস্ত সংস্থাসমূহের গাড়ি, প্রকল্পের গাড়ি ব্যবহার করেন। এগুলো এখন নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।

ভর্তুকি দিন সরকার কিন্তু জ্বালানি আমদানি করছে। সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়িবিলাস অবিলম্বে রাশ টেনে ধরতে হবে, আপ্যায়ন ভাতা নিয়ন্ত্রণ, রাতে অকারণ আলোকসজ্জা পরিহার, সামাজিক অনুষ্ঠাগুলো যথাসম্ভব দিনের বেলা করা বিদ্যুৎ জ্বালানি সাশ্রয় করবে। দেখলাম ঢাকার অন্যতম মেয়র রাত ৮ তার পর জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। এগুলো শুভ লক্ষণ।

অবস্থাদৃষ্টে পরিলক্ষিত হচ্ছে যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। বাংলাদেশ কিন্তু ২০২৬ থেকে অনুন্নত দেশের জন্য বরাদ্দ থাকা অনেক সুবিধা হারাবে। আমাদের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ যতটা সম্ভব ধরে রাখতে হবে। কৃচ্ছ্রতাসাধন আর দুর্নীতি নির্মূল সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হয় উচিত এখন।


শেয়ার করুন