২০ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৫:৩৪:৫৯ অপরাহ্ন


কৃষিবিপ্লব এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৬-২০২২
কৃষিবিপ্লব এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র


গ্রামে বসবাস এখন উন্নত হতে থাকায় অনেক শিক্ষিত যুবক গ্রামে ফিরে কৃষি, মৎস্য, ফল চাষে নিয়োজিত হচ্ছে। অনেকে পশুপালনকেও পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। সংখ্যাটা যদিও এখনো সীমিত, তবে যথাযথ প্রণোদনা পেলে এগুলো সব বাংলাদেশে কৃষিবিপ্লব সৃষ্টি করবে। দেখা গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী থেকে শুরু করে বিদেশ প্রত্যাগত কিছু কিছু যুবক গ্রামে ফিরেছেন।

নেমে পড়েছেন পৈতৃকভিটায় অথবা বেছে নিয়েছেন আশপাশ উর্বর কোনো স্থান। সেখানে তারা বৈজ্ঞানিক উপায়ে দেশি-বিদেশি ফলফলাদি , পশুপালন শুরু হয়েছে, ফুলের চাষ হচ্ছে। এধারা অব্যাহত থাকলে অচিরে গ্রামসমূহে কৃষিভিত্তিক ব্যাপক শিল্প প্রসার ঘটবে। সরকারের বিভাগ এবং সংস্থাগুলো বিষয়টির প্রতি নিবিড় তদারকি রেখে চলেছেন। তাদের সহায়তা নিয়ে অনেকেই এগোচ্ছে। তবে এ তদারকি ও উৎসাহ আরো বাড়লে ও যথা প্রযোজ্য সহায়তা প্রদান করলে শুভ ফল মিলবে।

একটি খামার/ফাইল ছবি 

সরকারপ্রধান সূচিত ‘গ্রাম হবে শহর’ বা ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ কর্মসূচি গতি পেলে নগর-গ্রাম রিভার্স মাইগ্রেশন হবে।ঢাকা এবং অন্যান্য বড় শহরগুলো যানজট মুক্ত হয়ে ক্রমাগত বসবাসের অযোগ্য থেকে বেঁচে যাবে। এখন বাংলাদেশের শিক্ষিত জন্যগোষ্ঠীরস্বকর্মসংস্থানের ব্যাপক সুবিধা রয়েছে। সীমিত সরকারি চাকরির পিছনে না ঘুরে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী সহজেই নিজেদের কর্মসংস্থান করতে পারে। কিছু কিছু সাহসী তরুণ শুরু করেছে। ওদের দেখে আরো অনেকে উদ্বুদ্ধ হবে। সরকারের উচিত হবে মফস্বল শহরগুলোতে ক্ষুদ্রশিল্প প্রয়াসকে প্রণোদনা দেয়া।

পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি,বান্দরবনে যদি ব্যাপক ফলচাষ, স্থানীয় কুটিরশিল্প বিকাশ হতে পারে, কক্সবাজারে গড়ে উঠেতে পারে স্থানীয় পর্যটন সামগ্রীর সমাহার, শুঁটকিশিল্প, সাতক্ষীরায় মাছ, মধু, ফল চাষের ব্যবস্থা, বৃহত্তর বরিশালে কৃষিভিত্তিক ছোট ছোট শিল্প। কুমিল্লার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মিষ্টি, মৃৎশিল্প, সিলেটে চা, আনারস, মনিপুরী শিল্প, দিনাজপুর, রংপুর, রাজশাহীর আম, লিচু, সবজিনির্ভর শিল্প, পাবনা সিরাজগঞ্জের তাঁতশিল্প।

বাংলাদেশের প্রতিটি শহরেই নিজস্ব এমন অনেক কিছুই আছে, যা সমাজেরযত্ন পেলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারবে। বাংলাদেশের সকল গ্রাম এখন বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসে গেছে। ডিজিটাল সুবিধার আওতায় এসেছে দেশ। ঘরে বসে এখন বিশ্বসংযুক্তি করা সহজ হয়েছে। অনেক শিক্ষিত তরুণ নিজেদের দক্ষতা ব্যবহার করে ঘরে বসে আয় করছে। একটু সমন্বিত করলে এটি আরো ব্যাপক প্রসারিত হতে পারে।কিছু বাস্তবায়নাধীন মেগাপ্রকল্প অচিরে চালু হলে দেশব্যাপী যাতায়াত ব্যবস্থা অনেক উন্নত হবে।

অনেকেই মনে করেন,বাংলাদেশের শিক্ষিত যুবসমাজ গ্রামঢু অর্থনীতিতে সম্পৃক্ত হলে দেশে কৃষিবিপ্লব শিল্পবিপ্লব ঘটবে। বর্তমান কঠিন সময়ে সেটি হবে বিশাল আশীর্বাদ। বিশেষত কৃষিতে বিপ্লব ঘটলে অন্তত বাংলাদেশ একটি প্রধান শঙ্কা মুক্ত হবে।


শেয়ার করুন