২৫ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০৪:১৭:৬ পূর্বাহ্ন


পদ্মা সেতু স্মারক টেস্ট সিরিজ থেকে কি পেলো বাংলাদেশ?
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-০৬-২০২২
পদ্মা সেতু স্মারক টেস্ট সিরিজ থেকে কি পেলো বাংলাদেশ? খালেদেরে সাফল্যের একটি মুহুর্ত। এমন দৃশ্য খুবই কম দেখা গেছে দুই ম্যাচের টেষ্ট সিরিজে। সর্বত্র ছিল শুধু ব্যার্থতা/ছবি সংগৃহীত


জানিনা কি ভিশন ছিল বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট সিরিজটি পদ্মা সেতুর নামকরনে? হয়তো বিসিবি এবং স্পনসর প্রতিষ্ঠান ওয়াল্টন ভেবেছিলো জাতীয় গৌরবের অংশীদার হতে নিজেদের সেরাটুকু নিবেদন করবে টীম টাইগার্স। ফলাফল বাংলাদেশ হেরেছে দুটি টেস্ট ৭ উইকেট এবং ১০ উইকেটে। টেষ্টের হারের মার্জিনে খুবই বড় হার। ফলে আরো একটি টেস্ট সিরিজ ধবল ধোলাই।

উপরন্তু টেস্ট ক্রিকেটে দ্রুততম পরাজয়ের সেঞ্চুরি। ২২ বছরের টেস্ট ক্রিকেট সময়ে বাংলাদেশ খেলেছে ১৩৪ টেস্ট।  এখনো শুনছি বাংলাদেশে নাকি টেস্ট ক্রিকেট সংস্কৃতি গড়ে উঠে নি। তাহলে কি টি-২০ বা ওডিআই সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে? টেস্ট ক্রিকেটে অবস্থান ৯ম , ওডিআই ৭ম এবং টি- ২০ অস্টম।  তাহলে বলতে হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট সংস্কৃতি গড়ে উঠেনি। 

টেস্টের কথায় আসি। অস্ট্রেলিয়া , ইংল্যান্ড , ভারত , নিউজিল্যাণ্ড ,দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশের নাগালের বাইরে দূরে বহুদূরে। পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ,শ্রীলংকাও চলে যাচ্ছে অনেক এগিয়ে।  সেদিনের পুচকি আফগানিস্তান বাংলাদেশে এসে হারিয়ে গেছে বাংলাদেশকে। একমাত্র জিম্বাবুয়ে ভরসা। ওরাও এক সময় বলে কয়েই হারিয়েছিল। এখন আর পারছে না। তবে কতদিন পিছিয়ে থাকবে বাংলাদেশের ব্যার্থতায় একদিন ওরাও টপকে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। 

কি পেলো বাংলাদেশ দুই টেস্ট থেকে? এন্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১০৩ রানে গুটিয়ে গিয়েছিলো বাংলাদেশ। একমাত্র সাকিব ওডিআই ঢঙে ব্যাটিং করে অর্ধ শত রান না করলে অবস্থা আরো সঙ্গিন হতো। যা হোক ভালো বোলিং করে বাংলাদেশ ওদের কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলো। দ্বিতীয় ইনিংসে ভূমিধস বাটটিঙের মাঝেই লড়াই করে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল সাকিব -সোহান একটি সংগ্রামী জুটি উপহার দিয়ে। কিন্তু যেই না নতুন বল নেয়া পত্র পথ গুটিয়ে গেলো বাংলাদেশ। তবে লড়াকু ব্যাটিং থেকে উজ্জীবিত খালেদ শুরুতে চমক জাগিয়েছিল। কিন্তু অতটুকুই ৭ উইকেটে হেরে গেলো বাংলাদেশ। বেসামাল বিসিবি দ্রুত ওয়েস্ট ইন্ডিজ পাঠালো এনামুল হক বিজয় এবং শরিফুল ইসলামকে। 

সেন্ট  ভিনসেন্টের ড্যারেন সামি স্টেডিয়ামেও বাংলাদেশের ভাগ্য ফিরলো না। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করলো ওডিআই ঢঙে যেন তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিবে ওদের। পরিস্থিতি ৩৫০-৪০০ রান করার উপযোগী হয়েছিল। কিন্তু ২৩৪ করেই সঙ্গে হলো। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেখালো হাতে কলমে কিভাবে কঠিন উইকেটে ভালো বোলিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যাটিং করতে হয়।  কইলে মায়ারসের ১৪৬ এবং তিনটি বোরো জুটির অবদানে ওরা করলো ৪০৮. প্রথম ইনিংসের ব্যাবধান ১৭৪ 

আসা ছিল ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ। আবারো সেই ব্যাটিং ধস। তৃতীয় দিনশেষে ১৩২/৬। অভিজ্ঞ তামিম, সাকিবের উইকেট বিসর্জন ছিল দৃষ্টিকটু। 

চতুর্থ দিন বৃষ্টির কল্যানে দুই সেসন খেয়াল হয় নি। শুরু হলে সোহান বেপরোয়া ব্যাটিং করে ইনিংস পরাজয় কোনো মোতে বাঁচালো। কিন্তু অনায়েসে ১০ উইকেটে টেস্ট জয় করে বাংলাদেশকে আরো একটি ধবল ধোলাইয়ের লজ্জা দিলো।

শুনলাম ২২ বছরের পঙ্গু যুবকের মতো বাংলাদেশ নাকি টেস্ট ক্রিকেটে হামাগুড়ি দিয়ে আগাচ্ছে। আমি ধ্বংসের মাঝেও বাংলাদেশের বোলিং বিশেষত খালেদ, মেরাজ, এবাদতের উন্নতি দেখি। সোহান দুটি লড়াকু ইনিংস খেলেছে। উইকেটের পেছনেও ভালো করেছে। তামিম নিজের সুনামের প্রতি সুবিচার করে নি। প্রথম টেস্টে দুটি অর্ধ শত রান করা ছাড়া সাকিব দ্বিতীয় টেস্টে ব্যাটিং বোলিং কিছুই করতে পারে নি। লিটন নিজের মতো খেলতে পারে নি।

আমি খেলোয়াড়দের খুব একটা দেশ দেব না। টেস্ট ক্রিকেটে অন্য দোল গুলো যখন এগুচ্ছে বুলেট ট্রেনে চড়ে বাংলাদেশ তখন গরুর গাড়িতে বসে। ব্যাবধান বাড়ছে। এভাবে চললে বাংলাদেশ টেস্ট ভবিষ্যৎ অমাবস্যার কালো রাতের মতোই মশিময় হয়ে থাকবে।


শেয়ার করুন