২৫ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০৭:০৪:০৯ পূর্বাহ্ন


যুক্তরাষ্ট্রে বদ্ধ ট্রাকে মৃত ৫০ জনের ২২ জনই মেক্সিকোর
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-০৬-২০২২
যুক্তরাষ্ট্রে বদ্ধ ট্রাকে মৃত ৫০ জনের ২২ জনই মেক্সিকোর


অবৈধভাবে আমেরিকায় আসার পথে আবারো মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল। ট্রাকে গাদাগাদি করে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পথে ৫০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের সান আন্তোনিও শহরে গত ২৭ জুন সোমবার এ ঘটনা ঘটে। ট্রাকে থাকা ১৬ জনকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, অভিবাসনের আশায় ট্রাকে লুকিয়ে মেক্সিকো সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসছিলেন ওই ব্যক্তিরা। পরে প্রচন্ড গরমে তাঁদের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। কেননা গত ২৭ জুন সোমবার সান আন্তোনিওতে তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সেলো ইব্রার্ড গত ২৮ জুন মঙ্গলবার টুইট করে জানিয়েছেন, মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ২২ জন মেক্সিকোর, ৭ জন গুয়াতেমালার ও ২ জন হন্ডুরাসের। অন্যদের পরিচয় জানা যায়নি।

সান আন্তোনিওর শহরতলিতে একটি মহাসড়কের পাশে ট্রাকটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। শহরটি থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বা ১৫০ মাইল দূরে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তের অবস্থান। শহরটি মানব পাচারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রুট হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।বিভিন্ন ছবিতে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও জরুরি সেবা বিভাগের কর্মীরা ট্রাকটি ঘিরে রেখেছেন।

ঘটনাস্থলে শহরের ফায়ার সার্ভিসের প্রধান চার্লস হুড সাংবাদিকদের বলেন, পরিত্যক্ত ট্রাকটি থেকে প্রথমে ৪৬ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। পরে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে চার শিশুসহ আরও ১৬ জনকে।চার্লস হুড আরও বলেন, প্রচন্ড গরমে গাদাগাদি করে ট্রাকে আসার সময় অসুস্থ হয়ে মারা যেতে পারেন ওই ব্যক্তিরা। কেননা সেখানে পানি ছিল না। পরিত্যক্ত ট্রাকটি হিমায়িত পণ্য পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হলেও সেটিতে কার্যকর শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রও ছিল না।

শহরটির পুলিশ প্রধান উইলিয়াম ম্যাকমানুস জানান, স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ একটি ফোনকলের মাধ্যমে পরিত্যক্ত লরিটি সম্পর্কে প্রথম জানতে পারে কর্তৃপক্ষ। পাশের একটি ভবনে কর্মরত একজন শ্রমিক তাঁদের ফোন করে জানান, মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের ভেতর থেকে কেউ কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাহায্য চাইছেন।এ ঘটনাকে ‘মানবিক ট্র্যাজেডি’ বলে উল্লেখ করেছেন সান আন্তোনিও শহরের মেয়র রন নিরেনবার্গ।

গত ২৭ জুন সোমবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আজ রাতে আমরা ভয়াবহ এক মানবিক ট্র্যাজেডির সঙ্গে লড়াই করছি। আমি আপনাদের সবাইকে বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার এবং হতাহত ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করতে অনুরোধ করছি।’মর্মান্তিক এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়ার কথা জানিয়ে রন নিরেনবার্গ আরও বলেন, ‘আশা করছি, জড়িত ব্যক্তিরা দ্রুত শনাক্ত হবেন। এমন অমানবিক কাজের জন্য তাঁদের আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করা হবে।’

এরপর শহর কর্তৃপক্ষ জানায়, এ ঘটনায় তিনজন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে। তবে তাঁদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট জানিয়েছে, হোমল্যান্ড সিকিউরিটির তদন্ত বিভাগ ঘটনাকে অপরাধমূলক কাজ হিসেবে তদন্ত করছে।

ওই ঘটনায় শোক প্রকাশ করে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট লোপেজ ওব্রাদর বলেছেন, আগামী ১২ জুলাই ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকের সময় অভিবাসন সমস্যার বিষয়টি তিনি তুলবেন।


শেয়ার করুন