মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ ৫০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 08-10-2025

মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ ৫০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন

ইউএস-মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ ১৯৭০ সালের পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের (ডিএইচএস) অভ্যন্তরীণ পরিসংখ্যান বিভাগপ্রকাশ করেছে। ২০২৫ অর্থবছরে (গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) যুক্তরাষ্ট্রের বর্ডার প্যাট্রোল সদস্যরা দক্ষিণ সীমান্তে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের অভিযোগে প্রায় ২ লাখ ৩৮ হাজার অভিবাসীকে আটক করেছেন। এটি গত পাঁচ দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন বার্ষিক সংখ্যা। ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী, এর চেয়ে কম গ্রেফতার রেকর্ড হয়েছিল ১৯৭০ সালে যখন মোট প্রায় ২ লাখ ২ হাজার অভিবাসীকে আটক করা হয়েছিল।

এই নাটকীয় পতনকে ইমিগ্রেশন অধিকার কর্মীরা বলছেন ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর সীমান্তনীতি ও ব্যাপক অভিবাসন দমন অভিযান এর ফল। তুলনামূলকভাবে, বাইডেন প্রশাসনের সময় ২০২২ অর্থবছরে রেকর্ড ২২ লাখ অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটেছিল। এটি ছিল এ বছরের সংখ্যার প্রায় ১০ গুণ।

২০২৫ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্ব বাইডেন প্রশাসনের শেষ তিন মাসেই সর্বাধিক (৬০ শতাংশের বেশি) আটক ঘটে বলে জানিয়েছে ডিএইচএস। এরপর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার দায়িত্ব নেওয়ার পর সীমান্তে সেনা মোতায়েন, আশ্রয়প্রার্থী নিষেধাজ্ঞা ও ক্যাচ অ্যান্ড রিলিজ নীতির অবসান ঘটিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেন। প্রশাসন অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের দ্রুত ফেরত পাঠানো বা আটক রাখার নীতি কার্যকর করে।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র অ্যাবিগেইল জ্যাকসন এক বিবৃতিতে বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর প্রতিশ্রুতির প্রায় পূর্ণ বাস্তবায়ন করেছেন। ফলস্বরূপ, আমেরিকানরা এখন আগের চেয়ে বেশি নিরাপদ। অপরিচিত অপরাধী বিদেশি এবং বিপজ্জনক মাদক আর অনিয়ন্ত্রিতভাবে সীমান্ত পেরোচ্ছে না। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাংক মাইগ্রেশন পলিসি ইনস্টিটিউট-এর বিশ্লেষক এরিয়েল রুইজ সোটো বলেন, ২০২৪ সালের গ্রীষ্ম থেকেই অবৈধ অনুপ্রবেশ হ্রাস পেতে শুরু করে। ট্রাম্প প্রশাসন মাত্র কয়েক মাসে অভিবাসন প্রবাহের একটি ‘নতুন স্বাভাবিক’ তৈরি করেছে। তার মতে, সীমান্তে ও অভ্যন্তরীণ শহরগুলোতে কঠোর দমননীতি মানুষকে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশের চিন্তা থেকে বিরত রেখেছে। তবে এই কঠোর নীতিগুলোকে অমানবিক, অবৈধ ও সংবিধানবিরোধী বলে সমালোচনা করেছে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ)। সংগঠনটি বিভিন্ন ফেডারেল আদালতে ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপ চ্যালেঞ্জ করেছে।

দেশের ভেতরে ব্যাপক অভিবাসন অভিযানও তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। শিকাগো ও লস অ্যাঞ্জেলসের মতো শহরে হাজারো মানুষের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে, অভিযোগ করে যে অভিযানগুলো নির্বিচারে পরিচালিত হচ্ছে এবং কেবল অপরাধী নয়, সাধারণ অভিবাসীদেরও টার্গেট করা হচ্ছে। বর্ধিত উত্তেজনার মধ্যে ট্রাম্প সম্প্রতি ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের নির্দেশ দেন-শিকাগো ও ওরেগনের পোর্টল্যান্ডে অভিবাসন দপ্তর রক্ষায়। তবে ফেডারেল আদালত আপাতত পোর্টল্যান্ডে গার্ড পাঠানো স্থগিত রেখেছে।

টেক্সাসের সীমান্ত শহর এল পাসোর মানবিক আশ্রয়কেন্দ্রের পরিচালক জন মার্টিন বলেন, বাইডেন প্রশাসনের সময় যেখানে তার আশ্রয়কেন্দ্রে শত শত অভিবাসী থাকতেন, এখন সেখানে একজনও নতুন আশ্রয়প্রার্থী নেই। যদি লক্ষ্য থাকে অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা কমানো, তাহলে বলা যায় তা সফল হয়েছে, বলেন মার্টিন। আমরা এখন আর কাউকে পাচ্ছি না।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)