সেই সাফল্যকে স্রেফ একটা শুরু দেখি


আলমগীর কবির , আপডেট করা হয়েছে : 05-11-2025

সেই সাফল্যকে স্রেফ একটা শুরু দেখি

বিদ্যা সিনহা মিম একসময় ছোটপর্দায় তার অভিনয় দিয়ে নজর কাড়েন, পরে বড়পর্দায় তার অনবদ্য অভিনয়ে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ‘পরাণ’ সিনেমায় অনন্যা চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে প্রশংসিত এই অভিনেত্রী এখন সিনেমার পাশাপাশি ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবেও কাজ করছেন। তার ফেসবুক পেজে নানা জায়গায় ভ্রমণ, স্বামী সনি পোদ্দারের সঙ্গে সুখী দাম্পত্যের মুহূর্তের ছবি এবং মজাদার রিল ভিডিওতে ভরা থাকে। কিন্তু সম্প্রতি, তার সিনেমার সংখ্যা কমে যাওয়ায় অনুরাগীরা একটু হতাশ। তবে, মিম নিজেই জানিয়েছেন তার সিনেমা নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। এ বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির 

প্রশ্ন: সামাজিক মাধ্যমে আপনার জীবনের নানা মুহূর্ত শেয়ার করেন। কোথাও হ্রদের ধারে, কোথাও সুইমিংপুলে, কখনো পাহাড়ের পাদদেশে। আপনার জীবন কেমন চলছে?

বিদ্যা সিনহা মিম: আমার জীবন সত্যিই বেশ উপভোগ করছি। এটা সবারই উচিত, নিজের জীবনের ছোট ছোট সুখগুলো উদযাপন করা। আমি খুব ভাগ্যবান যে, দর্শকরা আমাকে বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন মুহূর্তে দেখতে পান। সামাজিক মাধ্যমে যেটুকু শেয়ার করি, সেটা আমার নিজের আনন্দ থেকেই। কখনো পরিবার, কখনো বন্ধুদের সঙ্গে, কখনো আবার একা। এক কথায় বলতে গেলে আমি খুব প্রাসঙ্গিক মুহূর্তগুলো মানুষের সঙ্গে শেয়ার করতে ভালোবাসি।

প্রশ্ন: আপনার ফলোয়ার সংখ্যা এখন প্রায় সাড়ে ছয় মিলিয়ন! কিন্তু সিনেমার খবর শুনে অনুরাগীরা অনেক সময়ই একটু হতাশ। বিশেষত ‘পরাণ’ এর পর আপনি আর তেমন বড় কোনো সিনেমায় দেখা যাচ্ছেন না। এর কারণ কী?

বিদ্যা সিনহা মিম: প্রথমেই বলতে চাই, আমি খুব কৃতজ্ঞ আমার দর্শকদের জন্য। তবে সত্যি বলতে, আমি চাই না শুধুমাত্র সিনেমার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য কাজ করি। ‘পরাণ’ আমার ক্যারিয়ারের জন্য একটা মাইলফলক, এবং আমি সেই সাফল্যকে স্রেফ একটা শুরু হিসেবে দেখি। পরাণের পর অনেকেই আমাকে নিয়ে নানা মন্তব্য করেছেন, কিন্তু আমি মানসম্পন্ন কাজের অপেক্ষায় আছি। আমি জানি, আমি যদি ইচ্ছে করলেই সিনেমা করতে চাইতাম, তবে একাধিক সিনেমা করতে পারতাম। কিন্তু আমি চাই না ততটা মানের না হলে সেটা আমার নামের সঙ্গে যুক্ত হোক।

প্রশ্ন: তাহলে, আপনি সিনেমা করবেন না এমনটা নয়। তবে, এমন কিছু সিনেমা হতে হবে যেগুলো আপনার মনকে টানে।

বিদ্যা সিনহা মিম: হ্যাঁ, ঠিক বলেছেন। আমি বিশ্বাস করি, আমাকে যতটুকু ভালো কাজ করার সুযোগ মিলবে, আমি সেটাই করব। আমার কাছে মানটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমি মনে করি, নিম্নমানের সিনেমার চেয়ে এক বছর কিছু না করাটাও অনেক ভালো। দর্শকদের জন্য আমি যে সিনেমা করতে চাই, সেটি তাদের প্রত্যাশাকে মূল্য দেবে, তাদের মন জয় করবে।

প্রশ্ন: আপনার ক্যারিয়ার মডেল হিসেবেও অসাধারণ। দেশের বড় বড় ব্র্যান্ডের সঙ্গে আপনি কাজ করছেন। ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে কাজ করাটা কেমন?

বিদ্যা সিনহা মিম: এটা অনেক সম্মানের ব্যাপার। আমি বিশ্বাস করি, একজন অভিনেত্রী হিসেবে আমার সামাজিক দায়িত্বও আছে। যখন বড় বড় ব্র্যান্ডগুলো আমার সঙ্গে কাজ করতে চায়, সেটা আমার কাজের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর মত। দেশের সবচেয়ে বড় কিছু ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা সত্যিই এক ধরনের শিখন। একদিকে অভিনয়ের ক্ষেত্রে, আরেকদিকে বিজ্ঞাপনেও নতুন কিছু শেখার সুযোগ পাই।

প্রশ্ন: তাহলে, আপনি এখন কী নিয়ে ব্যস্ত?

বিদ্যা সিনহা মিম: এখন আমি বেশ কিছু সিনেমার স্ক্রিপ্ট পড়ছি, এবং বেশ কিছু নির্মাতার সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। তবে তার আগে, মালদ্বীপে একটা বিজ্ঞাপন শুট করতে যাচ্ছি। শিগগিরই কিছু নতুন সিনেমার খবর আসবে, আশা করি। তবে এখনো পর্যন্ত সিনেমার স্ক্রিপ্টে কিছু চূড়ান্ত হয়নি। সবাইকে বলব, অপেক্ষা করুন একটা ভালো খবর আসবে খুব শিগগিরই।

প্রশ্ন: আপনার দাম্পত্য জীবন নিয়ে কিছু বলবেন? আপনার স্বামী সনি পোদ্দার এবং আপনাদের সম্পর্ক কেমন?

বিদ্যা সিনহা মিম: আমার দাম্পত্য জীবন সত্যিই অনেক সুন্দর। সনি একজন অত্যন্ত সহানুভূতিশীল মানুষ, আর তার সহমর্মিতা আমাকে প্রতিদিন আরও ভালো মানুষ হতে অনুপ্রাণিত করে। আমরা একে অপরকে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে থাকি। মনে হয়, সম্পর্কের সুন্দরতা শুধু একসঙ্গে থাকা নয়, একে অপরের স্বপ্ন এবং লক্ষ্যকে সম্মান জানানো এবং একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা। সনি আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু এবং আমি খুব ভাগ্যবান যে তাকে আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়েছি।

প্রশ্ন: এখন আপনি তো সেলিব্রিটি, তবে ছোটবেলায় মিম কেমন ছিলেন? আপনার জীবনের কোনো স্মৃতি শেয়ার করবেন?

বিদ্যা সিনহা মিম: ছোটবেলায় আমি অনেক নির্ভীক ছিলাম, কিন্তু একটু মেয়ে-মানুষি। আমি অনেক সময় একা থাকতে ভালোবাসতাম, বই পড়তে। সবে বড় হচ্ছিলাম, তাই কিছু সময়ের জন্য জীবনের সবকিছু নিয়ে ভাবতাম। আমার সবচেয়ে প্রিয় স্মৃতি ছিল, ছোটবেলায় আমার মা-র সাথে চা খেতে খেতে নানান গল্প করা। মা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। আমি কখনও ভুলব না, তিনি আমাকে শিখিয়েছিলেন কিভাবে জীবনের প্রতি ধৈর্য্য এবং সম্মান রাখতে হয়।

প্রশ্ন: অবশেষে, আপনার ফলোয়ারদের জন্য কিছু বিশেষ বার্তা?

বিদ্যা সিনহা মিম: প্রথমেই বলব, আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তাদের ভালোবাসা এবং সমর্থন আমাকে প্রতিদিন কাজ করতে অনুপ্রাণিত করে। আমি জানি, তারা আমার কাছে শুধু অভিনয় বা বিজ্ঞাপন দেখতে চায় না, তারা চায় আমাকে তাদের জীবনের অংশ হিসেবে দেখতে। তাই, আমি চেষ্টা করি তাদের আনন্দ দেয়ার। সবার কাছে একটা কথা বলব, ভালো কাজ আসবে। অপেক্ষা করুন, ধৈর্য্য রাখুন।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)