আইস হেফাজতে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেকর্ড ৬৬ হাজার অভিবাসী


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 12-11-2025

আইস হেফাজতে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেকর্ড ৬৬ হাজার অভিবাসী

যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) সংস্থার হেফাজতে থাকা অভিবাসীর সংখ্যা রেকর্ড পরিমাণে বেড়ে ৬৬ হাজারে পৌঁছেছে। এ সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের অভ্যন্তরীণ তথ্য অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে অভিবাসনবিরোধী অভিযান জোরদার হওয়ায় এই সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু হওয়ার সময়, অর্থাৎ জানুয়ারিতে আইসের হেফাজতে প্রায় ৩৯ হাজার জন ছিল। মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে সেই সংখ্যা প্রায় ৭০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬ হাজারে। পূর্ববর্তী সর্বোচ্চ সংখ্যা ছিল ২০১৯ সালে, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে, তখন আইসিইর হেফাজতে ছিল প্রায় ৫৬ হাজার জন।

আইস সাধারণত অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত অভিবাসী ও অন্য দেশীয় নাগরিকদের হেফাজতে রাখে, যাদের বিরুদ্ধে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া চলছে। সাধারণত এই বন্দিশালাগুলো বেসরকারি কারাগার বা কাউন্টি জেলে পরিচালিত হয়। তবে এবার ট্রাম্প প্রশাসন সামরিক ঘাঁটি ও রিপাবলিকান শাসিত রাজ্যের কিছু স্থাপনাকেও অস্থায়ী আটককেন্দ্রে রূপান্তর করেছে।বর্তমানে আইসিইর ধারণক্ষমতা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ হাজার জন পর্যন্ত, যা আগে ছিল ৪১ হাজার ৫০০। ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট থেকে পাওয়া ৪৫ বিলিয়ন ডলারের বরাদ্দ দিয়ে এ সংখ্যা ভবিষ্যতে ১ লাখ পর্যন্ত বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

মাইগ্রেশন পলিসি ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো মুজাফফর চিশতি বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসনবিরোধী অভিযানে যেভাবে ক্ষেত্র বিস্তৃত করেছে, তাতে আটক সংখ্যা বাড়বেই। এমনকি যাদের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের অভিযোগ নেই, তারাও এখন আটক হচ্ছেন। গভর্নমেন্টের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে আইসিইর হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদের অর্ধেকেরও বেশি অপরাধমুক্ত। প্রায় ৩৩ হাজার জন শুধু অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে আটক রয়েছেন। অন্যদিকে বাকি ৩৩ হাজার জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের অভিযোগ বা দণ্ড রয়েছে, তবে তাদের কতজন গুরুতর বা সহিংস অপরাধে জড়িত, তা স্পষ্ট নয়।

আইসের মুখপাত্র ট্রিশিয়া ম্যাকলাফলিন বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন শুরু হওয়ার পর থেকে আইসিই যে ব্যক্তিদের গ্রেফতার করেছে, তাদের ৭০ শতাংশেরই যুক্তরাষ্ট্রে অপরাধের রেকর্ড বা বিচারাধীন মামলা রয়েছে। মাইগ্রেশন পলিসি ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো মুজাফফর চিশতি আরো জানান, প্রশাসনের ভেতরে প্রতিদিন ৩ হাজার জন আটক এবং বছরে ১০ লাখ বহিষ্কারের মতো অবাস্তব লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

ডিএইচএসের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু হওয়ার পর থেকে আইসিই প্রায় ২ লাখ ৭৮ হাজার জন গ্রেফতার করেছে এবং প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার জন বহিষ্কার করেছে। তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আশঙ্কা, এত দ্রুত বন্দি সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে আটককেন্দ্রগুলোর পরিবেশ ও মানবিক অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। সম্প্রতি ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের ব্রডভিউ প্রসেসিং সেন্টারে অমানবিক পরিস্থিতির অভিযোগে একটি ফেডারেল আদালত আইসিইকে নির্দেশ দিয়েছে, যাতে বন্দিদের জন্য পর্যাপ্ত ঘুমানোর জায়গা, খাবার, স্নানের ব্যবস্থা ও যোগাযোগের সুযোগ নিশ্চিত করা হয়। ডিএইচএস অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, তারা অতিরিক্ত ভিড় এড়িয়ে নিরাপদ ও মানবিক পরিবেশ বজায় রাখছে।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)