২ হাজার ডলারের ট্যারিফ ডিভিডেন্ড চেক, আইনি ও কংগ্রেস বাধার মুখে


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 19-11-2025

২ হাজার ডলারের ট্যারিফ ডিভিডেন্ড চেক, আইনি ও কংগ্রেস বাধার মুখে

আইনি ভিত্তি না থাকায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত ট্যারিফ রাজস্ব থেকে জনগণকে ২ হাজার ডলারের ডিভিডেন্ড চেক দেওয়ার পরিকল্পনা এখনো অনিশ্চয়তার মধ্যেই রয়েছে। ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট গত ১৬ নভেম্বর নিশ্চিত করেন, এই চেক পাঠাতে হলে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন। তিনি বলেন, চেক পাঠানো সম্ভব, তবে এজন্য আইন দরকার। গত কয়েক মাস ধরে ট্রাম্প ট্যারিফ রাজস্ব ব্যবহার করে আমেরিকানদের মধ্যে ডিভিডেন্ড চেক বিতরণের পরিকল্পনা তুলে ধরছেন। গত সপ্তাহে ট্রুথ সোশ্যালে তিনি লিখেন-যারা ট্যারিফের বিরুদ্ধে তারা বোকা! প্রতি জনকে ন্যূনতম ২ হাজার ডলার ডিভিডেন্ড দেওয়া হবে, উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের ছাড়া। বেসেন্ট জানিয়েছেন, এ চেক মূলত ওয়ার্কিং ফ্যামিলি বা নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য হবে।

ট্রাম্প প্রশাসনের জারি করা ব্যাপক ট্যারিফের বৈধতা বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে আছে। আদালত সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছে যে জরুরি ক্ষমতা ব্যবহার করে ট্যারিফ আরোপের বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি দুর্বল। যদি আদালত ট্যারিফ বাতিল করে, তবে সরকারকে বিপুল অর্থ ফেরত দিতে হতে পারে আমদানিকারকদের। বেসেন্ট বলেন, যদি রায় আমাদের বিরুদ্ধে যায়, তাহলে রিফান্ডের পরিকল্পনা কী? আমদানিকারকদের কি বড় অঙ্কের সুবিধা দেওয়া হবে? সুপ্রিম কোর্ট এমন বিশৃঙ্খলায় যেতে চাইবে বলে মনে হয় না।

যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত ১৭ নভেম্বর আগামী ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে এই চেক বিতরণের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন, তবে কংগ্রেসে এর বাস্তবায়ন এখনো কঠিন। রিপাবলিকাননিয়ন্ত্রিত কংগ্রেসের অনেকেই এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করছেন। কেউ এটিকে খারাপ ধারণা বলছেন, কেউ বা উন্মাদ মন্তব্য করেছেন। তাদের মতে, ট্যারিফ রাজস্ব জাতীয় ঋণ কমাতেই ব্যবহার করা উচিত। ২০১৯ সালে রিপাবলিকান সিনেটর জোশ হাওলি ৬০০ ডলারের ট্যারিফ রিবেট বিল আনলেও তা সমর্থন পায়নি। ট্রাম্প প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, ট্যারিফ থেকে ‘ট্রিলিয়ন ডলার’ আয় হচ্ছে বলা হলেও স্বাধীন বাজেট বিশেষজ্ঞদের হিসাব ভিন্ন। ইয়েল ইউনিভার্সিটির বাজেট ল্যাবের বিশ্লেষক জন রিকো জানিয়েছেন, বার্ষিক ট্যারিফ রাজস্ব ২০০ থেকে ৩০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি নয়। কিন্তু ২ হাজার ডলার করে সারা দেশের জনগণকে দিলে প্রয়োজন হবে প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ডলার।

এটি প্রথমবার নয় যে, ট্রাম্প জনগণকে সরকারি সাশ্রয় থেকে ‘ডিভিডেন্ড’ দেওয়ার কথা বলেছেন। চলতি বছরের শুরুর দিকে তিনি এলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট অ্যাফিশিয়েন্সি (ডোজ ই)-এর সাশ্রয় থেকে জনগণকে ডিভিডেন্ড দেওয়ার কথা বলেছিলেন। তবে পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হয়নি এবং পরবর্তী সময়ে মাস্ক সংস্থাটি ছেড়ে চলে যান। বেসেন্ট আশা প্রকাশ করেন, রিপাবলিকান সমর্থিত ব্যয় ও করসংক্রান্ত নতুন আইন কার্যকর হলে আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিক থেকেই মানুষ আর্থিক স্বস্তি পেতে শুরু করবে। তার কথায়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়বে, মুদ্রাস্ফীতি কমবে এবং বাস্তব আয়ের হার বাড়বে।

সবশেষে মূল প্রশ্ন দুটি : কংগ্রেস কি এই পরিকল্পনা আইনে পরিণত করবে? আর সুপ্রিম কোর্টের রায় কি ট্যারিফ নীতি টিকিয়ে রাখবে? এই দুই বাধা অতিক্রম না করলে ট্রাম্পের প্রতিশ্রুত ‘২ হাজার ডলার ট্যারিফ ডিভিডেন্ড’ এখনো কাগজকলমেই থাকছে।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)