আওমামী লীগ নির্বাচন করুক বা নাই বা করুক, দেশজুড়ে থাকা আওয়ামী লীগের বিপুল ভোট ব্যাংক আগামী ত্রয়োদশ নির্বাচনের জয়পরাজয় নির্ধারণ করবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। দেশ প্রবাসে আওয়ামী লীগসহ সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার জোরালো পরামর্শ আছে। কীভাবে, কোন পরিস্থিতিতে, কাদের প্রণোদনায় আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে এখন অনেকটাই সেগুলো উন্মুক্ত। সন্দেহ নেই ২০০৮-২০২৪ দীর্ঘসময়ে আওয়ামী লীগ দেশব্যাপী ব্যাপক উন্নয়নযোগ্য করেছে। কিন্তু ক্ষমতার অন্ধ নেশায় বিরুদ্ধ মতকে নির্দয়ভাবে দমন, সুশাসনের অভাব, ব্যাপক দুর্নীতির কারণে জনমনের প্রচণ্ড ক্ষোভকে সুকৌশলে কাজে লাগিয়েছে সুযোগসন্ধানী মহল। কিন্তু জুলাই আগস্ট গণআন্দোলনের ফসল অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে বৈষম্য দূর হয়নি, দুর্নীতি বেড়েছে, সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয় নি।
কিছু রাজনৈতিক দল ক্ষমতার অন্ধ নেশায় নিজেরাই রাজপথে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়ে জনমনে অস্বস্তির সৃষ্টি করছে। চাঁদাবাজি, মব সন্ত্রাস আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। যতদিন যাচ্ছে জনগণ রাজনীতির প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ছে। অনেকের প্রশ্ন অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির মূল নেতা তারেক জিয়া কেন দেশে ফিরে দলের নেতৃত্ব দিতে পারছে না। দলের চেয়ারপারসন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সক্রিয় থাকা সত্ত্বেও কেন বিএনপিকে প্রবাস থেকে নেতৃত্ব দেয়া হচ্ছে। পরিস্থিতির কারণে বিশেষ সুবিধাভোগী জামায়াত নির্বাচনে জিতে দেশ শাসন করবে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। আবার সরকার সমর্থিত তরুণদের দল এনসিপি নির্বাচনে জিতবে সেটি ভাবাও যায় না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের প্রভাব সবসময় ছিল, আছে ও থাকবে। ওপরে ভারতবিরোধী রূপ ধারণ করলেও অন্তরালে সকল দল ভারতের কাছে দেন দরবার করছে। যে দল বা জোট সরকার গঠন করুক ভারতের শুভ দৃষ্টি ছাড়া সেই সরকার স্থায়ী হবে বলে মনে হয় না।
শেষ পর্যন্ত হয়তো পরিস্থিতি নির্ধারণ করবে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে থাকবে কি না-অন্তর্বর্তী সরকারের আনাড়িপনা এবং অনভিজ্ঞতার কারণে সৃষ্ট সংকট আওয়ামী লীগের অনুকূলে কাজ করেছে। আওয়ামী নির্বাচনে নির্বাচনী সমীকরণ পাল্টে যাবে। আর যদি আওয়ামী লীগকে নির্বাচনের বাইরে রাখা হয় সেই নির্বাচন আদৌ গ্রহণযোগ্যতা পাবে কি না সংশয় থাকবে।
এমনিতেই দেশের সার্বিক অবস্থা নাজুক। অর্থনীতি নড়বড়ে, শিল্প বাণিজ্য, বিদ্যুৎ জ্বালানি সর্বক্ষেত্রে সংকট। দেনার দায় বেড়েই চলেছে। বিনিয়োগ শুন্যের কোথায়। নতুন সরকারের হানিমুন করার সুযোগ থাকবে না।
বলতেই হচ্ছে আওয়ামী লীগের বিশাল ভোট ব্যাংক নির্বাচনের ভাগ্য নির্ধারণ করবে। আওয়ামী লীগকে বাইরে রাখলে নির্বাচনকালে সৃষ্ট আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল হবে না।