বিডিআর বিদ্রোহের ৩৫ সদস্যের মুক্তি


বিশেষ প্রতিনিধি , আপডেট করা হয়েছে : 26-11-2025

বিডিআর বিদ্রোহের ৩৫ সদস্যের মুক্তি

বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন বিডিআরের সাবেক ৩৫ সদস্য। গত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে তারা পর্যায়ক্রমে কারাগার থেকে বের হন। এ সময় কারা ফটকের সামনে তাদের আত্মীয়স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার তারাসহ ৫৩ জনের জামিন মঞ্জুর করেছিল আদালত। 

কারাগার সূত্রে জানা যায়, মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন-কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একজন, কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ থেকে দুজন এবং পার্ট-২ থেকে ৩২ জন। তাদের জামিনের কাগজপত্র সোমবার দুপুরে কারাগারে এসে পৌঁছে। তা যাচাই-বাছাই শেষে সন্ধ্যায় মুক্তি দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট কারাগারের জেল সুপাররা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ আল মামুন বলেন, ‘সাবেক এক বিডিআর সদস্যের জামিনের কাগজপত্র দুপুরে কারাগারে এসে পৌঁছে। পরে যাচাই-বাছাই শেষে সন্ধ্যায় মুক্তি দেওয়া হয়।’

কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১-এর সিনিয়র জেল সুপার আবু নূর মো. রেজা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এই কারাগার থেকে বিডিআরের সাবেক দুই সদস্যকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে আজ।’

কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২-এর সিনিয়র জেল সুপার মো. আল মামুন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এই কারাগার থেকে বিডিআরের সাবেক ৩২ জন সদস্যকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। দুপুরে তাদের জামিনের কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছায়। পরে যাচাই-বাছাই শেষে তাদের সন্ধ্যায় মুক্তি দেওয়া হয়।’

বিডিআরের সাবেক এসব সদস্য মুক্তি পাওয়ার পর কারাগারের সামনে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন স্বজনরা। বিডিআরের সাবেক সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুনের বড় বোন কামরুন্নাহার বলেন, ‘একসময় ভাবতাম আদৌ ভাইকে পাবো কি না। আজকে মুক্তি পাওয়ায় অনেক ভালো লাগছে। এজন্য যারা সহযোগিতা করেছেন, তাদের ধন্যবাদ জানাই। আমার ভাইয়ের চিন্তায় বাবা মারা যান। মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এখন মায়ের কাছে ছোট ভাইকে তুলে দিতে পারলে কিছুটা স্বস্তি পাবো। এখনো যারা কারাগারে আছেন তারাও যেন মুক্তি পান।’

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআরের (বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি) সদর দফতর ঢাকার পিলখানায় বিদ্রোহ হয়। সেদিন বিডিআরের কয়েকশ সদস্য পিলখানায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালান। প্রায় দুদিনব্যাপী চলা বিদ্রোহে বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। সব মিলিয়ে ৭৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পিলখানায় বিডিআরের বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালনরত সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরাও সেদিন নৃশংসতার শিকার হন।

পিলখানায় হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়। হত্যার ঘটনায় করা মামলায় আসামি করা হয় ৮৫০ জনকে। দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে আসামির সংখ্যার দিক থেকে এটিই সবচেয়ে বড় মামলা। বিচারিক আদালত ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর এই মামলার রায় দেন। রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ে খালাস পান ২৭৮ জন। রায় ঘোষণার আগে চার আসামি মারা যান।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)