নিউইয়র্কের অ্যাজমা রোগীরা শিগগিরই স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারবেন। গভর্নর ক্যাথি হোচুল গত ২৪ নভেম্বর সোমবার যে নতুন আইনে স্বাক্ষর করেছেন। তার ফলে ২০২৭ সাল থেকে ইনহেলারের জন্য কোনো অর্থ দিতে হবে না, তারা ফ্রি ইনহেলার পাবেন। নতুন আইন অনুযায়ী, স্টেটনিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্যবিমা পরিকল্পনাগুলো, যার মধ্যে নিউইয়র্কের অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট মার্কেটপ্লেসের প্ল্যানগুলোও রয়েছে তারা অ্যাজমা ইনহেলারের সম্পূর্ণ খরচ কভার করবে।
অ্যাসেম্বলিমেম্বার জেসিকা গঞ্জালেজ-রোহাস, যিনি অ্যাসেম্বলিতে বিলটি উত্থাপন করেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, অ্যাজমা ইনহেলারের মতো জীবনরক্ষাকারী যন্ত্র কোনোভাবেই নাগালের বাইরে থাকা উচিত নয়। নিউইয়র্কে শত শত হাজার মানুষ এই ওষুধের ওপর নির্ভরশীল। এটি তাদের জন্য অপরিহার্য চিকিৎসা। স্টেট সিনেটর গুস্তাভো রিভেরা, যিনি ব্রঙ্কসেক প্রতিনিধিত্ব করেন, সিনেটে বিলটির পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। ব্রঙ্কসে নিউইয়র্ক সিটির মধ্যে অ্যাজমার হার সবচেয়ে বেশি এবং জরুরি বিভাগে অ্যাজমা-সম্পর্কিত ভর্তির হারও সর্বোচ্চ, যা দীর্ঘদিন ধরে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের উদ্বিগ্ন করে আসছে।
স্টেট ডিপার্টমেন্ট অব হেলথের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সাল নাগাদ নিউইয়র্কে আনুমানিক ১৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৩ লাখ ১৫ হাজার শিশু অ্যাজমায় আক্রান্ত ছিল। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য ইনহেলারের উচ্চমূল্য দীর্ঘদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছু ইনহেলার নির্মাতা মাসিক মূল্য ৩৫ ডলারে সীমিত করলেও রোগীদের প্রকৃত খরচ ভিন্ন হতে পারে, কারণ ইনহেলারের ওষুধের ধরন ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিমার কভারেজ অনুযায়ী পেমেন্ট পরিবর্তিত হয়।
নতুন আইনটি এমন সময়ে কার্যকর হচ্ছে, যখন আগামী বছর স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়াম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে-কারণ ফেডারেল সরকারের অতিরিক্ত ভর্তুকি মেয়াদোত্তীর্ণ হতে চলেছে। এর আগে নিউইয়র্কে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ইনসুলিন কোপে সম্পূর্ণ বাতিল করার আইন কার্যকর হয়েছে, যা বড় ধরনের আর্থিক স্বস্তি দিয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইনহেলার বিনামূল্যে হওয়ার ফলে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের হাজারো অ্যাজমা রোগী নিয়মিত চিকিৎসা নিতে পারবেন, জরুরি বিভাগে ভিড় কমবে এবং দীর্ঘমেয়াদে জনস্বাস্থ্য ব্যয়ও হ্রাস পাবে। নিউইয়র্ক স্টেট এই পদক্ষেপের মাধ্যমে অ্যাজমাকে একটি গুরুতর কিন্তু নিয়ন্ত্রণযোগ্য জনস্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচনা করে রোগীদের বাস্তব সুবিধা দেওয়ার পথে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল।