ট্রাম্প প্রশাসন বিবেচনা করছে আরো ৩৬ দেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা সম্প্রসারণ


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 10-12-2025

ট্রাম্প প্রশাসন বিবেচনা করছে আরো ৩৬ দেশে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা সম্প্রসারণ

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ১৯টি দেশের নাগরিকদের অভিবাসন সুবিধার সব ধরনের আবেদন প্রক্রিয়া স্থগিত করার পর আরো ৩৬টি দেশের নাগরিকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা জারি করার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের একটি অভ্যন্তরীণ চিঠিতে এ তথ্য উঠে এসেছে। যদি সিদ্ধান্তটি কার্যকর হয়, তবে ডিসেম্বর মাসের শুরুতে ঘোষণা করা ১২ দেশের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পর এটি হবে আরো বিস্তৃত ও কঠোর পদক্ষেপ। ডিসেম্বরের শুরুতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে ১২টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেন। তিনি দাবি করেন, বিদেশি সন্ত্রাসী ও অন্যান্য জাতীয় নিরাপত্তাজনিত হুমকি মোকাবিলায় এই পদক্ষেপ প্রয়োজন। এটি তার দ্বিতীয় মেয়াদের শুরু থেকে চালু হওয়া কঠোর অভিবাসন দমনেরই ধারাবাহিকতা, যেখানে সন্দেহভাজন গ্যাং সদস্য হিসেবে শত শত ভেনেজুয়েলানকে এল সালভাদরে বহিষ্কার, বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিল এবং ভিসা প্রত্যাখ্যানের ঘটনাও অন্তর্ভুক্ত।

পররাষ্ট্র দফতরের অভ্যন্তরীণ ওই কেবলে স্বাক্ষর করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। এর লক্ষ্যবস্তু দেশগুলোর বিভিন্ন দুর্বলতা তুলে ধরা হয়েছে এবং ৬০ দিনের মধ্যে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। কেবলে বলা হয়, এ ৩৬টি দেশ নির্ধারিত মানদণ্ড পূরণ না করলে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হতে পারে। কেবলে উল্লেখ করা উদ্বেগগুলোর মধ্যে রয়েছে অনেক দেশের সক্ষম ও দায়িত্বশীল প্রশাসন না থাকা, নির্ভরযোগ্য পরিচয়পত্র ইস্যু করতে ব্যর্থতা, পাসপোর্টের নিরাপত্তা-সংক্রান্ত ফাঁকফোকর এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের নির্দেশ পাওয়া নাগরিকদের ফেরত নিতে অনাগ্রহ। কিছু দেশের নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পর ভিসার সময়সীমা অতিক্রম করে অবস্থান করছিলেন বলেও জানা যায়। এছাড়া সন্ত্রাসবাদ, ইহুদিবিরোধী কার্যকলাপ এবং মার্কিনবিরোধী কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র।

পররাষ্ট্র দফতরের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, আমেরিকানদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং বিদেশি নাগরিকদের আইন মেনে চলা নিশ্চিত করতে আমরা সব নীতি নিয়মিতভাবে পুনর্মূল্যায়ন করি। তবে তিনি অভ্যন্তরীণ আলোচনার বিস্তারিত প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানান। যে ৩৬টি দেশকে সতর্ক করা হয়েছে। দেশগুলো হচ্ছে-অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, বেনিন, ভুটান, বুরকিনা ফাসো, কেপ ভার্দ, কম্বোডিয়া, ক্যামেরুন, আইভরি কোস্ট, কঙ্গো ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক, জিবুতি, ডোমিনিকা, ইথিওপিয়া, মিশর, গ্যাবন, গাম্বিয়া, ঘানা, কিরগিজস্তান, লাইবেরিয়া, মালাউই, মৌরিতানিয়া, নাইজার, নাইজেরিয়া, সেন্ট কিটস ও নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সাও টোমে ও প্রিন্সিপি, সেনেগাল, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া, তানজানিয়া, টোঙ্গা, টুভালু, উগান্ডা, ভানুয়াতু, জাম্বিয়া এবং জিম্বাবুয়ে।

এ তালিকা যুক্ত হলে চলতি মাসে কার্যকর হওয়া নিষেধাজ্ঞা ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হবে। ইতোমধ্যে যেসব দেশ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে সেগুলো হলো: আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো রিপাবলিক, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান এবং ইয়েমেন। পাশাপাশি বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান এবং ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের প্রবেশও আংশিকভাবে সীমিত রয়েছে। প্রথম দফার প্রেসিডেন্সিতে ট্রাম্প মুসলিম-প্রধান সাত দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন, যা বিভিন্ন আইনি চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টে গৃহীত হয়। তার দ্বিতীয় দফায় নিষেধাজ্ঞার তালিকা আরো সম্প্রসারণের পরিকল্পনা মার্কিন অভিবাসন নীতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করছে।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)