কঠোর অভিবাসন নীতি, সিটির পাবলিক স্কুলে শিক্ষার্থী কমছে


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 17-12-2025

কঠোর অভিবাসন নীতি, সিটির পাবলিক স্কুলে শিক্ষার্থী কমছে

নিউইয়র্ক সিটিতে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি এবং ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতির প্রভাবে পাবলিক স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থী সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। সাম্প্রতিক প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের শুরুতে নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক স্কুলগুলোতে প্রায় ২২ হাজার শিক্ষার্থী কম ভর্তি হয়েছে। এই সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২.৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। করোনা মহামারির পর স্কুল ব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা আসার পর এটিই সবচেয়ে বড় পতন। এর আগে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩.৮ শতাংশ কমেছিল।

নিউইয়র্ক সিটি ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশনের চ্যান্সেলর মেলিসা অ্যাভিলেস-রামোস জানান, এই পতনের পেছনে মূলত দুটি কারণ কাজ করছে, অসহনীয় জীবনযাত্রার ব্যয় এবং অভিবাসন নিয়ে বাড়তে থাকা ভয় ও অনিশ্চয়তা। উচ্চ ভাড়া, শিশু লালন-পালনের খরচ এবং আবাসন সংকটের কারণে অনেক তরুণ পরিবার নিউইয়র্ক ছেড়ে অন্য স্টেটে চলে যাচ্ছে। অন্যদিকে, আগে অভিবাসীদের আগমনে স্কুলে নতুন শিক্ষার্থী যোগ হলেও, বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন দমননীতির ফলে সেই প্রবাহ অনেকটাই কমে গেছে।

চ্যান্সেলর অ্যাভিলেস-রামোস বলেন, যখন পরিবারগুলো নিরাপদ বোধ করে এবং নিউইয়র্কে বসবাসের খরচ বহন করতে পারে, তখন তারা স্বাভাবিকভাবেই নিজেদের এলাকার সরকারি স্কুল বেছে নেয়। তিনি আশা প্রকাশ করেন, মেয়র-নির্বাচিত জোহরান মামদানির ‘অ্যাফোর্ডেবিলিটি এজেন্ডা’ কার্যকর হলে ভবিষ্যতে আবার শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়তে পারে এবং অভিবাসী পরিবারগুলোর মধ্যে আস্থাও ফিরবে।

বর্তমানে জন্মহার হ্রাস ও আরো কঠোর একাডেমিক মানের চাহিদাও শিক্ষার্থী কমার পেছনে ভূমিকা রাখছে। তবে শিক্ষার্থীসংখ্যা কমে যাওয়ায় স্কুলগুলোর অর্থায়ন মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়ছে, কারণ শিক্ষার্থীপ্রতি বরাদ্দের ওপরই বাজেট নির্ভর করে। এতে অনেক স্কুলে বিষয়ভিত্তিক ক্লাস ও সহশিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে। ইতোমধ্যে কিছু স্কুল একীভূত করা হয়েছে, এমনকি কিছু বন্ধও হয়ে গেছে।

অভিবাসন প্রসঙ্গে জানা গেছে, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ কঠোর হওয়ায় নতুন অভিবাসীর আগমন কমেছে। একই সঙ্গে, ফেডারেল অভিযানে নিউইয়র্ক এলাকায় অন্তত ১৪০ জন শিশুকে আটক করা হয়েছে, যা অনেক অভিবাসী পরিবারকে আতঙ্কিত করেছে। ফলে কেউ কেউ স্বেচ্ছায় শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছেন বা অন্যত্র স্থানান্তরিত হচ্ছেন। তথ্য অনুযায়ী, যেসব স্কুলে আগে অভিবাসী শিক্ষার্থী বেশি ছিল, সেখানে এবার শিক্ষার্থী সংখ্যা গড়ে ১১ শতাংশ কমেছে, যেখানে শহরজুড়ে গড় পতন ২ শতাংশ।

তবে এই সংকটের মধ্যেও স্কুলগুলো অভিবাসী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। অনেক স্কুলে ‘ড্রিম স্কোয়াড’, ‘ইমিগ্র্যান্ট অ্যাম্বাসেডর’ এবং সহপাঠী সহায়তা কর্মসূচি চালু রয়েছে। কোথাও কোথাও শিক্ষকরা স্কুলের আশপাশে নজরদারি করছেন, এমনকি দলবদ্ধভাবে শিক্ষার্থীদের স্কুলে আনার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। চ্যান্সেলর অ্যাভিলেস-রামোসের মতে, এসব উদ্যোগ আরও বিস্তৃত করা গেলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও ভর্তি আবার বাড়তে পারে।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)