যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য ইলহান ওমার গত ১৪ ডিসেম্বর অভিযোগ করেন, ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) সপ্তাহান্তে তার ছেলেকে আটক করে তার নাগরিকত্বের প্রমাণ দেখাতে বলেছিল। ওমর জানান, আগের দিন তার ছেলে একটি টার্গেট স্টোরে গেলে আইসের কর্মকর্তারা তাকে থামান। তবে সে নিজের পাসপোর্ট দেখানোর পর কর্মকর্তারা তাকে ছেড়ে দেন। ওমর বলেন, তার ছেলে সব সময়ই পাসপোর্ট সঙ্গে রাখে। তিনি আরো উল্লেখ করেন, এর আগেও আইসের কর্মকর্তারা একটি মসজিদে প্রবেশ করেছিলেন, যেখানে তার ছেলে ও অন্যরা নামাজ আদায় করেন। তবে সে সময় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
কংগ্রেসওম্যান ইলহান ওমর বলেন, তিনি প্রায়ই ছেলেকে স্মরণ করিয়ে দেন, তিনি তার নিরাপত্তা নিয়ে কতটা উদ্বিগ্ন। কারণ আইস যেসব এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে, সেখানে তার ছেলে সহজেই উপস্থিত থাকতে পারে। তার অভিযোগ, এসব অভিযানে বর্ণভিত্তিকভাবে মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। বিশেষ করে সোমালি পরিচয়ধারী যুবকদের, যাদের অবৈধ অভিবাসী বলে সন্দেহ করা হয়।
এ মাসের শুরুতে ফেডারেল এজেন্টরা মিনেসোটার টুইন সিটিস এলাকায় অভিযান চালায়, যেখানে মূল লক্ষ্য ছিল অবৈধ সোমালি অভিবাসীরা। ট্রাম্পের মন্তব্য এবং ইলহান ওমরের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণের পর এসব অভিযান আরো তীব্র হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। এর আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইলহান ওমারকে ‘গার্বেজ’ বলে উল্লেখ করেন এবং সোমালি অভিবাসীদের দেশ থেকে বিতাড়নের আহ্বান জানান।
গত ১২ ডিসেম্বর ইলহান ওমার হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের সচিব ক্রিস্টি নোয়েম এবং আইসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টড লায়ন্সের কাছে একটি চিঠি পাঠান। চিঠিতে তিনি অভিযোগ করেন, এসব অভিযান সরাসরি বর্ণভিত্তিক প্রোফাইলিং এবং অপ্রয়োজনীয় শক্তি প্রদর্শনের শামিল। তার ভাষায়, আমার কাছে এটি স্পষ্ট, এ অভিযানগুলো সোমালি সম্প্রদায় ও আমার বিরুদ্ধে ট্রাম্পের বর্ণবাদী মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া হিসেবেই পরিচালিত হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্সাস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, মিনেসোটা রাজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাধিক সোমালি জনগোষ্ঠীর বসবাস সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৭ হাজার। এর মধ্যে ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ টুইন সিটিস এলাকায় বসবাস করেন। ওমার উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত সোমালি জনগোষ্ঠীর ৯০ শতাংশেরও বেশি নাগরিকত্বপ্রাপ্ত। মাত্র প্রায় ২২ হাজার মানুষ, অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮.৪ শতাংশ, নাগরিকত্বহীন। ইলহান ওমার নিজে সোমালিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আসেন এবং ২০০০ সালে মার্কিন নাগরিকত্ব অর্জন করেন।