২০২৪ সালের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয় (ইউটি অস্টিন) ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকায় মুসলিম বিদ্বেষমূলক হামলায় প্যালেস্টিনিয়ান-আমেরিকান যুবক জাকারিয়া ডোয়ারকে ছুরিকাঘাতের দায়ে ৩৮ বছর বয়সী বার্ট জেমস বেকারকে এক বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে আদালত। আদালত তাকে শারীরিক আঘাত করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছে, যা তার বিরুদ্ধে আনা প্রাথমিক গুরুতর অভিযোগের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম মাত্রার অপরাধ। বেকার ৯ ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে কারাভোগ শুরু করেছেন এবং তাকে ২৯৫ ডলার জরিমানা প্রদান করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে ২০২৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি, যখন জাকারিয়া ডোয়ার ও আরো কয়েকজন একটি পিকআপ ট্রাকে অবস্থান করছিলেন। পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রত্যক্ষদর্শীরা দেখেছেন বেকার একটি সাইকেলে এসে ট্রাকের ডান পাশের যাত্রী দরজা খুলে একজনকে জোরপূর্বক বাইরে টেনে এনে আক্রমণ করেন। হামলার সময় তিনি ঘৃণাসূচক ও বিদ্বেষপূর্ণ ভাষায় গালাগালি করতে থাকেন। হাতাহাতির একপর্যায়ে বেকার মাটিতে পড়ে গেলেও আবার উঠে দাঁড়িয়ে একটি ছুরি বের করে হামলা চালান। এতে জাকারিয়া ডোয়ারের পাঁজরের কাছে গুরুতর রক্তক্ষরণ হয়।
জাকারিয়া ডোয়ার জানান, ট্রাকে ঝুলানো একটি প্যালেস্টিনিয়ান স্কার্ফ দেখেই বেকার তাদের লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বেছে নেয় বলে তিনি মনে করেন। ঘটনার পর তিনি বলেন, সে জানত কী করছে। ছুরি বের করার সময় তার উদ্দেশ্য পরিষ্কার ছিল-সে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। এ ঘটনায় কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (কেয়ার)-এর টেক্সাস শাখার অন্তর্বর্তী নির্বাহী পরিচালক মুস্তাফা ক্যারল জানান, হামলার আগে বেকার একাধিকবার মুসলিম বিদ্বেষমূলক গালি ব্যবহার করেন এবং পরে শারীরিকভাবে আক্রমণ চালান।
তবে ট্র্যাভিস কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিস জানিয়েছে, গ্র্যান্ড জুরি এই ঘটনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘৃণাজনিত অপরাধ (হেট ক্রাইম) হিসেবে চিহ্নিত করেনি। আদালতের নথি অনুযায়ী, পুরো সংঘর্ষের সময়কাল ছিল মাত্র ৪৫ সেকেন্ড। আদালতের রায়ে বেকারের কারাদণ্ড ও জরিমানার মাধ্যমে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে যে শারীরিক সহিংসতা এবং ধর্মীয় বা জাতিগত বিদ্বেষপ্রসূত হামলার কোনো স্থান সমাজে নেই। স্থানীয় সমাজ ও বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রদায়কে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। আহত জাকারিয়া ডোয়ার বর্তমানে চিকিৎসা ও মানসিক সহায়তা পাচ্ছেন বলে জানা গেছে।