ফিল্মে আসার সৎ সাহস আগে পাইনি


আলমগীর কবির , আপডেট করা হয়েছে : 08-03-2023

ফিল্মে আসার সৎ সাহস আগে পাইনি

ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশো যুক্ত হচ্ছেন সিনেমায়। এরই মধ্যে বড় আয়োজন করে ঘোষণা দিয়েছেন। সিনেমার নাম ‘সুড়ঙ্গ’। এ বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির 

প্রশ্ন: ২০০৪ সালে সিনেমা শুরুর পর ২০২৩ সালে এসে সিনেমায়। এই সিদ্ধান্ত নিতে এতো বিলম্ব হলো কেন?

আফরান নিশো: আমি সবসময়ই সিনেমা করতে চেয়েছিলাম। একটা পেলাম, আর করে ফেললাম, এমনটা কখনো করতে চাইনি। সিনেমা করার জন্য একটা বিশাল অ্যারেঞ্জমেন্ট দরকার, একটা ভালো গল্প দরকার। তাছাড়া সবচেয়ে বড় কথা প্রস্তুতি থেকে শুরু করে একটা ভালো সময়ের দরকার। এর আগে অনেক সিনেমার প্রস্তাব আসলেও অনেকে সে সময়টা দিতে চাইতেন না। সিনেমার জন্য যে সময়টা আমি ব্যয় করবো এই সময় তো আমি অন্য কাজ করতে পারবো না। পেশাদারভাবে সিনেমায় আসতে চেয়েছিলাম। সেটা পারছিলাম না বলেই এতদিন নাটকে ছিলাম। সবকিছু মিলিয়ে হচ্ছিলো না, ফিল্মে আসার সৎ সাহসটা পাইনি আগে। এখন সময় বদলাচ্ছে। এখন ফিল্মে অনেক কিছু দেখেই ‘জাস্ট ওয়াও ফ্যাক্ট’ কাজ করে। মনে হয়েছে এখন সিনেমা করা যায়। আর এই সিনেমার গল্প শোনার পর থেকেই মনস্তাত্ত্বিকভাবে আমি কাজটি করার জন্য প্রস্ততি নিতে থাকি।

প্রশ্ন: ‘সুড়ঙ্গ’-এর জন্য আপনার চরিত্রের প্রস্তুতি টা ঠিক কেমন ছিল?

আফরান নিশো: কেউ অবজারভেশন থেকে অভিনয় করে, কেউ থিওরি এপ্লাই করে, আবার কেউ মেথড এক্টিং করে। কিন্তু আমি ওপেন থাকার চেষ্টা করছি। বেশি স্টাক হওয়ার চেয়ে রিল্যাক্স থাকা জরুরি। জাস্ট গো ইউথ দ্য ফ্লো। অভিনয়ের অনেক পথ আছে। মূলত গল্প ভাবনা শোনা এবং স্ক্রিপ্ট পড়া থেকে আমার প্রস্তুতি শুরু হয়। আগে কাজটা করি এরপর না হয় দর্শকরা হলে গিয়ে দেখুক। মাঝে অনেক দিন কাজ করিনি, ভবঘুরের মতো ঘুরেছি। এরমধ্যে ওজন কমিয়েছি ১৩ কেজির মতো, যেটা আসলে নিজের জন্য দরকার ছিল। কিন্তু এটা সিনেমার চরিত্রটাকে প্লাস করবে কারণ ঐ চরিত্রটার জন্য একটু লিন থাকা জরুরি। সিনেমার নাম যেহেতু ‘সুড়ঙ্গ’, মাটির নিচে যেতে হবে। অনেক কাটসাটের পর স্ক্রিপ্টের ফাইনাল ড্রাফট হাতে পেলাম দু’দিন আগে। এখন দেখা যাক কি হয়, ৫ মার্চ থেকে শুটিং শুরু করতে যাচ্ছি।

প্রশ্ন: এখন কি তাহলে ভাবনা শুধুই সিনেমা?

আফরান নিশো: মডেলিং দিয়ে আমার শুরু, এরপর নাটক-ওটিটি করেছি। এখন সিনেমা নিয়ে ভাবছি। আমার কাছে এই সবগুলোকেই একেক টা আলাদা মাধ্যম মনে হয়। আমার কাজ অভিনয় করা, কন্টেন্ট করা; কোথায় করছি সেটা না। টেলিভিশনে যে বাজেটে কাজ হয় ওটিটিতে তার চেয়ে বেশি এবং সিনেমাতে সেটা আরও বেশি। সিনেমাতে কাজ করলে বা ব্যস্ততা বাড়লে অন্যান্য প্লাটফর্মের কাজ বাদ দেওয়ার ধৃষ্টতা আমার নেই। হয়তো কম কাজ হবে কিন্তু আমি বাদ দিতে পারবো না। যদি নাটক করি তাহলে একটা করতে পারবো না। করলে দশটি করতে হবে যাতে আমার প্রতি কেউ মনঃক্ষুণœ না হয়। তাছাড়া আমরা যারা শিল্পী কিংবা নির্মাতা তাদের প্রত্যেক মাধ্যমেই বারবার নিজেকে প্রমাণ করতে হয়। সিনেমায় যদি অন্যান্য প্লাটফর্মগুলোর মতো নিজেকে প্রমাণ করতে পারি তাহলে অন্য মাধ্যমে কাজ কম করা হবে। আবার যদি দেখি সিনেমা কম করা হচ্ছে তখন হয়তো ওটিটির ভালো গল্পটা চুজ করবো আমি।

প্রশ্ন: প্রথম সিনেমা, কোন ভয় কাজ করছে?

আফরান নিশো: সবাই কিন্তু সফল-ই হতে চায়। তবে সফল হলে যেন অহংকার না আসে সেটা খেয়াল রাখা উচিত। আমি মনে করি যখন ব্যর্থতা আসে তার মানে থেমে যাওয়া নয়, ব্যর্থতা একটা শিক্ষা। দীর্ঘদিন কাজ করে অনেকবার হেরেছি আবার জিতেছি। ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আবার আপ্রাণ চেষ্টায় সাফল্যের দেখা পেয়েছি।

প্রশ্ন: সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে একটা অদৃশ্য পলিটিক্স বিরাজমান! এসব বিষয়ে আপনি অবগত?

আফরান নিশো: ভালো কাজে যদি ঝামেলা আসে বা আটকানোর চেষ্টা করা হয় তবে সেটা ভালোভাবেই মোকাবিলা করা উচিত। কেউ যদি পলিটিক্স করে তাহলে সেটা পলিটিক্সের মাধ্যমে জবাব দিতে হবে। পারফর্মার হিসেবে আমার ধর্ম হচ্ছে কাজ। কাজটাই সবকিছুর প্রতিফলন করাবে। একটা ভালো কাজ যদি পলিটিক্সের মাধ্যমে মুখ থুবড়ে পড়ে তাহলে সেই প্লাটফর্ম মোটেও আমাদের হবে না। এসব নিয়ে আমি কখনো ভয় পাই না।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)