উপজেলায় কোটিপতির ছড়াছড়ি


বিশেষ প্রতিনিধি , আপডেট করা হয়েছে : 22-05-2024

উপজেলায় কোটিপতির ছড়াছড়ি

কোটিপতির সেঞ্চুরি হয়েছে ৬ষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে। যা রীতিমতো পঞ্চম বা গত উপজেলা নির্বাচনের প্রায় তিনগুণ বলে দাবি করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি ১৯ মে রোববার এক সাংবাদিক সম্মেলনে টিআইবি জানিয়েছে, দ্বিতীয় ধাপে যে হলফনামা দাখিল হয়েছে সেটা বিশ্লেষণ করে ১০৫ জন কোটিপতির সন্ধান পেয়েছে তারা। যার মধ্যে সংখ্যা ৫৭ শতাংশের বেশি তাদের কর্মক্ষেত্র হিসেবে উল্লেখ করেছে ব্যবসায়ী। এদিন রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। 

টিআইবি জানায়, ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তথা দ্বিতীয় ধাপে ১৬০টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৫৯৯ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬৮৯ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫২৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ৭০.৫১ শতাংশই হলফনামায় নিজেকে ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। ১২.১৭ শতাংশ পেশা হিসেবে দেখিয়েছেন কৃষিকাজ। এরপরই রয়েছে আইনজীবী (৪.১৭ শতাংশ) ও শিক্ষক (৪.১৭ শতাংশ)।

একইভাবে ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদেরও প্রায় ৬৮.৭৩ শতাংশ নিজেকে ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের ৫২ শতাংশই গৃহিণী-গৃহস্থালির কাজকে পেশা হিসেবে দেখিয়েছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯ শতাংশ ব্যবসায়ী। পরের অবস্থানে শিক্ষক ও কৃষিজীবী। অস্থাবর সম্পদের ভিত্তিতে এই কোটিপতির হিসাব করা হয়েছে। জমির মতো স্থাবর সম্পদের মূল্য নির্ধারণ কঠিন হওয়ায় তা হিসাবে আনা হয়নি বলে জানায় সংস্থাটি।

টিআইবির সতর্কতা 

টিআইবি জানিয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ব্যবসায়ী প্রার্থীদের দাপট ক্রমেই বেড়ে চলেছে। ২০১৪ সালের চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তুলনায় ব্যবসায়ী প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৮ শতাংশ। অন্যদিকে গৃহিণী/গৃহস্থালি, কৃষিজীবী ও শিক্ষক প্রার্থীদের পরিমাণ দিন দিন কমছে।

টিআইবির বিশ্লেষণে বলা হয়, ক্ষমতায় থাকার সঙ্গে দ্রুত আয় ও সম্পদ বৃদ্ধির প্রবণতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। শুধু নির্বাচিত ব্যক্তি নন, তাদের স্ত্রী/স্বামী ও নির্ভরশীলদের আয় ও সম্পদ বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। যারা দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় আছেন, তাদের আয় ও সম্পদ বেশি বৃদ্ধি পাওয়ার প্রবণতাও স্পষ্ট।

অস্থাবর সম্পদের এ তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন নোয়াখালীর সেনবাগের চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। তার মোট অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৮৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। তালিকার ২ নম্বরে আছেন ঢাকার ধামরাইয়ের সুধীর চৌধুরী, তার সম্পদের পরিমাণ ৩৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। তৃতীয় অবস্থানে আছেন মোহাম্মদ ইদ্রিস ফরাজী, তার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। 

উল্লেখ্য, এর আগে টিআইবি জানিয়েছিল প্রথম ধাপের এমন বিশ্লেষণ। তাতে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীদের প্রায় ৭০ শতাংশই ছিলেন ব্যবসায়ী। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে কোটিপতি ছিলেন ৯৪ জন। 

দেশের অর্থনৈতিক দূরবস্থার খবরে রাজনৈতিক অঙ্গন টালমাটাল। প্রতিনিয়ত কমছে রিজার্ভ। বাড়ছে মূল্যস্ফিতি। এমনি মুহূর্তে উপজেলায় প্রার্থীদের এমন কোটিপতির তথ্য দেশে রাজনীতিবিদদের ফুলে ফেঁপে ওঠার চিত্রটা অন্যরকম মনে হচ্ছে।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)