পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ কোথায়, এ প্রশ্ন এখন সর্বত্র। দীর্ঘদিন যাবৎ লোকচক্ষুর আড়ালে তিনি। কিন্তু তিনি কি দেশে আছেন না বিদেশে অবস্থান করছেন এ নিয়ে ধুম্রজাল। বিশেষ করে দুদকের তলবি নোটিশ তার কাছে বা তার হাতে সরাসরি পৌছানো যায়নি বলে জানিয়েছে অনুসন্ধান টিম। কেউ বলছেন তিনি দেশেই আছেন আত্বগোপন করে। কেউ বা বলছেন লোকলজ্জায় সে জনসম্মুখে আসছেন না। কেউ বা বলছেন পরিবার পরিজন নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। খোজ করা হয়েছে গুলশানের র্যাংকন আইকন টাওয়ারেও। নেই সেখানে।
আগামী ৬ ও ৯ জুন বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানদের দুদকে হাজিরার দিন ধার্য আছে। আর বেনজীর পরিবারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেছেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ওমর ফারুক।
নতুন সম্পদের খোজ মিলেছে
দেশ-বিদেশে বেনজীরের সম্পদের অনুসন্ধান করতে গিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মকর্তাদের বিস্ময় বাড়ছে। নতুন করে তার নামে-বেনামে আরও কয়েকশ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। স্ত্রী-সন্তানদের পাশাপাশি শাশুড়ি ও স্বজনদের নামেও তিনি গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। নতুন করে যেসব সম্পদের তথ্য দুদকের হাতে এসেছে তার মধ্যে আছে-অন্তত তিনটি লাইটারেজ জাহাজ, পঞ্চগড়ে বিশাল চা বাগান, বাংলাবান্ধা পোর্ট এলাকায় জায়গা-জমি, গাজীপুর এবং থানচিতে রিসোর্ট ও গাজীপুরে একটি টেক্সটাইল মিল। এসব সম্পদের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। মালিকানায় বেনজীর পরিবারের সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত হওয়ার পরই পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিদেশেও খোজ
বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের বিদেশে সম্পদ আছে কিনা তা জানতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট থেকে আমেরিকা, কানাডা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুবাইয়ের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই তিনটি দেশে বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের কোনো ব্যাংক হিসাব, নিবন্ধিত স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ আছে কিনা-তা জানাতে বলা হয়েছে চিঠিতে।
উল্লেখ্য, ২৬ ও ২৭ মে বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রায় হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক ও ফ্রিজ করেন মহামান্য আদালত।
দুদক যা বলছে
এ বিষয়ে দুদক কমিশনার (তদন্ত) বহুরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আইন ও বিধি অনুসারে যা যা করা দরকার করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেনজীর পরিবারের স্থাবর-অস্থাবর বিপুল সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধ করা হয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি হিসাব ফ্রিজ করার আগেই টাকা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। কত টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন তা অনুসন্ধান কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখবেন। তিনি আরও বলেন, ‘অনুসন্ধান কর্মকর্তা আইন ও বিধি অনুযায়ী কাজ করছেন। হাইকোর্টের র টিম কাজ করছে। অল্প সময়ে আমরা অনেক এগিয়েছি।’