তাহের-আরিফদের সংবাদ সম্মেলন, মাকসুদ-মাসুদদের প্রতিবাদ


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 18-12-2024

তাহের-আরিফদের সংবাদ সম্মেলন, মাকসুদ-মাসুদদের প্রতিবাদ

প্রবাসের অন্যতম আঞ্চলিক সংগঠন চট্টগ্রাম সমিতির বিরোধ থেকে লেগেই আছে। নির্বাচন করেও কোনো লাভ হলো না। নির্বাচনের পরও দুই ভাগে বিভক্ত এই সমতি। একপক্ষে রয়েছেন তাহের-আরিফ। আরেক পক্ষে রয়েছেন মাকসুদ-সিরাজি। একপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করেছে। আবার আরেক পক্ষ সেই সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য নিয়ে প্রতিবাদ করেছে। অনেকেরই প্রশ্ন এভাবে আর কতদিন চলবে চট্টগ্রাম সমিতি?

সংবাদ সম্মেলন

চিটাগং অ্যাসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা ইনকের (চট্টগ্রাম সমিতি) নির্বাচনে অন্য প্যানেলের জয়ীদের অবিলম্বে শপথ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন, তাহের-আরিফ প্যানেলের সদস্যরা। গত ১০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাতে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি পার্টি হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ আহ্বান জানান।

এ সময় বক্তব্য রাখেন সভাপতি মোহাম্মদ আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুর রহিম, ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হানিফ, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য মো. শাহজাহান, সাবেক সভাপতি কাজী শাখাওয়াত হোসেন আজম ও মুনির আহমেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খোকন কে চৌধুরী, সাবেক সদস্য কামাল হোসেন মিঠু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ চৌধুরী, সৈয়দ এম হোসেন বাবর, টি আলম, শওকত হোসেন স্বজন, শফিকুল আলম, ফরিদ আহমেদ, আবুল কালাম, জাবের শাফি, মোহাম্মদ নুরুল আমিন, ইমরুল কায়সার, মোহাম্মদ ইসা, নওশাদ কামাল, মো. আজিম সম্রাট, কাউচার চোধুরী, মেজবা আহমেদ প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য আরিফুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি অত্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে হাড্ডাহাড্ডি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে এতে ছয়টি চ্যালেঞ্জ ভোট জমা পরে। চূড়ান্ত ভোট গণনা শেষে দেখা যায় চারটি পদে এই ছয়টি চ্যালেঞ্জ ভোট ফলাফলে ভূমিকা রাখার সম্ভাবনা আছে। তাই নির্বাচনের দিন থেকেই উপরোক্ত ছয়টি চ্যালেঞ্জ ভোট নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত ‘ইউনাইটেড ব্যালট’ কাছে চলে যায়। নিরীক্ষণ শেষে মোট ছয়টি ভোট হতে দুটি ভোট বাতিল বিবেচিত হয় এবং চারটি ভোট গণনার জন্য ইউনাইটেড ব্যালটকে নির্বাচন কমিশন নির্দেশনা প্রদান করেন। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে ইউনাইটেড ব্যালট চারটি ভোট গণনা করে ২৫ অক্টোবর নির্বাচনী ফলাফলের সার্টিফায়েড কপি নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রেরণ করেন। নির্বাচন কমিশন এই ফলাফলটি তাদের অফিসিয়াল ইমেইলের মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বী সকল প্রার্থীকে অবগত করেন। পত্রপত্রিকায় নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, নির্বাচনের দিন রাতে নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট ভাষায় জানায়, চ্যালেঞ্জ ভোট গণনার পরেই চূড়ান্ত ফল ঘোষণা হবে। কিন্তু একটি মহল আংশিক ফলাফলে অতি উৎসাহী হয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠে। যদিও এই উল্লাস ছিল ক্ষণিকের। চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার পর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদসহ ৯টি পদে তাহের-আরিফ পরিষদের নেতৃবৃন্দ নির্বাচিত হন। অন্যপক্ষে মাকসুদ-মাসুদ পরিষদের দশজন নির্বাচিত হন। নির্বাচনে নেতৃস্থানীয় পদে হেরে গিয়ে কতিপয় প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকরা উদ্ভট আচরণ শুরু করেন। পরাজিত সভাপতি প্রার্থী মাকসুদুল হক চৌধুরী প্রকাশ্যে ফেসবুক লাইভে এসে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। নির্বাচনে হেরে গিয়ে তারা নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করেন। ‘নো আইডি নো ভোট’ অপব্যাখ্যা দেওয়া শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এরপর চট্টগ্রাম ভবনে প্রবেশ করে অসাংবিধানিকভাবে এবং হাস্যরসের সৃষ্টি করে জনৈক ব্যক্তির মাধ্যমে শপথ গ্রহণের নাটক করে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চট্টগ্রাম সমিতির বৃহত্তর স্বার্থে আমরা নির্বাচন কমিশনকে ইতিমধ্যে আনুষ্ঠানিক চিঠির মাধ্যমে যারা নির্বাচিত হয়ে ও যথাযথভাবে শপথ গ্রহণ করেননি, তারা যদি অবিলম্বে শপথ না নেন তবে নির্বাচনে দ্বিতীয় ভোট প্রাপ্ত প্রার্থীদের শপথ না নেয়া পদে নির্বাচিত ঘোষণা করার দাবি জানানো হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে কল্পকাহিনির তীব্র নিন্দা

বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ‍্যাকসন হাইটসের একটি রেস্টুরেন্টে চিটাগাং অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ের নামে যে মিথ‍্যা বানানো কল্পকাহিনি পাঠ করা হয়েছে মাকসুদ-মাসুদ প‍্যানেল থেকে নির্বাচিত ১৩ জনের পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। 

চট্টগ্রাম সমিতির ২০১৭ সালের নির্বাচনে মোহাম্মাদ হানিফকে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম‍্যান বানানোকে কেন্দ্র করে জিয়া-সেলিম কমিটি থেকে একযোগে ১১ জন সদস‍্য পদত‍্য‍াগ করেছিল, যদিও সংগঠনের গঠনতন্ত্রে আছে কমিটির বেশির ভাগ সদস‍্য পদত‍্যাগ করলে উক্ত কমিটি বিলুপ্ত হয়ে যায়, আজকের মতো ঠিক একই কায়দায় সেদিন আজকের সভাপতি দাবিদার আবু তাহের গঠনতন্ত্রের ভুল ব‍্যাখা দিয়ে বলেছিলেন সভাপতি একজনের সিদ্বান্তে সংগঠন চলতে পারে। আজকেও তাদের বক্তব‍্য দেখলে মনে হয় তারা ৬ জন এবং চোরা ভোটে নির্বাচিত তথাকথিত তিন জন মিলে সমিতিকে তাদের মন গড়া সিদ্বান্তে চালাবেন। তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই চাটগাঁবাসী এখন আর বোকা নয়। মাকসুদ-মাসুদ পরিষদের ১৩ জন চট্টগ্রামবাসীর ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। 

চট্টগ্রাম সমিতি চলবে যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত তাদের মতামতের ভিত্তিতে। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত বিধিমালা অনুযায়ী নির্বাচনের দিন ঘোষিত ফলাফলেই চূড়ান্ত ফলাফল, নির্বাচনের পাঁচ দিন পর ঘোষিত কোনো ফলাফল গ্রহণযোগ্য নয়! চারটি কেন্দ্রের মধ্যে কোনো কেন্দ্রে ভোট বন্ধ ছিল না, তাহলে কি কারণে নির্বাচনের পাঁচদিন পর পুনঃফলাফল ঘোষণা করা হলো? 

এই প্যানেলের পক্ষ থেকে আরো বলা হয়, মতবিনিময় সভায় মনগড়া উদাহরণ দিয়ে হেরে যাওয়া দশ জনকে নির্বাচিত দেখানোর যে পাঁয়তারা করছে তা চট্টগ্রামবাসী কখনো মেনে নেবে না।

চট্টগ্রাম সমিতি নিয়ে অতীতে অনেকে নানাভাবে খেলা করেছেন, ভবিষ‍্যতে আর কোনো খেলা চলবে না। চট্টগ্রামবাসীর মতামতের ভিত্তিতে সংগঠন চলবে, ষড়যন্ত্র করে ব‍্যাংক অ্যাকাউন্ট দখল করে সংগঠনের মালিক মনে করা সঠিক নয়। অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির গত দু’বছরের কার্যক্রমের কোনো রকম হিসাব বা অডিট না করে বুঝিয়ে নেওয়া মোটেও গ্রহণযোগ‍্য নয়, সিকিউরিটি দিয়ে সাত জন মিলে সভা করে সংগঠন চলবে না। সংগঠন চলে সংখ‍্যাগরিষ্ঠ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)