উপাসনালয়ে অভিবাসন অভিযান চালানো যাবে না


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 26-02-2025

উপাসনালয়ে অভিবাসন অভিযান চালানো যাবে না

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের ফেডারেল বিচারক থিওডোর চুয়াং গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্প প্রশাসনকে নির্দিষ্ট উপাসনালয়ে অভিবাসন গ্রেফতার কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। রিলিজিয়াস সোসাইটি অব ফ্রেন্ডস, কোঅপারেটিভ ব্যাপটিস্ট ফেলোশিপ এবং শিখ টেম্পলের দায়ের করা মামলায় বিচারক রায় দেন যে, নতুন নীতি ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘন করে এবং অভিবাসীদের মধ্যে ভয় সৃষ্টি করছে। 

মেরিল্যান্ডের ফেডারেল আদালত গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনকে উপাসনালয়ে অভিবাসন গ্রেফতার কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট জজ থিওডোর চুয়াং এই আদেশ জারি করেন। রিলিজিয়াস সোসাইটি অব ফ্রেন্ডস, কোঅপারেটিভ ব্যাপটিস্ট ফেলোশিপ, শিখ টেম্পল কর্তৃক ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করে। আদালত মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রেফতার কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। বিচারক চুয়াং তার ৫৯-পৃষ্ঠার রায়ে উল্লেখ করেন যে, এই নীতি ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের লঙ্ঘন এবং প্রথম সংশোধনীর অধীনে বিশ্বাসের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যায়। তিনি বলেন, এই নীতি ধর্মীয় চর্চায় ভয়ের আবহ তৈরি করছে, যা সরাসরি ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর আঘাত হানছে। নতুন অভিবাসন নীতির ফলে অভিবাসীদের পাশাপাশি বৈধ অভিবাসন স্ট্যাটাসধারীরাও উপাসনালয়ে আসতে ভয় পাচ্ছেন, যা সরাসরি তাদের ধর্মীয় অনুশীলনে বাধা সৃষ্টি করছে। আদালতের আদেশ অনুযায়ী, মামলা চলাকালীন প্রশাসনকে আগের সংরক্ষিত স্থান নীতি অনুসরণ করতে হবে, যদি না বৈধ পরোয়ানা থাকে। এই রায়কে ধর্মীয় নেতারা উপাসনার স্বাধীনতার বড় বিজয় হিসেবে দেখছেন।

সরকারি পক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেন যে সংবেদনশীল স্থানে অভিযান চালানোর ক্ষমতা দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে, এবং নতুন নীতিতে কেবল সুপারভাইজারের অনুমতির প্রয়োজনীয়তা বাতিল করা হয়েছে। তবে বিচারক চুয়াং মনে করেন, এই নীতির ফলে ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে।ট্রাম্প প্রশাসন গত জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্টের ৩০ বছরের পুরনো নীতি বাতিল করে, যেখানে স্কুল, হাসপাতাল এবং উপাসনালয়ের মতো ”সংরক্ষিত স্থান”-এ অভিযান নিষিদ্ধ ছিল। মামলার বাদীরা দাবি করেন যে এই পরিবর্তন অভিবাসীদের মধ্যে ভয় সৃষ্টি করছে এবং তাদের ধর্মীয় অধিকার হুমকির মুখে ফেলছে। নতুন নীতির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তিনটি ধর্মীয় গোষ্ঠী। তারা যুক্তি দেন যে এই নীতি তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতাকে ব্যাহত করছে। আদালতের আদেশ অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসনকে উপাসনালয়ে অভিবাসন গ্রেফতারের ক্ষেত্রে পুরোনো নীতি অনুসরণ করতে হবে, যদি না কোনো বৈধ পরোয়ানা থাকে।

ডেমোক্রেসি ফরওয়ার্ডের সভাপতি স্কাই পেরিম্যান আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের সংবিধানসিদ্ধ অধিকার রক্ষার জন্য আদালতে যেতে বাধ্য হওয়া উচিত নয়। এই রায় প্রত্যেকের উপাসনার অধিকারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজয়। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই নীতি অপরাধীদের উপাসনালয়ে লুকিয়ে থাকার সুযোগ বন্ধ করবে। তবে ধর্মীয় নেতারা বলছেন, এই নীতি অভিবাসীদের মধ্যে ভয় ছড়িয়ে দিচ্ছে এবং ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সংহতিতে আঘাত করছে।

এই আদেশ ধর্মীয় সংগঠনগুলোর জন্য একটি বড় বিজয়, যা অভিবাসীদের উপাসনালয়ে নির্ভয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করে। এর পাশাপাশি, ওয়াশিংটন ডিসিতে আরো ২০টিরও বেশি খ্রিস্টান ও ইহুদি গোষ্ঠী জাতীয় পর্যায়ে এই নীতির বিরুদ্ধে আলাদা মামলা করেছে। এই রায়ের ফলে, ধর্মীয় সংস্থাগুলো তাদের উপাসনালয়ে আরও নিরাপদে এবং মুক্তভাবে উপাসনা করতে পারবে, যা মার্কিন সংবিধানের ধর্মীয় স্বাধীনতার মূলনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)