বাংলাদেশ ডে প্যারেডে বাংলাদেশকে উপস্থাপন


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 17-04-2025

বাংলাদেশ ডে প্যারেডে বাংলাদেশকে উপস্থাপন

এটা কত তম বাংলাদেশ ডে প্যারেড তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। তবে জ্যাকসন হাইটসে এটা টানা দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথমবারের বাংলাদেশ ডে প্যারেডের চেয়ে এবারের ডে প্যারেডের কোনো তুলনাই করা যাবে না। এবারের বাংলাদেশ ডে প্যারেড ছিল অনিন্দ সুন্দর প্যারেডে। এই প্যারেডে পুরো বাংলাদেশকে উপস্থাপন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ছিল বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐহিত্য এবং শিল্প-সংস্কৃতি। গত ১৩ এপ্রিল নিউইয়র্কের আবহাওয়া ছিল বেশ ঠান্ডা। সেই ঠান্ডা আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে বাঙালি সাজে, বাঙালিয়ানায় শত শত মানুষ অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ ডে প্যারেডে। বাংলাদেশ ডে প্যারেডটি বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসে অনুষ্ঠিত হয়। জ্যাকসন হাইটসের ৬৯ স্ট্রিট থেকে এই প্যারেড শুরু হয় এবং ৮৭ স্ট্রিটে গিয়ে শেষ হয়। এবারের পুরো আয়োজনটি ছিল চমৎকার। কোথাও কোনো ছন্দপতন দেখা যায়নি। যারা কাজ করেছেন তারা অবশ্যই সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। প্যারেডে সাধারণ যা থাকে সবকিছুই ছিল। নানা রঙের পোস্টার, বাংলা নববর্ষের কার্টুন, নৃত্য, সংগীত, ঢাকঢোল সবকিছুর আয়োজন ছিল। ছিল না কি? সোজা উত্তর সবই ছিল। এবারের বাংলাদেশ ডে প্যারেডে ব্যাপক সংখ্যক সংগঠন স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে। মানুষের রঙিন উপস্থিতি, রঙিন উপস্থাপন পুরো এলাকাকে রাঙিয়ে তোলে। আনন্দে গানে, নৃত্যে- ঢাকঢোলে যখন প্যারেড এগিয়ে যাচ্ছিল, সেই সময় এক অন্যরকম অনুভূতি কাজ করছিল। হৃদয়ে ধারণ করা বাংলাদেশটি যেন চোখের সামনে ফুটে ওঠে। অপ্রাপ্তির বেদনা যেন প্রাপ্তিতে ভরে ওঠে। দেখতে পেল প্রবাসে বাংলাদেশ। প্যারেডে মূলধারার রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকেও নায়ক নায়িকা এবং শিল্পীরা আসেন। তারা যখন রাস্তা অতিক্রম করছিলেন, তখন ভিন দেশিরা তালি বাজিয়ে তাদের উৎসাহিত করছিলেন।

মেলার সদস্য সচিব ফাহাদ সোলায়মান, কনভেনর মোহাম্মদ আলী এবং সোনিয়া সিরাজের উপস্থাপনায় প্যারেডে গ্র্যান্ড মার্শাল ছিলেন গোল্ডেন এজ হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট এবং সাপ্তাহিক আজকালের সম্পাদক শাহ নেওয়াজ। অতিথি হিসেবে ছিলেন নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস। চেয়ারম্যান ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, চিফ অ্যাডভাইজার, জেবিবিএর সভাপতি গিয়াস আহমেদ, নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের হেড অব চ্যান্সারি ইসরাত জাহান, সাংগঠনিক চেয়ারম্যান ফেম রকি, চিফ ম্যানেজমেন্ট ডিরেক্টর জে. মোল্লা সানি, চিফ কো-অডিনেটর ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, চিফ ইভেন্ট অর্গানাইজার মিয়া মোহাম্মদ দুলাল, স্পেশাল গেস্ট মহসিন আহমেদ নীরু, মার্শাল হিসেবে ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নূরুল আজিম, এলিজাবেথ পোক, শাহজাহদী পারভীন সারা, শাহ জে চৌধুরী, ইন্সপেক্টর খন্দকার আব্দুল্লাহ, ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটসের প্রেসিডেন্ট এবং গত প্যারেডের কনভেনার শাহ শহীদুল হক, ফামেতা প্রিসিলা, অভিনেতা জায়েদ খান, অভিনেতা মিলন, অভিনেত্রী রিচি সোলায়মান, উপস্থাপক দেবাশিষ, গায়ক প্রতীক হাসান প্রমুখ।

মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেন, ক্রমবর্ধমান কমিউনিটির সদস্য হিসেবে বাংলাদেশিরা নিউইয়র্ক সিটিকে বসবাসের চমৎকার একটি জনপদে পরিণত করতে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছেন। তাদের আমি সর্বত্র দেখতে পাই। জ্যাকসন হাইটসে, ব্রুকলিন এবং ব্রঙ্কসে তাদের অবস্থান চোখে পড়ার মতো। আফ্রিকান আমেরিকান মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেন, আমি বহুজাতিক এই সিটির মেয়র হয়েছি আপনাদের মতোই একটি কমিউনিটির সদস্য হিসেবে। আপনারা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকেন, তাহলে ভোটের ময়দানে আপনারাও বিজয় অর্জনে সক্ষম হবেন। আমেরিকান স্বপ্ন পূরণের পথে মার্কিন রাজনীতি ও প্রশাসনের সম্পৃক্ততার বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, আপনাদের প্রমাণ করতে হবে স্বপ্নের দেশে নয়, স্বপ্ন বাস্তায়নের দেশে। যদি ইমিগ্র্যান্ট হিসেবে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তিনি বলেন, আপনাদের মতো কমিউনিটির কারণেই আজকে আমি নিউইয়র্ক সিটির মেয়র। আমি আপনাদের পাশে ছিলাম, আছি এবং আগামীতেও থাকবো।

এ সময় আরো বক্তব্য দেন সিটি মেয়রের চিফ প্রশাসনিক কর্মকর্তা মীর বাশার, গ্র্যান্ড মার্শাল শাহ নেওয়াজ, বাংলাদেশের কনস্যুলেটের হেড অব চ্যান্সারি ইশরাত জাহান, বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি ও চেয়ারম্যান আতাউর রহমান সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক ও কনভেনার মোহাম্মদ আলী, চিফ অ্যাডভাইজার গিয়াস আহমেদ।

গ্র্যান্ড মার্শাল শাহ নেওয়াজ বলেন, আমরা সব সময় ভালো কাজের সঙ্গে আছি এবং আগামীতেও থাকবো। তিনি বলেন, আজকে আমরা সবাই ভিন্ন একটি দেশে আমাদের বাংলাদেশকে তুলে ধরেছি। বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং কৃষ্টি কালচার তুলে ধরেছি। তিনি বলেন, আমরা যদি সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকি তাহলে আগামী দিনে আরো বিশাল আকারে বাংলাদেশ ডে প্যারেড করতে পারবো।

চিফ অ্যাডভাইজার গিয়াস আহমেদ সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আজকে আমরা নতুন ইতিহাস তৈরি করেছি। ঐক্যবদ্ধভাবে জন্মভূমি বাংলাদেশকে তুলে ধরেছি।

চেয়ারম্যান আতাউর রহমান সেলিম বাংলাদেশ ডে প্যারেড সফল এবং সার্থক করার জন্য যারা সহযোগিতা করেছেন, অংশগ্রহণ করেছেন তাদের ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

মেম্বার সেক্রেটারি ফাহাদ সোলায়মান সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং আগামীর আয়োজনে এবারের মতো সবার সহযোগিতা কামনা করেন। যদিও আয়োজকদের সবার মুখে ছিল হাসির ঝিলিক এবং তৃপ্তি ঢেকুর। জয়তু! আয়োজকবৃন্দ।

বাংলাদেশ ডে প্যারেডে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম ফজলুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মুকিত চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান, বাংলাদেশ সোসাইটির সহ-সভাপতি কামরুজ্জামান কামরুল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম হাওলাদার, সাবেক ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য কাজী আজহারুল হক মিলন, চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সভাপতি কাজী আজম, বর্তমান সভাপতি আবু তাহের, কামাল হোসেন মিঠু, আরিফ হোসেন, আবুল কাশেম, জাহাঙ্গির সোহরাওয়ার্দি, আহসান হাবিব, জাবেদ উদ্দিন, রিজু মোহাম্মদ, আশরাফ খান লিটন, আবুল কাশেম, খলিলুর রহমান, মামুন মিয়াজি, এবি সিদ্দিক পাটোয়ারি, মঈনুজ্জামান চৌধুরী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নাঈম টুটুল, আহসান হাবিব, মফিজুল ইসলাম ভূইয়া রুমি, সৈয়দ এনায়েত আলী, ওয়াহেদ কাজী এলিন, বক্সার সেলিম, মোহাম্মদ সোহেল হোসেন, আক্তার বাবুল, ডিউক খান, আমিন মেহেদী, নওশাদ হোসেন, আব্দুর রশিদ বাবু, নূরে আলম জিকো, অরিফুর রহমান, আবুল কাশেম চৌধুরী, মজিবর রহমান, রেজওয়ান হক, লিটন আহমেদ, মাবহবুবুর রহমান, জামিল আনসারি প্রমুখ।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এরশাদুর রহমান, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট এ কে এম আলম, ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ চৌধুরী, কমিউনিটি লিয়াজোঁ সর্দার মামুন ও মিডিয়া লিয়াজোঁ জামিল সরোয়ার প্রমুখ।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)