ক্যালিফোর্নিয়ায় অবৈধ অভিবাসন দমনে নতুন পদক্ষেপ নিলো হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 14-05-2025

ক্যালিফোর্নিয়ায় অবৈধ অভিবাসন দমনে নতুন পদক্ষেপ নিলো হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ

যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে চলমান কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এবার ক্যালিফোর্নিয়ার প্রবীণ অভিবাসীদের একটি নগদ সহায়তা কর্মসূচি, ‘ক্যাশ অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রাম ফর ইমিগ্র্যান্টস’কে লক্ষ্য করে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস)। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি থেকে ২০২১ সাল থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত এই কর্মসূচির আওতায় কারা আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন, তাদের বিস্তারিত তথ্য চেয়ে নোটিশ জারি করেছে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটির তদন্ত শাখা ‘হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশনস (এইচএসআই) এই অনুসন্ধান চালাচ্ছে। তারা আবেদনকারীদের নাম, জন্মতারিখ, জমা দেওয়া আবেদনপত্রের কপি, অভিবাসন অবস্থা, সোশ্যাল সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন থেকে এসএসআই অযোগ্যতার প্রমাণ এবং আবেদনসংক্রান্ত হলফনামা সংগ্রহের জন্য নির্দেশ দিয়েছে।

ক্যাশ অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রাম ফর ইমিগ্র্যান্টস প্রোগ্রামটি এমন অভিবাসীদের জন্য, যারা বয়সে প্রবীণ, দৃষ্টিহীন বা প্রতিবন্ধী এবং যারা সম্পূরক সোশ্যাল সিকিউরিটি (এসএসআই) পেতে অযোগ্য, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে আইনগতভাবে প্রবেশ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে যারা বৈধভাবে প্রবেশ করেছেন, প্যারোলে এসেছেন, শর্তসাপেক্ষে প্রবেশাধিকার পেয়েছেন অথবা যাদের বহিষ্কার স্থগিত করা হয়েছে। আফগান এবং ইউক্রেনীয় মানবিক প্যারোলে আগতরাও এই কর্মসূচির আওতায় পড়েন। লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির ওয়েবসাইট অনুসারে, এই সহায়তা মূলত ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী, অন্ধ বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য প্রযোজ্য।

ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি জানিয়েছে, ২০২৪ অর্থবছরে ২০ লাখেরও বেশি অবৈধ অভিবাসী বেআইনিভাবে সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর পেয়েছেন। এই তথ্যের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছে, এমন অনেক অভিবাসী ক্যাশ অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রাম ফর ইমিগ্র্যান্টস কর্মসূচির সহায়তা পেতে পারেন, যারা এর জন্য যোগ্য নন। ডিএইচএস বলছে, তদন্তের লক্ষ্য হচ্ছে অবৈধ উপায়ে প্রাপ্ত সরকারি সুবিধা ও এর পেছনে কারা রয়েছেন তা চিহ্নিত করা।

এই পদক্ষেপের পেছনে রাজনৈতিক প্রভাবও স্পষ্ট। গত মাসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন, যেখানে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ব্যক্তিদের যে কোনো ধরনের আর্থিক প্রণোদনা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। আদেশে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সচিবকে শ্রম, স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগ, সোশ্যাল সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে সমন্বয় করে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।

এ প্রেক্ষাপটে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সচিব ক্রিস্টি নোম কড়া ভাষায় ক্যালিফোর্নিয়ার রাজনীতিকদের সমালোচনা করে বলেন, ক্যালিফোর্নিয়ার উদারপন্থী রাজনীতিবিদরা অবৈধ অভিবাসীদের নাগরিকদের চেয়েও বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তারা এমন ব্যক্তিদের হাতে নগদ সহায়তা তুলে দিচ্ছেন, যাদের এই দেশে থাকার বৈধ অধিকার নেই। তিনি বলেন, যদি আপনি একজন অবৈধ অভিবাসী হন, তাহলে এখনই এই দেশ ছেড়ে চলে যান। ‘ফ্রি সুবিধা’র দিন শেষ হয়েছে। এ সাবপোনা কেবল লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টিকে ঘিরে হলেও, এটি কেবল শুরু।

পাবলিক পলিসি ইনস্টিটিউট অব ক্যালিফোর্নিয়ার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি মাসে প্রায় ১১ লাখ মানুষ এসএসআই বা এসএসপির আওতায় নগদ সহায়তা পান। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী। এদের মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার বৈধ অভিবাসী রয়েছেন, যারা সামাজিক নিরাপত্তা পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত শর্ত পূরণ করতে পারেননি।

যদিও এই তদন্ত বর্তমানে শুধু লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টিতে সীমিত হলেও ফেডারেল সরকার ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছে যে, এই ধরনের নজরদারি ও আইনি পদক্ষেপ ভবিষ্যতে অন্যান্য স্টেট ও কাউন্টিতেও সম্প্রসারিত হবে। এতে স্পষ্টভাবে বোঝা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অভিবাসীদের ওপর প্রদত্ত সরকারি সহায়তা এখন সরকারের কঠোর পর্যবেক্ষণ ও অগ্রাধিকার কার্যক্রমের অংশ হয়ে উঠেছে।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)