দর্শক হল থেকে তৃপ্তি নিয়ে বের হচ্ছেন এটাই বড় প্রাপ্তি


আলমগীর কবির , আপডেট করা হয়েছে : 25-06-2025

দর্শক হল থেকে তৃপ্তি নিয়ে বের হচ্ছেন এটাই বড় প্রাপ্তি

ঈদে মুক্তি পেয়েছে তরুণ অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান-এর দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘উৎসব’। প্রথম সিনেমা ‘কাজলরেখা’ দিয়েই দর্শকের মন জয় করে নেওয়া এই অভিনেত্রী এবারও নতুন রূপে ধরা দিয়েছেন বড়পর্দায়। পাশাপাশি ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও দারুণ সরব তিনি। সিনেমা, সিরিজ, সহশিল্পী ও তার ভবিষ্যৎ ভাবনা নিয়ে কথা বলেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির 

প্রশ্ন: ঈদে মুক্তি পেয়েছে আপনার অভিনীত ‘উৎসব’। দর্শকের কেমন প্রতিক্রিয়া পাচ্ছেন?

সাদিয়া আয়মান: আমি খুবই লাকি যে, আমার প্রথম সিনেমা ‘কাজলরেখা’র মতো দ্বিতীয় সিনেমা ‘উৎসব’ও ঈদে মুক্তি পেয়েছে। দর্শক সিনেমাটি দারুণভাবে গ্রহণ করেছেন। তারা গল্পের সঙ্গে নিজেরা কানেক্ট করতে পারছেন। অনেক বছর ধরে এমন কনটেন্ট আমরা পাইনি, যেটা মানুষকে একদিকে হাসায়, অন্যদিকে আবেগও ছুঁয়ে যায়। শুটিংয়ের সময় থেকেই মনে হচ্ছিল, এই সিনেমা সবার ভালো লাগবে। এখন যখন দেখি প্রতিদিন দর্শকসংখ্যা বাড়ছে আর তারা হল থেকে তৃপ্তি নিয়ে বের হচ্ছেন-এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।

প্রশ্ন: এই সিনেমায় যুক্ত হওয়ার গল্পটা শুনতে চাই?

সাদিয়া আয়মান: গত বছরের অক্টোবরে তানিম ভাই আমাকে ফোন করেন। বললেন, তিনি হরর-কমেডি ঘরানার একটি পারিবারিক সিনেমা বানাতে যাচ্ছেন। এরপর কাস্টিংয়ের তালিকা শুনে আমি আর দ্বিতীয়বার ভাবিনি, সরাসরি কাজটির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাই। তখনো জানতাম না আমার চরিত্র কী বা স্ক্রিন টাইম কতটা। তবে চিত্রনাট্য হাতে পেয়েই খুব খুশি হই। এতো গুণী শিল্পীর মধ্যে আমার চরিত্রটিও যে গুরুত্বপূর্ণ, সেটা জেনে দারুণ লেগেছিল।

প্রশ্ন: ‘উৎসব’ নব্বইয়ের দশকের গল্প। ওই সময়ের সঙ্গে মানিয়ে নিতে কী ধরনের প্রস্তুতি নিতে হয়েছে?

সাদিয়া আয়মান: আমার আর সৌম্যর চরিত্রটি জাহিদ হাসান ও আফসানা মিমির তরুণ বয়সের রূপ। প্রথমে একটু ভয় কাজ করছিল, কারণ আমি তো ওই সময়ের মানুষ নই। কিন্তু নব্বইয়ের দশকের অনেক নাটক, সিনেমা দেখেছি, যেটা অভিনয়ে আমাকে সাহায্য করেছে। আমি আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছি চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে। জাহিদ ভাই এবং মিমি আপার প্রশংসা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। মিমি আপা তো বলেই ফেললেন, ‘তুই একদম আমার মতোই লাগছিস।’ আর জাহিদ ভাই বলেছেন, ‘আমরা আরেকজন ভালো অভিনেত্রী পাচ্ছি।’

প্রশ্ন: প্রেক্ষাগৃহের পাশাপাশি ওটিটিতেও আপনি আছেন। ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’ সিরিজ নিয়ে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

সাদিয়া আয়মান: ট্রেলার মুক্তির পর থেকেই ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’ নিয়ে দারুণ সাড়া পাচ্ছি। চরিত্রটির নাম ‘সুন্দরী’, আর এতে একটা মজার বিষয় আছে। স্ক্রিপ্টে নামটি একবার বলা ছিল, কিন্তু আমি নিজ থেকে দুইবার করে বলতে শুরু করি- ‘সুন্দরী সুন্দরী’। এখন তো এটা ট্যাগলাইন হয়ে গেছে! অনেকে আমাকে ‘আমবাগানের সুন্দরী’ বলেও ডাকছেন। এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। পুরো কৃতিত্ব নির্মাতা অমিতাভ রেজার। শুরু থেকেই আমার ওপর তার বিশ্বাস ছিল।

প্রশ্ন: মোশাররফ করিমের সঙ্গে প্রথমবার কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

সাদিয়া আয়মান: তিনি যেমন অসাধারণ অভিনেতা, তেমনি একজন অমায়িক মানুষ। আমাদের দু’জনেরই বাড়ি বরিশালে, এটা একটা বাড়তি বন্ধন তৈরি করেছে। শুটিংয়ের আগে একদিন স্ক্রিপ্ট রিডিংয়ে দেখা হয়েছিল, তখন একটু নার্ভাস ছিলাম। কিন্তু শুটিংয়ে গিয়ে দেখি, তিনি কতটা সহজ-সরল আর সহায়ক। মনে হয়নি, এটা আমাদের প্রথম কাজ।

প্রশ্ন: অনেকে মালটিকাস্টিং গল্পে কাজ করতে অনাগ্রহী। কিন্তু ‘উৎসব’ ও ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’ দুটোই মালটিকাস্ট প্রজেক্ট। আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কী?

সাদিয়া আয়মান: আমি মনে করি, একজন শিল্পীর অভিনয় ভালো হলে দর্শক তাকে খুঁজে নেবে। কে কত বড় বা ছোট চরিত্র করছেন, সেটা মুখ্য নয়। বরং, ভালো কাজ হলে সবার জায়গা হয়। মালটিকাস্টিং গল্প আমাদের দেশে কম হয়, অথচ এগুলোর মান সাধারণত অনেক ভালো হয়। কারণ এতে অনেক প্রতিভাবান শিল্পী একসঙ্গে কাজ করেন। ‘উৎসব’ ও ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’র দর্শক প্রতিক্রিয়া সেটা প্রমাণ করেছে।

প্রশ্ন: আপনার কাছে আদর্শ চরিত্র বলতে কী বোঝেন?

সাদিয়া আয়মান: আমি সব সময় এমন চরিত্রে কাজ করতে চাই, যেগুলো আমার থেকে আলাদা, আমার কমফোর্ট জোনের বাইরে। যেখানে নিজেকে ভেঙে গড়ে তুলতে হয়। এমন চরিত্রই একজন অভিনেত্রীকে সত্যিকারের শিল্পী করে তোলে। বাস্তব আর ফিকশনের মধ্যে দাঁড়িয়ে নিজের সত্তাকে খুঁজে পাওয়া-এটাই আমার কাছে আদর্শ।

প্রশ্ন: আগামী দিনে কোন ধরনের গল্প বা চরিত্রে কাজ করতে আগ্রহী?

সাদিয়া আয়মান: আমি চাই, ভিন্নধর্মী চরিত্রে নিজেকে বারবার চ্যালেঞ্জ করতে। চরিত্রটা যদি সৎভাবে লেখা হয় এবং নির্মাতার ভিশন ক্লিয়ার হয়, তাহলে সেটা ঘরানাভেদে যে কোনো কিছু হতে পারে-থ্রিলার, পিরিয়ড ড্রামা, ডার্ক কমেডি বা একেবারে নিঃশব্দ কোনো চরিত্রও। এমন কিছু করতে চাই, যেটা আমাকে অভিনেত্রী হিসেবে আরো সমৃদ্ধ করবে।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)