যুক্তরাষ্ট্রের ফিফথ সার্কিট কোর্ট অব আপিলস টেক্সাসের বিতর্কিত অভিবাসন আইন সিনেট বিল ৪ (এসবি৪)-কে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে। এই আইনের মাধ্যমে স্থানীয় পুলিশকে সন্দেহভাজন অবৈধ অভিবাসীদের আটক করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। আদালতের এই রায়ের ফলে আইনটি কার্যকর হওয়া থেকে আরো একধাপ পিছিয়ে গেল।
গত ৩ জুলাই গভীর রাতে প্রকাশিত এক রায়ে নিউ অরলিন্সভিত্তিক ফিফথ সার্কিট কোর্ট অব আপিলস কোর্টের তিন বিচারপতির একটি প্যানেল ২-১ ভোটে রায় দেয় যে, টেক্সাসের এই আইন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অভিবাসন আইনের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক এবং এটি ফেডারেল সরকারের একচ্ছত্র অধিকার লঙ্ঘন করে। রায়ে বলা হয়, প্রায় ১৫০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট বারবার স্বীকৃতি দিয়েছে, অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ যেমন প্রবেশ, অনুমোদন এবং বহিষ্কার একান্তভাবে ফেডারেল সরকারের এখতিয়ার।
২০২৩ সালে টেক্সাস স্টেটের আইনসভা এসবি৪ পাস করলে বাইডেন প্রশাসন আইনটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। টেক্সাসের ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট ফেডারেল সরকারের পক্ষে রায় দেয়। ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে টেক্সাস আপিল করে। এর মধ্যে চলতি বছরের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসন ফেডারেল সরকারের পক্ষ থেকে মামলাটি প্রত্যাহার করে নেয়। তবে মামলা চালু থাকে এল পাসো কাউন্টি এবং দুটি অভিবাসী অধিকার সংগঠন অস্টিনভিত্তিক আমেরিকান গেটওয়ে ও এল পাসোভিত্তিক লাস আমেরিকাস ইমিগ্র্যান্ট অ্যাডভোকেসি সেন্টারের মাধ্যমে। তাদের আইনগত সহায়তা দেয় টেক্সাস সিভিল রাইটস প্রজেক্ট।
এসবি৪ অনুযায়ী, যারা টেক্সাস-মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে আনুষ্ঠানিক পয়েন্ট ছাড়াই প্রবেশ করেন, তাদের বিরুদ্ধে অঙ্গরাজ্যের আইনে অপরাধ হিসেবে মামলা করা যাবে। প্রথমবার অপরাধ প্রমাণিত হলে একজন অভিবাসী ক্লাস বি মিসডিমিনরের আওতায় সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড পেতে পারেন। পরবর্তী সময়ে একই অপরাধ করলে সেকেন্ড ডিগ্রি ফেলনির আওতায় ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
আইনে আরো বলা হয়, যদি কোনো অভিবাসী দণ্ডপ্রাপ্ত হন এবং সাজা ভোগ করেন, তবে বিচারককে তাকে সীমান্তের একটি পয়েন্টে ফিরিয়ে পাঠাতে হবে। তবে যদি অভিযুক্ত ব্যক্তি স্বেচ্ছায় মেক্সিকোতে ফিরে যেতে সম্মত হন, সেক্ষেত্রে বিচারক অভিযোগ প্রত্যাহার করতে পারেন।
আদালতের সর্বশেষ রায়ের ফলে টেক্সাসে অভিবাসীদের আটক ও বহিষ্কারের ক্ষমতা ফেডারেল সরকারের হাতেই থাকছে বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিবাসন নীতি নিয়ে রাজ্য ও ফেডারেল সরকারের চলমান দ্বন্দ্বে এই রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।