কনস্যুলেটে মাস্তানি, গা ঢাকা দিয়েছে অনেকে


দেশ রিপোর্ট , আপডেট করা হয়েছে : 03-09-2025

কনস্যুলেটে মাস্তানি, গা ঢাকা দিয়েছে অনেকে

তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটে আগমকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠন গত ২৪ আগস্ট প্রতিবাদ সমবেশের আয়োজন করে। যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি দেশ যেখানে সবার অধিকার রয়েছে প্রতিবাদ করার। প্রতিবাদ করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অর্থাৎ স্থানীয় প্রিসেক্ট অনুমতি দিয়ে থাকে। এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ প্রতিবাদ সমাবেশ করার অনুমতি নিয়েছিল কি না? দ্বিতীয়ত যদি অনুমতি নিয়ে থাকে তাহলে প্রতিবাদ সমাবেশ করার স্থান কোথায় ছিল? তৃতীয়ত, প্রতিবাদ সমাবেশ করার কথা ছিল মাস্তানি বা গুন্ডামি করার কথা ছিল না। বাংলাদেশি স্টাইলে মাস্তানি বা গুন্ডামি করতে গিয়ে বর্তমানে বেকায়দায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। অভিযোগ রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে শুধু অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেই থামেনি। রীতিমত আক্রমণ করতে তেড়ে গিয়েছিল। তার ওপর ডিম নিক্ষেপ করেছে, পাথর পর্যন্ত ছুড়ে মেরেছিল। বাংলাদেশি স্টাইলে মাস্তানি বা গুন্ডামি করতে গিয়ে লাথি মেরে কনস্যুলেটের দরজা ভেঙে ফেলে। এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। অন্য আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, নিউইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটন যাবার পথে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের গাড়িকেও ফলো করা হয়। কয়েক মাইল তার গাড়ি ফলো করা হয়। একবার সামনে, আবার পেছনে আবার কখনো পাশাপাশি গাড়ি চালানো হয়। কী কারণে তথ্য উপদেষ্টার গাড়ি ফলো করা হয়েছে তা নিয়েও রহস্য দেখা দিয়েছে। ওইদিন বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে তার কয়েক মিনিটের মধ্যেই উপদেষ্টার গাড়ির পাশে আসেন। উপদেষ্টার গাড়ির পাশে পুলিশের গাড়ি আসার পর তথ্য উপদেষ্টাকে ফলো করা গাড়িটি চলে যায়। এরপর তথ্য উপদেষ্টা নিরাপদে ওয়াশিংটনে পৌঁছান।

কনস্যুলেটে হামলা, দরজা ভাঙচুর, অন্যের সম্পত্তিকে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ, সর্বোপরি তথ্য উপদেষ্টার গাড়ি ফলো করার বিষয়টি নিয়ে নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট, ওয়াশিংটন বাংলাদেশ দূতাবাস বিষয়টি স্টেট ডিপার্টমেন্ট, নিউইয়র্ক পুলিশ, নিউইয়র্ক মেয়র অফিস, ঢাকায় বাংলাদেশ দূতাবাসে বিষয়টি জানানো হয়। নিউইয়র্ক সূত্রে জানা গেছে, এ ন্যক্কারজনক ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছে। বিশেষ করে যারা গুন্ডামি এবং মাস্তানি করেছে তাদের নাম এবং ভিডিও ফুটেজ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই আমেরিকান আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি সিরিয়াসলি নিয়েছে এবং তারা দোষীদের গ্রেফতার করে শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আমেরিকায় মাস্তানি বা গুন্ডামি করে পার পাওয়ার কোনো জায়গা নেই। অপরাধীদের অবশ্যই আইনের হাতে ধরা পড়তে হবে। তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন। অতিদ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দেন তারা। বিশেষ করে কনস্যুলেটে হামলা এবং তথ্য উপদেষ্টাকে ফলো করা ভয়ঙ্কর অপরাধ। আমেরিকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব অন্য দেশের কনস্যুলেটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সেখানে উপদেষ্টাকে টার্গেট করা ভয়ঙ্কর ব্যাপার। রাষ্ট্রবাদী মামলা, যে কারণে আমেরিকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর।

অন্যদিকে এই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী গা ঢাকা দিয়েছেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের একটি অনুষ্ঠান ডাকা হয়েছিল বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটস এলাকায়। দেখা গেছে, কয়েক জন নিম্নমধ্যম সারির নেতা ছিলেন। শীর্ষ নেতারা ছিলেন অনুপস্থিত। মঞ্চে ছিলেন কয়েকজন। দর্শকসারির চেয়ারগুলো ছিল খালি। জানা গেছে, এই ঘটনায় অনেকেই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। বিশেষ করে যাদের কাগজপত্র নেই। অন্যদিকে ট্রাম্প প্রশাসনে কঠোর নীতির বলিও হতে পারেন কেউ কেউ। আরেক সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি যারা মাস্তানি করেছে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে তাদের নামও দেওয়া হয়েছে।


প্রকাশক: মঞ্জুর হোসেন

সম্পাদক: মিজানুর রহমান

House : 29, Road : 01 Sector : 02, Block :F Aftabnagar, Dhaka:1212 (Opposite China Building) E-mail : deshusdhaka@gmail.com (Advertising & News For Bangladesh)