মিশিগানের ওয়ারেন শহরে অবস্থিত ইসলামিক অর্গানাইজেশন অব নর্থ আমেরিকা (আইওএনএ) মসজিদে ৭ সেপ্টেম্বর রাত থেকে ৮ সেপ্টেম্বর রোববার ভোরের মধ্যে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। অজ্ঞাত ব্যক্তিরা মসজিদের দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত করে, জানালা ভেঙ্গে ফেলে এবং সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও মেঝেতে স্প্রে-পেইন্ট করে অস্পষ্ট শব্দ লিখে যায়। মসজিদ কর্তৃপক্ষ এ ঘটনাকে সম্ভাব্য ঘৃণাজনিত অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং পুলিশের কাছে সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
আইওএনএ’র প্রেসিডেন্ট স্টিভ এলটার্ক জানান, ভাঙচুরকারীরা ১০ হাজার বর্গফুট সম্প্রসারণ প্রকল্পের যন্ত্রপাতির মধ্যে একটি ক্যাটারপিলার মেশিনে “গে” শব্দ এবং নির্মাণাধীন ভবনের মেঝেতে “লাভ” শব্দ স্প্রে-পেইন্ট করে যায়। এ ছাড়া দেয়ালে আঘাত করা হয় এবং কাঁচের জানালা ভেঙ্গে ফেলা হয়। তিনি বলেন, হঠাৎ মনে প্রশ্ন জাগে, এটা কি মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতির কারণে, নাকি পক্ষপাতদুষ্ট গণমাধ্যমের প্রভাবে কিছু মানুষের অজ্ঞতাজনিত কর্মকাণ্ড? আমি নিশ্চিত নই, তবে পুলিশকে অবশ্যই সম্ভাব্য ঘৃণাজনিত অপরাধ হিসেবে তদন্ত করতে হবে।
ওয়ারেন পুলিশ নিশ্চিত করেছে, গোয়েন্দা বিভাগ ইতোমধ্যে এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে। অপরাধীরা শনিবার গভীর রাত থেকে রোববার ভোরের মধ্যে মসজিদে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে মুসলিম অধিকার সংগঠন কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনসের (কেয়ার-মিশিগান) পক্ষ থেকে অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও দোষী সাব্যস্ত করতে সহায়ক তথ্যের জন্য এক হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
কেয়ার-মিশিগানের নির্বাহী পরিচালক এবং আইওএনএ মসজিদের নিয়মিত ইমাম দাউদ ওয়ালিদ বলেন, ঘটনাটি সরাসরি ইসলামবিদ্বেষী বার্তা বহন না করলেও এটি উদ্বেগজনক। কারণ এর আগে এই মসজিদ একাধিকবার ভাঙচুর ও হুমকির শিকার হয়েছে। মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজে ব্যবহৃত নিরাপত্তা ক্যামেরা সাময়িকভাবে সরানো হয়েছিল, যার সুযোগ নিয়ে অপরাধীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে এ ঘটনার পর আবারও নতুন নিরাপত্তা ক্যামেরা বসানোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েক হাজার ডলার হলেও মসজিদ নেতাদের প্রধান উদ্বেগ হলো এটি ঘৃণাভিত্তিক অপরাধ কিনা।
প্রসঙ্গত, আইওএনএ মসজিদটি প্রায় ২০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এটি ছিল ওয়ারেন শহরের প্রথম মসজিদ। প্রতিষ্ঠার সময় মসজিদটিকে নিয়ে ব্যাপক বিরোধিতা হয়েছিল। দীর্ঘদিন অপেক্ষাকৃত শান্ত পরিস্থিতি বজায় থাকলেও হঠাৎ এ ভাঙচুরের ঘটনা স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ ও আতঙ্ক তৈরি করেছে।