১৫ অক্টোবর ২০১২, মঙ্গলবার, ০৯:৬:০৪ অপরাহ্ন


বিশ্বকোপের মঞ্চেও কী পরীক্ষা নীরিক্ষা চলবে?
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-১০-২০২৩
বিশ্বকোপের মঞ্চেও কী পরীক্ষা নীরিক্ষা চলবে? সাকিব! সবে মাঠে নেমেছেন। ৯ বল খেলে ১ রান করেই আউট। এরমাঝে আবার কিছুক্ষন করেছেন ব্যাট রিপিয়ারিং/ছবি সংগৃহীত


অতীতে কি কোথায় কখন হয়েছে বলা অবান্তর। বর্তমান বাস্তবতায় ক্ষয়িষ্ণু বাংলাদেশ ক্রিকেট দল কি বিশ্বকাপের মত আসরে তুখোড় ইংল্যান্ডের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার করার যোগ্য? এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ একমাত্র দল যাদের এখনো কোনো স্থির ব্যাটিং অর্ডার নেই। বোলিংয়েও নেই ছন্দ।  যখন যাকে খুশি নামানো হচ্ছে। করতে দেয়া হয় বোলিং। প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানের দুর্বলতা কী, সেখানে মাঠ অনুসারে কাকে দিয়ে বল করালে অ্যাফেক্টিভ হবে সে গবেষনা আছে কী। টিম পরিকল্পনায় তো তার ছিটেফোটাও দেখা গেল না। যেখানে মন চায় তাকে দিয়ে বোলিং, যেখানে খুশী সেখানেই ব্যাটিং করানো হচ্ছে যাকে খুশী তাকে। যা মোটামুটি বলা যায় বিশ্বকাপের আসরও বাংলাদেশের পরীক্ষা নীরিক্ষার আসর কোচ হাতুরাসিংহ ও বিসিবি টিম ম্যানেজম্যান্টের। কদিন আগে ভারতের অধিনায়ক সুরেশ রায়না যা  বলেছিলেন তার মুল মর্ম, নাম্বার ৭ ও ৮ এর ব্যাটসম্যানকে তো ওপেনিংয়ে বা টপ অর্ডারে নামিয়ে দেয়া যায় না? কিন্তু বাংলাদেশ দলে এখন তাই হচ্ছে। এভাবে  অপরিকল্পিত দল দিয়ে দু’একটি সফলতা কাকতালীয় চলে আসে। ধারাবাহিক নয়। বিশ্বকাপের মঞ্চে যা রীতিমত বেমানান!

টিমে দেখা গেল, কারোরই ঠিক নেই ব্যাটিং অর্ডার। যাচ্ছে তা। যখন যেখানে যাকে খুশী দ্বায়িত্ব দিয়ে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।  তামিম ইকবালের মত বিশ্ব মানের অভিজ্ঞ ওপেনিং ব্যাটসম্যানকে ষড়যন্ত্র করে দেশে রেখে দল গেছে। ১৫ জনের দলে ৫ জন পেসার , সাকিব ,মিরাজ , মাহমুদুল্লাহ তিন জন অল রাউন্ডার , দুই জন স্পিনার আর মাত্র ৫ জন ব্যাটসম্যান যেখানে তানজিদ তামিম, তাওহীদ হৃদয় আনকোরা নবীন। টিম ম্যানেজমেন্ট অনেকটা চাপে পরে দলে নিয়েছে রিয়াদকে। নিতান্ত অপারগ না হলে খেলানো হবে না। কিন্তু এ তরুনদের কী ইংল্যান্ডের মত প্রফেশনাল ক্রিকেটারদের মোকাবেলার অভিজ্ঞতা আছে। থাকলেও সেটা কতটুকু। এগুলোর তো মুল্যায়ন প্রয়োজন। তা হয়নি।


এ ম্যাচে কি টস জয় করে বাংলাদেশ তেতে থাকা ইংল্যান্ডকে ব্যাটিং করতে দেয়া সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল? যতই বলি বাংলাদেশের পেস বোলিং এখন সমৃদ্ধ ওরা কি ইংল্যান্ডের তুখোঁড় ব্যাটিং তান্ডব চালিয়ে ধসিয়ে দেয়ার শক্তি রাখে? বাংলাদেশ চাপ মুক্ত হয়ে ব্যাটিং করে ২৬০-২৭০ করে যুদ্ধ করলে ভালো হত না? উইকেটে বাউন্স ছিল ,টার্ন ছিল। কিন্তু মালান, বেয়ারস্ট ,রুটের সংহারী বাটিংয়ে বোলিং এলোমেলো হয়ে গেলো। ৩০০ রানের গন্ডি পেরিয়ে যেতেই ম্যাচটি হাত ছাড়া হয়ে গিয়েছিলো। আর ৩৬৫ রান তারা করে জয় স্বপ্নেরও অতীত। এতো কিছু পরেও কাল দেখেন মূল পেসার তাসকিন মাত্র ছয় ওভার বোলিং করেছে।
নড়বড়ে টপ অর্ডার তাসের ঘর ,বালুর বাঁধের মতোই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়লো রিস টোপলির গতি আর মুভমেন্টের কাছে। জুনিয়র তামিম, শান্ত ,সাকিব, মেরাজ কেউ হালে পানি পেলো না। লিটন ,মুশফিক ভালো ব্যাট করলেও সম্মানজনক পরাজয়ও তখন আয়ত্তের বাইরে। যা বললাম সেগুলি না হলেই যেই ভিন্ন কিছু হত বলছি না।


বাংলাদেশের মানুষ আবেগী জাতি।  আবেগের বসে ক্রিকেট নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখি।  আসলেও কি ভেবে দেখেছি আমরা বিশ্ব মঞ্চে বড় দলগুলোকে নিয়মিত হারানোর মত শক্তি রাখি কিনা? যদি কোনো দল কোনো দিন খুব খারাপ খেলে তবেই আমরা কালে ভদ্রে জয়ী হই।  আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে কয়টি ম্যাচে ৩০০ রান নিয়মিত তাড়া করে প্রতিপক্ষ ম্যাচ জয় করে?
সব কিছু বাদ নিয়ে কোন দেশের ক্রিকেটে ব্যাক্তি বিদ্বেষ বা ব্যাক্তি পূজা আছে? কোন দেশের ক্রিকেটে প্রশাসকদের হাম বড়া  সবজান্তা ভাব আছে?  যেভাবে ক্রিকেট চলছে একটা ঝড় এসে লন্ড ভন্ড না হলে পরিণতি ভয়াবহ।

শেয়ার করুন