২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ৬:০৯:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির তিন নেতা কেন্দ্রীয় কমিটিতে : স্বস্তি-সন্তোষ, কমিটি নিয়ে প্রতিশ্রুতি
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০৩-২০২৩
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির তিন নেতা কেন্দ্রীয় কমিটিতে : স্বস্তি-সন্তোষ, কমিটি নিয়ে প্রতিশ্রুতি জিল্লুর রহমান জিল্লু, গিয়াস আহমেদ ও মিজানুর রহমান মিল্টন ভূইয়া


যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির শীর্ষ তিন নেতাকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির এই তিন নেতাকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে নেয়ায় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের মধ্যে স্বস্তি এবং সন্তোষ ফিরে এসেছে। তাদের তিন নেতাকে মূল্যায়ন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতাকর্মী এবং সমর্থকরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে তারা ধন্যবাদ জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির যে তিন শীর্ষনেতাকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে নেয়া হয়েছে তারা হলেনÑযুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি গিয়াস আহমেদ এবং যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী কমিটির সদস্য সচিব মিজানুর রহমান মিল্টন ভুইয়া।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির পাঁচ শীর্ষনেতা- জিল্লুর রহমান জিল্লু, গিয়াস আহমেদ, মিজানুর রহমান মিল্টন ভুইয়া, যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা দলের প্রেসিডেন্ট আলহাজ বাবর উদ্দিন এবং স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন সবুজ গত ২৬ ফেব্রুয়ারি লন্ডনের উদ্দেশ্যে নিউইয়র্ক ত্যাগ করেন। পর দিন অর্থাৎ ২৭ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ জসীম ভুইয়াও লন্ডন যান। সবমিলিয়ে ৬ জন নেতা ভারপ্রাপ্ত তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ১ মার্চ বুধবার। বৈঠকে তারেক রহমান যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, অনুযোগ এবং ক্ষোভের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন। বিশেষ করে তাদের ক্ষোভ ছিল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহআন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আনোয়ার হোসেন খোকনের বিরুদ্ধে। দায়িত্ব পেয়েই আনোয়ার হোসেন খোকন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতাকর্মীদের বিভক্তি এবং অনৈক্য সৃষ্টি করেন। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির শীর্ষনেতাদের অবমূল্যান শুরু করেন। যারা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, দলের জন্য সময় দিয়েছেন, অর্থ দিয়েছেন, আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন বছরের পর বছর তাদেরকেই সাপের সাত পা দেখাতে শুরু করেন। তার কর্মকা-ে মনে হয়েছে এই সব শীর্ষনেতা যেন দলের উচ্ছিষ্ট। অস্বীকার করা হয় তাদের কর্মকা-কে। এমনও অভিযোগ রয়েছে, শীর্ষনেতারা যদি কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন, সেখানে আনোয়ার হোসেন খোকন কর্তৃক গঠিত অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে যেতে বারণ করতেন। তাদের ব্যানারে কোনো সংগঠনের নাম ব্যবহার করা হলে তা তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিতেন। তার নির্দেশে পাল্টাপাল্টি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। যার নিয়ে সর্বত্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সেই ক্ষোভের কারণেই মূলত যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির শীর্ষনেতারা কোনো উপায়ান্তর না দেখে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের শরণাপন্ন হন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করার জন্য লবিং করেন। অবশেষে তারা সফল হন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার নেতাদের অতীত কর্মকাণ্ড এবং বিএনপির প্রতি তাদের কমিটমেন্টের কথা চিন্তা করেই তাদের আমন্ত্রণ জানান। তাদের সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেন। তাদের ক্ষোভ এবং অভিমানের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন। একটি সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নিয়ে আনোয়ার হোসেন খোকনের কর্মকাণ্ডে তারেক রহমান অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বিএনপির শীর্ষনেতাদের আশ্বস্ত করেন যে, তিনিই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। অন্যদিকে নেতার আশ্বাসে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতারাও সন্তুষ্টি এবং নেতার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন।

আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে তারেক রহমানকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তারেক রহমানের পরিষ্কার উত্তর ছিল- আমি তো কখনো বলিনি, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি দেবো না। সময় এবং সুযোগ বুঝেই যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি দেয়া হবে। তিনি বোঝেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটির গুরুত্ব কতটুকু। জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি এবং শীর্ষনেতাদের মূল্যায়নের দায়িত্ব তারেক রহমানের হাতেই তারা ছেড়ে দেন। তারা বলেছেন, তারেক রহমান যাদের নিয়ে কমিটি দেবেন তাদেরকেই তারা মেনে নেবেন এবং তাদের নেতৃত্বে কাজ করবেন। তাদের কথা তারেক রহমান রেখেছেন। তিনি কোনো সময়ক্ষেপণ করেননি। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির শীর্ষনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করার পর দিনই তারেক রহমান বিএনপির শীর্ষ তিন নেতাকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনোনীত করেন। তারা লন্ডন থাকা অবস্থাতেই বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স স্বাক্ষরিত পত্র পেয়ে যান। এটা ছিল যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতাদের জন্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের গিফট। এই গিফট যে তারা এত দ্রুত পাবেন তা কখনো চিন্তা করেননি।

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির শীর্ষ তিন নেতাকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনোনীত করায় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। তারা এর জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানান। আনন্দের সঙ্গে তারা বলেন, দলের জন্য কাজ করলে সেই কাজ ব্যর্থ যায় না, তাদের মূল্যায়ন করা হয়। তার জ্বলন্ত উদাহরণ দিলেন তাদের প্রিয় নেতা তারেক রহমান। এই তিন নেতা আগামী ৬ মার্চ রাতে নিউইয়র্ক ফিরে আসছেন। তাদের ঐ দিন রাতের কর্মী এবং সমর্থকরা ফুলেল অভিনন্দন জানাতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যদিও এদের মধ্যে গিয়াস আহমেদ পরে আসবেন। তিনি লন্ডন থেকে দুবাই গিয়েছেন বলে জানা গেছে।

বিএনপির শীর্ষ তিন নেতাকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে নেয়ার কারণে নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের মধ্যে বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে এখন কারা যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতৃত্বে আসছেন? জানা গেছে, খুব কম সময়ের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি আসছে। এই তিন শীর্ষনেতাকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে নেয়ায় অনেকেই খুশি হয়েছেন। তাদের স্বপ্ন হচ্ছে তাদের পথ পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। যারা স্বপ্ন দেখছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির তিন নেতা ছিল তাদের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পথে বাধা তাদের মধ্যেই খুশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। কিন্তু অন্যরকম ইতিহাসও রয়েছে যুক্তরাজ্য বিএনপির কমিটির ক্ষেত্রে। সেই ক্ষেত্রে তাদের স্বপ্ন ভঙ্গের সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও সবকিছু নির্ভর করছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর।

শেয়ার করুন