নিউইয়র্ক সিটির স্কুল এলাকার ছাত্রছাত্রী ও পথচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নেওয়া স্পিড ক্যামেরা কর্মসূচির মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। স্টেট গভর্নর ক্যাথি হোকুল স্বাক্ষরিত নতুন আইন এর ফলে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তিনির্ভর এই উদ্যোগ আগামী ছয় বছর পর্যন্ত বহাল থাকবে, যা দুর্ঘটনা হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই নতুন আইনের ফলে ২০১৩ সালে প্রথম চালু হওয়া নিউইয়র্ক সিটির স্কুল জোনে স্বয়ংক্রিয় গতি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি নবায়ন হয়েছে এবং কয়েকটি পুরোনো ও অপ্রাসঙ্গিক ধারা বাতিল করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী, স্কুলের আশপাশের রাস্তায় স্পিড ক্যামেরা বসানো হলে সেসব এলাকায় গাড়ির গতি লঙ্ঘনের হার ৯৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। সেই সঙ্গে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু ও আহতের হার ১৪ শতাংশ কমেছে।
গভর্নর হোকুল বলেন, স্পিড ক্যামেরা জীবন বাঁচায় এবং নিউইয়র্কবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। শিশু থেকে শুরু করে বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক ও সাইকেল চালকদের পথচলাকে নিরাপদ করতে এই কর্মসূচি অব্যাহত রাখা জরুরি। তিনি আরো জানান, পথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করাকে তার প্রশাসনের শীর্ষ অগ্রাধিকার হিসেবে দেখা হচ্ছে। নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর অ্যান্ড্রু গোনার্ডেস এই আইনের প্রশংসা করে বলেন, স্পিডিং মানুষকে মেরে ফেলে, আর স্পিড ক্যামেরা জীবনরক্ষা করে। এটা এখন তথ্যভিত্তিক প্রমাণিত বাস্তবতা। স্পিড ক্যামেরা থাকা মানেই গাড়িচালক গতি কমিয়ে চালান। তিনি এই আইন পাস হওয়ায় গভর্নর ও সংশ্লিষ্ট পক্ষদের ধন্যবাদ জানান। অন্যদিকে অ্যাসেম্বলি সদস্য দেবোরা গ্লিক বলেন, স্কুলের আশপাশে গাড়ির গতি কমাতে ও দুর্ঘটনা হ্রাস করতে এই কর্মসূচি দারুণ সফল হয়েছে। আমি গর্বিত এই আইনটির পুনঃনবায়নে ভূমিকা রাখতে পেরে।
২০২২ সালে গভর্নর হোকুল এই কর্মসূচির আওতা বিস্তৃত করে ২৪ ঘণ্টা ও সপ্তাহের সাতদিন ক্যামেরা চালু রাখার অনুমতি দিয়েছিলেন। এর ফলে রাত ও সপ্তাহান্তে দুর্ঘটনার হার ৮ শতাংশ কমে এসেছে। বর্তমানে নিউইয়র্ক সিটির পাঁচটি বরোতে ২ হাজার ৪০০টিরও বেশি স্পিড ক্যামেরা সক্রিয় রয়েছে। এছাড়া ২০২৪ সালে গভর্নর হোকুল স্বাক্ষরিত স্যামির আইন সিটি প্রশাসনকে গতিসীমা ২০ মাইলে নামিয়ে আনার ক্ষমতা দিয়েছে, যা পথচারী দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। এছাড়া তিনি নিউইয়র্ক শহরসহ রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে রেড লাইট ক্যামেরা প্রোগ্রাম সম্প্রসারণ এবং নতুন কর্মসূচি চালুর মাধ্যমে সড়ক নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন।
সাম্প্রতিক বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে ওয়ার্ক জোন স্পিড এনফোর্সমেন্ট প্রোগ্রামের মেয়াদ ২০৩১ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে এবং এর আওতায় এখন এমটিএ ব্রিজ, টানেল এবং স্টেট ব্রিজ অথরিটি এলাকাও যুক্ত হয়েছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থের একটি বড় অংশ ওয়ার্ক জোন নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ এবং জনসচেতনতামূলক প্রচারে ব্যয় করা হচ্ছে। নিউইয়র্ক স্টেটের পথনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রযুক্তি ব্যবহার এবং তথ্যনির্ভর পদক্ষেপ গ্রহণের যে ধারা গভর্নর হোকুল চালু রেখেছেন, এই আইনের মাধ্যমে তার আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ সম্পন্ন হলো বলে মনে করছেন ট্রাফিক সেফটি বিশ্লেষকরা।