২০ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০১:১৬:৪১ অপরাহ্ন


আদালত প্রাঙ্গন থেকে দুই মৃতুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিনতাই
দেশজুড়ে রেড অ্যালার্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-১১-২০২২
দেশজুড়ে রেড অ্যালার্ট দ্বায়িত্ব পালনরত পুলিশ এর কয়েকজন সদস্য /ফাইল ছবি


দেশজুড়ে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, দুই জঙ্গিকে ধরিয়ে দিতে পারলে দশ লাখ করে ২০ লাখ টাকা পুরুস্কারও দেয়া হবে। আজ রোববার বিকেলে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। 

ঢাকার সিজেএম আদালত থেকে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয়া হয়। রোববার দুপুরে রাজধানী ঢাকার রায়সাহেব বাজার মোড় সংলগ্ন ঢাকার সিজেএম আদালত ফটকের সামনে ওই দুই মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির ও মো: আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে সহযোগীরা ছিনিয়ে নেন।


এ ঘটনার পর ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মাদ হারুন অর রশীদ বলেন, দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির ও মো: আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে ছিনিয়ে নিয়েছে। একটি মামলায় শুনানি শেষে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে দুই জঙ্গির সহযোগীরা হাজতখানা পুলিশের চোখে স্প্রে ছিটিয়ে, কিলঘুষি মেরে মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির ও মো: আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে ছিনিয়ে নেন। এরপর তারা দুটি মোটর সাইকেলে রায়সাহেব বাজার মোড়ের দিকে পালিয়ে যান। 

উল্লেখ্য, পালিয়ে যাওয়া দুই জঙ্গি জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। সবাইকে সাবধানে থাকতে বলা হয়েছে। আদালত প্রাঙ্গন থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, কয়েকজন জঙ্গি যাদের আমরা গ্রেপ্তার করেছিলাম। আমি যতটুকু জানি আদালত তাদের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন। এতে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের দুজন ছিল। একজন আবু সিদ্দিক ওরফে সোহেল ওরফে শাকিল অন্যজন মাইনুল হাসান শামিম দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তাদের নিয়ে এসে কোর্ট হাজতে রাখা হয়। বিচারকের সামনে হাজির শেষে আবার যখন তাদের নির্দিষ্ট রুমে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের কেমিক্যাল ছিটিয়ে  অজ্ঞান করে কয়েকজন সমর্থক তাদের নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আমরা রেলে রেড অ্যালার্ট জারি করেছি। আমাদের পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজছে তাদের। ধরতে পারবো বলে আমরা বিশ্বাস করি। তিনি আরো বলেন, কি স্প্রে দিয়েছে কী করেছে, সবগুলো বিষয় বলতে আমাদের একটু সময় লাগবে। তদন্ত করে আমরা বলব। মন্ত্রী বলেন, আমরা বর্ডার এলাকায় গুলোতে বলে দিয়েছি, তারা যেন আমাদের দেশ থেকে পালিয়ে যেতে না পারে। এই ঘটনাটি দুঃখজনক। এতে যদি কারো গাফিলতি থাকে, যদি ইচ্ছা করে এই কাজটি করে থাকেন, তার উপযুক্ত ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করব। নিশ্চয়ই আমরা তদন্ত কমিটি করব। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

 উল্লেখ্য,  ২০১৫ সনের ৩১ অক্টোবর আজিজ সুপার মার্কেটে নিজের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান জাগৃতির কার্যালয়ে হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিলেন প্রকাশক দীপন। এ মামলায় মৃত্যুদন্ড পাওয়া আসামীরা হলেন, বরখাস্ত হওয়া মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া, আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরঢে আব্দুল্লাহ। মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান, আবদুর সবুর সামাদ ওরফে সুজন ওরফে রাজু, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল ওরফে জিসান, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার ও শেখ আবদুল্লাহ ওরফে জুবায়ের ওরফে জায়েদ ওরফে জাবেদ ওরফে আবু ওমায়ে।  


গত ১০ ফেব্রুয়ারি মামলার রায়ে আসামিদের সবার মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন আদালত। 


শেয়ার করুন