২৯ মার্চ ২০১২, শুক্রবার, ০৩:১৪:৩৪ অপরাহ্ন


ইনু সাহেবরা লুটেরাদের সঙ্গে ১৪ দল করছেন
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-১১-২০২২
ইনু সাহেবরা লুটেরাদের সঙ্গে ১৪ দল করছেন


বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার দায় জাসদের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে। এই অপবাদ নিয়ে এখনো কিভাবে ইনু সাহেবরা (সাবেক তথ্যমন্ত্রী জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি) সাম্প্রদায়িকতা বান্ধব লুটেরাদের সংগে ১৪ দল করছেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। তিনি ইনুর জাসদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, ১৪ দল ছেড়ে আসেন, আমরা ঐক্যের আলোচনা করব।  

বাংলাদেশ জাসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত পুনর্মিলনী ও আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।  জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে গত রবিবার দলীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ নুরুল আম্বিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় এ আলোচনা সভা। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জাসদ সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. মুশতাক হোসেন, বাংলাদেশের জাতীয় শ্রমিক জোট সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ কাদের হাওলাদার, এ্যাড. কাজী সদরুল হক সুধা, বাহারুল ইসলাম সবুজ, মাহবুবুর রহমান মাহবুব, মোঃ আব্দুল্লাহ, কবি মোহন রায়হান প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করিম সিকদার ও মনজুর আহমেদ মনজু।

শরীফ নুরুল আম্বিয়া এতে আরো বলেন, জাসদ এক বিপ্লব, বিদ্রোহ ও সাহসী মানুষদের সংগঠন। এখানে উপস্থিত সকলেই বর্তমান বা অতীতের কোন না কোন সময়ে সংগ্রামে যুক্ত ছিলেন।  উপস্থিত অতিথিদের স্মৃতিচারণ ও অভিজ্ঞতা শুনতে চাই।  বিশ্বাস, তাদের কথায় আমরা দল পুনর্গঠনের কিছু উপাদান খুঁজে পাব।  প্রতিষ্ঠাকালে অনেক বামপন্থিরা জাসদ গঠনকে হঠকারী কাজ বলত। আর আওয়ামী লীগ আমাদের মৌলিক অধিকারের তোয়াক্কা না করে হামলা করত, জেল জুলুম হত্যা ছিল নৈমিত্তিক। আওয়ামী লীগ এর মৌখিক আক্রমণ এখনো চলছে। তিনি আরো বলেন, জাসদ এর যাত্রা হয়েছিল সশস্ত্র যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে।  আমাদের স্বপ্ন ছিল আকাশছোঁয়া, যা বাস্তবায়িত হয়নি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমাদের অনেক অবদান আছে, তবে সাফল্য সীমিত।  সফলতার লক্ষে এখন কাজ করতে হবে।  যারা ক্ষমতায় ছিল বা আছে তাদের ব্যক্তিগত লাভ হয়েছে, আওয়ামী লীগ বিএনপি ক্ষমতায় গিয়েছে, কিন্তু দেশের মানুষের কর্মসংস্থান হয়নি।  দেশের মানুষ ইতিমধ্যে অনেক পথ পাড়ি দিয়েছে। 

অর্থনীতি অগ্রসর হয়েছে, তবে সরকারের উন্নয়ন ফিরিস্তিতে গলদ আছে।  যেমন ঢাকঢোল, তেমন উন্নয়ন হয়নি, রাজনীতির স্থিতিশীলতা আসেনি, গৌরবময় গণতান্ত্রিক সংগ্রাম আছে, কিন্তু গণতন্ত্র চর্চায় নেই, সমাজ পশ্চাদমুখী হয়েছে।  রাজনীতিতে ধর্ম চর্চা বেড়েছে, উগ্র মৌলবাদীদের মাঝে মাঝে দেখা যায়, তাদের চালায় কে তা খুঁজে দেখতে হবে। বিশ্বে সমাজতন্ত্রের আইকন ভেংগে পড়েছে।  এক নতুন বিশ্ব পরিস্থিতিতে আমাদের স্বাধীনতা সুরক্ষা, গণতন্ত্র চর্চা করা, টেকসই উন্নয়নের পথ অনুসরণ করা, শোষনমুক্ত সমাজ গড়ে তোলার পথ নির্মাণ, ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহার বন্ধ করার মাধ্যমে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণ করা আমাদের কাজ।  বর্তমানে বিশ্বে যেভাবে যুদ্ধ বিস্তৃত হচ্ছে, অশান্তি ও অনিশ্চয়তা বেড়ে চলেছে, তাতে লক্ষ অর্জনের পথ অনুসন্ধানের জটিল করবে। তবে আমাদের সাহসী সৃষ্টিশীল জাতি সে সমস্যা সমাধানে সফল হবে এটা বিশ্বাস করি। দেশে বর্তমানে রাজনৈতিক সংকট রয়েছে। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ঐক্যমত্য নেই। ২০১৮ সনের মত প্রতারনামূলক নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। গোঁয়ার্তুমি করে সরকার সংঘাতের পথ অনুসরণ করলে তা ষড়যন্ত্রের পথ উম্মুক্ত করবে। আমরা আশা করব সরকার সে পথ থেকে সরে এসে আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসন করবেন। রাজনীতিতে ধর্মব্যবসায়ীদের প্রভাব বেড়েছে। দুর্নীতি ও লুন্ঠনতন্ত্র বান্ধব নেতৃত্ব দিয়ে সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। 

এ সময় দলের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, বৈশ্বিক সঙ্কট,  অর্থনৈতিক সঙ্কট, সাম্প্রদায়িকতার সঙ্কট, বৈদেশিক চাপ মোকাবেলায় জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।  আর ঐক্যবদ্ধ জাতির মূল ভিত্তি  হচ্ছে গণতন্ত্র। দেশকে গণতন্ত্রের পথে চলতে দিতে হবে। মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার ঐক্যবদ্ধ লড়াই করতে হবে।

শেয়ার করুন