২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৩:১৮:৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


টেক্সাসে নিজ গ্যারেজে গাড়িতেই গুলিবিদ্ধ আসিফের লাশ
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-১২-২০২২
টেক্সাসে নিজ গ্যারেজে গাড়িতেই গুলিবিদ্ধ আসিফের লাশ আসিফ ইমরান


টেক্সাসে নিজবাড়ির গ্যারেজের সামনেই নিজগাড়িতে পাওয়া গেল গুলিবিদ্ধ বাংলাদেশি আমেরিকান আসিফ ইমরানের লাস। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল মাত্র ২৬ বছর। নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি আসিফ ইমরানের এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে পুরো বাংলাদেশি কমিউনিটি শোকে মুহ্যমান এবং হতবাক। টেক্সাসের আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।


সবার প্রশ্ন এই কেমন মৃত্যু? বাবা-মায়ের একমাত্র পুত্র সন্তান আসিফ ইমরানের এই হৃদয়বিদারক মৃত্যু কেউ যেন মেনে নিতে পারছেন না। জলজ্যান্ত একজন মানুষ কীভাবে মুহূর্তে লাশ হয়ে গেল! আমেরিকার স্বপ্নের জীবন শুরু করার আগেই দুর্বৃত্তের গুলিতে প্রাণ হারালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসিফ ইমরান।


পার্কিং গ্যারেজের সামনে পুলিশের ব্যারিকেড/ছবি সংগৃহীত 


আসিফ ইমরানের খালু ফেরদৌস বারী দেশ প্রতিনিধিকে জানান, আসিফ ইমরান আমার ভাগনে। তার বয়স মাত্র ২৬ বছর। মাত্র ১৫ বছর বয়সে সে ইমিগ্র্যান্ট হয়ে বাবা-মা সাথে আমেরিকায় আসে। আসিফের মামা শামীম আহমেদ তাদের জন্য আবেদন করেছিলেন। আমরা সবাই যেহেতু টেক্সাসে সেহেতু আসিফররা টেক্সাসের ওরেন্স কাউন্টিতে ওঠে। সাথে ছিল তার বাবা জাকির হাসান, মা নেতারা জামিল, বোন জাকিয়া নাসরিন। একই বাসায় তার বোনের স্বামীও থাকতো। এখানে এসে আসিফ শুরু করে লেখাপড়া। বর্তমানে আসিফ টেক্সাসের ভিমন্ট লামার স্টেট ইউনিভার্সিটিতে লেখাপড়া করছিল। সেই সাথে একটি টে মোবাইল স্টোরে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করতো।


পার্কিং গ্যারেজের সামনে পুলিশের ব্যারিকেড/ছবি সংগৃহীত


ফেরদৌস বারী জানান, ঘটনার দিন রাতে আসিফের বাবা-মা বাসায় ছিলেন না, তারা আউট অব টাউন ছিল। গত ২৪ ডিসেম্বর ভোররাতে আসিফ ইমরান রাতের খাবার খাওয়ার জন্য বাইরে গিয়েছিল। তার বোন এবং বোনের স্বামীও বাইরে খেতে গিয়েছিল। কিন্তু খাবার শেষে আসিফ ইমরান তার নিজের গাড়ি নিয়ে রাত ২টা ৩৩ মিনিটের সময় তাদের বাসার গ্যারেজের সামনে আসে। গ্যারেজ না খুলে গাড়িতে বসেই সে তার বোনকে ফোন করে। বোন তাকে জানায় আমরা মিনিটের মধ্যেই আসছি। কিন্তু বোন আসার আগেই দুর্বৃত্তরা আসিফ ইমরানকে লক্ষ করে এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়ে। সেই গুলিতেই আসিফ ইমরানের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে। ভাইকে দেয়া কথা অনুযায়ীই বোন আসিফের গাড়ির সামনে আসে।

এসে দেখতে পায় তার পা দুটো গাড়ির বাইরে এবং তার দেহ গাড়ির ভেতরে ড্রাইভিং সিটে। সে দেখতে পায় আসিফের বুকে রক্ত এবং মাথায় গুলির চিহ্ন। সাথে সাথেই সে চিৎকার দিয়ে ওঠে এবং পুলিশ কল করে। বোন পুলিশে কল দেয়ার আগেই অন্য কেউ পুলিশে কল দিয়েছে। যে কারণে তার বোন যখন পুলিশে কল দিচ্ছে, তখনই পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পুুলিশ এসে ঘটনাস্থলে ব্যারিকেড দেয়। আসিফের বোন এবং বোনের স্বামীকে পুলিশের সাথে নিয়ে যায়। পুলিশ সাথে আসা জরুরি বিভাগের পরীক্ষা করে আসিফকে মৃত ঘোষণা করে। আসিফ ইমরানের লাশ মর্গে পাঠিয়ে দেয় এবং তার ২০২১ সালের মার্সেডিজ গাড়িটি পরীক্ষার জন্য নিয়ে যায়। ফেরদৌস বারি আরো জানান, ঘটনাস্থলে ১৬টি বুলেট সেল পাওয়া গিয়েছে। আসিফের গাড়ির ডান দিকে একটি বুলেট যায়, গ্যারেজে রাখার আসিফের বাবার দুটো গাড়িতে বুলেট সেল পাওয়া যায়, সেই সাথে গ্যারেজের দরজায়।


গাড়িতে এলোপাথাড়ি গুলি/ছবি সংগৃহীত


ঘটনার পর দিন সকালে আসিফ ইমরানের বাবা এবং মা আসেন। ঘটনায় তারা হতবিহ্বল কান্না যেন থামছেই না। বাবা মায়ের একমাত্র পুত্র সন্তান হিসাবে আসিফেকে অতি আদরে মানুষ করেছেন। আসিফও ছিল মিষ্টিভাষী এবং সুদর্শন একটি ছেলে। তার বন্ধু মহলে সে খুবই জনপ্রিয়। কারণ সে ছিল মেডেল। বাবা- মা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না আসিফের এই মর্মান্তিক মৃত্যু। জানা গেছে, এখনো পুলিশ পরিবারের কাউকে লাশ দেখতে দেয়নি। কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন তা জানায়নি। পুলিশ বলছে তারা তদন্ত করছে।

তদন্ত শেষেই তারা সব জানাবে এবং আসিফের লাশ ফেরত দিবো। আসিফের লাশ ফেরত পাওয়ার পর হিউস্টন টেক্সাসেই তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে এবং সেখানেই তার লাশ দাফন করা হবে। উল্লেখ্য, আসিফ ইমরানের দেশের বাড়ি বাংলাদেশের বগুড়ার তেলপাড়ায়।

 

শেয়ার করুন