২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৫:০৩:৩৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :


ডিআরইউতে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী
‘গাজীপুরে ‘সুষ্ট নির্বাচন দেখানোর চেষ্টা’য় ভোটের আসল চিত্র উঠে এসেছে’
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-০৫-২০২৩
‘গাজীপুরে ‘সুষ্ট  নির্বাচন দেখানোর চেষ্টা’য় ভোটের আসল চিত্র উঠে এসেছে’ শুক্রবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান/নিজস্ব ছবি


গাজীপুর সিটি নির্বাচন ‘সুষ্ঠু দেখানোর চেষ্টা’য় ভোটের আসল চিত্র উঠে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ফলাফলের প্রসঙ্গ টেনে শুক্রবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ এই যে একটা নির্বাচন হয়ে গেলো গাজীপুরে আপনারা দেখেছেন আমি কিছু বলতে চাই এই নির্বাচন নিয়ে, কিন্তু এই নির্বাচন নিয়ে আজকে অনেক কথা বলা যাবে।”

‘‘ একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দেখাতে হবে চেষ্টা করেছে।ওই চেষ্টার ফলাফলটা আমরা দেখে ফেলেছি। একটা চেষ্টা করেছে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখানোর জন্য। তার মাধ্যমে কি উঠে এসেছে আমরা দেখেছি সবাই। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের আসল চিত্র, এটাই হচ্ছে আসল চিত্র।”

গাজীপুর সিটি করপোরেশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে পরাজিত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন বিজয়ী হন।

নির্বাচন কমিশনের বেসরকারি ফলাফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘড়ি প্রতীকের জায়দা খাতুন পেয়েছেন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আাজমত উল্লা খান নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট। অর্থাত স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর চেয়ে ১৬ হাজার ১৯৭ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

দেশের মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার বিষয়টি তুলে ধরে আমীর খসরু বলেন, ‘‘ জনগনের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য আজকে আমরা রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, পেশাজীবীসহ জনগনকে সাথে নিয়ে আমরা আন্দোলন করছি। এই ভোটাধিকার নিশ্চিত না করতে পারলে সাংবাদিকদের যে সাংবাদিকতার পরিবেশ, তাদের যে সাংবাদিকতা করার যে মানদন্ডে পৌঁছানোর ইচ্ছা তাদের আছেৃ. যদি দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা না যায়, মানবাধিকার ফিরিয়ে আনা না যায় তাহলে গণতন্ত্র ফিরে আসবে না।”

‘‘ ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্টের পরে এখন আরেকটা আসছে ‘অত্যাবশ্যকীয় পরিসেবা এ্যাক্ট’। এটা কিন্তু সরকার যেকোনো সংস্থার ওপর ইনভব করতে পারে। আরো আইন আসবে, আরো নিপীড়ন-নির্যাতনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশে যদি আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে না পারি, ভোটাধিকারের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার ও সংসদ যদি আমরা প্রতিষ্ঠা করতে না পারি তাহলে আগামী দিনে জনগনের কাছে জবাবদিহিমূলক কোনো সরকার আপনারা পাবেন না। সেজন্য নিশ্চিতভাবে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।”

তিনি বলেন, ‘‘ আগামী নির্বাচন অবশ্যই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে। এর কোনো বিকল্প নাই। বাংলাদেশে যদি বর্তমান অবস্থা থেকে পরিবর্তন করে এখানে গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়া, নির্বাচনী পরিবেশ, সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পাওয়া এবং নির্বাচনের আগে লেভেল প্ল্যায়িং ফিল্ড আমরা যদি নিশ্চিত করতে না পারি তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না।”

‘‘ নির্বাচনের আলোচনা আসছে পরে। প্রথমে লেভেল প্ল্যায়িং ফিল্ড ও গণতান্ত্রিক অডার ফিরিয়ে আসার আগে নির্বাচনের আলোচনা একটি ব্যর্থ আলোচনা। অর্থাত যারা নির্বাচনের কথা বলছে তারা লেভেল প্ল্যায়িং ফিল্ড ও গণতান্ত্রিক অডার ছাড়া নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে তারা এই সরকারের পক্ষে কাজ করছে।”

সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর-রুনির বিচার না হওয়া এবং গণমাধ্যমের ওপর সরকারের নানা চাপ প্রয়োগের কঠোর ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপির এই নেতা।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘‘ আমি কিছুদিন আগে কারাগার থেকে বেরিয়ে এসেছি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ড্রাকুনিয়ার যে ‘ল এতে অনেক সাংবাদিক কারাগারের মধ্যে অন্তরীন অবস্থায় রয়েছেন। যারা ফেইসবুকে মতামত দেন তারা এখন কারাগারের মধ্যে। এটাই হচ্ছে ফ্যাসিবাদী শাসন, এটাই হচ্ছে একনায়কতান্ত্রিক শাসন, এটাই হচ্ছে স্বৈরাচারি শাসন।”

‘‘ সারাদেশে মতপ্রকাশে বিশ্বাসী মানুষরাই কারা অন্তরীন হয়। আজকে দেশের গুণীজন যারাও তারাও মতাপ্রকাশের স্বাধীনতা না থাকার কারণে অনেক দূঃখকষ্টের মধ্যে তাদেরকে জীবনযাপন করতে হচ্ছে। যে সমস্ত গণমাধ্যমে কিছুটা সত্যের পক্ষে কথা বলার চেষ্টা করেছেন তাদেরকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং তাদের সম্পাদক ও সাংবাদিকদের নিপীড়ন-নির্যাতনের মধ্যে দিনযাপন করতে হচ্ছে।কেউ নিস্কৃতি পাচ্ছে না। যারা সত্য কথা বলবেন, ন্যায়-বিচারের কথা বলবেন তাদের কারো কোনো নিষ্কৃতি নাই। কিন্তু যারা ক্ষমতাসীনরা রয়েছে যারা এভাবে পার পেয়ে যেতে চাচ্ছেন তারা কিন্তু নিজেদেরই ক্ষতি করছেন।”

সকালে সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয় প্রাঙ্গনে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। পরে রিপোর্টারদের নিয়ে বর্ণাঢ্য র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শ্লোগান- ‘ঐক্যের সমৃদ্ধি’।

বিকালে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হবে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন জাতীয় সংসদ উপনেতো মতিয়া চৌধুরী।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানীর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইউনিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মঈনুল আহসান, সহ সভাপতি দীপু সারোয়ার এবং প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব কামাল উদ্দিন সুমন বক্তব্য রাখেন।

 

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুষ্ঠানে সুইডেনে অবস্থান করায় তিনি সেখান থেকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সাফল্য কামনা করেছেন বলে জানান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক।

 

অনুষ্ঠানে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, ইলিয়াস হোসেন, রফিকুল ইসলাম আজাদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, সাবেক সহসভাপতি আবু দারদা জোবায়ের, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, প্রবীণ সদস্য মুফতি আহমেদ, খোরশেদ আলম, গাজী আবু বকরসহ ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির বর্তমান ও সাবেক সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


শেয়ার করুন