২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০১:২২:৩৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


নতুন প্রজন্মকে মাতৃভাষায় আগ্রহী করাই বড় সংগ্রাম
সিদ্দিকুর রহমান সুমন
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০২-২০২৪
নতুন প্রজন্মকে মাতৃভাষায় আগ্রহী করাই বড় সংগ্রাম সাবওয়েতে বাংলা লেখা


আমেরিকার নিউইয়র্কে স্থানীয় পাবলিক স্কুলে ‘মাতৃভাষা’য় শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ না থাকলেও ক্লাসে কয়েকজনের গ্রুপ হলে তারা ওই ভাষায় কোর্স চালু করতে পারে। তবে বাংলাদেশি গুটিকয়েক অভিভাবক বাংলা ভাষার কোর্স করানোর জন্য তাদের সন্তানদের গ্রুপে ভর্তি করালেও অধিকাংশই এতে আগ্রহী নন। কারণ হিসেবে অভিভাবকরা জানিয়েছেন, বিদেশে জন্ম নেওয়া নতুন প্রজন্ম বাংলা বলতে চায় না, তারা ইংরেজিতে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তাই যারা বাংলা ভাষার প্রতি বেশি আগ্রহী হয়ে সন্তানদের শিক্ষা দিচ্ছেন তারা যেন এক নতুন যুদ্ধে নেমেছেন। 

প্রায় ২ লাখেরও বেশি বাংলাদেশির বসবাস নিউইয়র্কে। সিটির পরিষেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও বাংলা ভাষার ব্যবহার বাড়ছে। হাসপাতাল, স্কুলে এমনকি নির্বাচনে ভোটদানের সময় ব্যালট পেপারেও বাংলা ভাষার প্রচলন শুরু হয়েছে, যা বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য আনন্দের, পাশাপাশি বাংলাদেশের মর্যাদাকেও সুসংহত করছে। তবে নিউইয়র্কে যখন সরকারিভাবে বাংলার ব্যবহার বাড়ছে, তখন বাংলাদেশিদের ঘরে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের মধ্যে মাতৃভাষাকে বাঁচিয়ে রাখার আশা হতাশায় রূপ নিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম প্রজন্মের কারণে এখানে জন্ম নেওয়া দ্বিতীয় প্রজন্মের মধ্যে বাংলার ব্যবহার কিছুটা রয়েছে। তবে তৃতীয় প্রজন্ম কিংবা যেসব বাচ্চা ৪-৫ বছর বয়সে আমেরিকায় এসেছে, তারা বাংলা ভাষাকে ধরে রাখবে কতটুকু তা নিয়ে শঙ্কা দিনদিন প্রবল হচ্ছে।

প্রবাসে নতুন প্রজন্মের মধ্যে বাংলা ভাষার ব্যবহার কমছে স্বীকার করে বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা সারওয়ার চৌধুরী জানান, নতুন প্রজন্মের মধ্যে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাড়াতে হলে প্রথমেই ঘর থেকে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। মাতৃভাষার প্রতি আমাদের ত্যাগের কথা, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে আমাদের এই অর্জনের গল্প তাদের বেশি শোনাতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের নিজেদের স্বার্থেই ওদের বাংলা ভাষাটা শেখাতে হবে।

বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক মাসুম আহমেদ বলেন, বাচ্চাদের ভাষার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করতে হলে ঘরের সঙ্গে কিছুটা পরিবেশও দরকার। কিন্তু কমিউনিটিতে বাংলা ভাষার স্কুল চালু করা হলেও বিভিন্ন কারণে টিকে থাকা অনেক কঠিন। তাই এখন আর বাংলা ভাষার জন্য আলাদা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে না। তিনি বলেন, পরিবারের মধ্যে সবার সঙ্গে বাংলা ভাষায় বাংলাদেশের সংস্কৃতি নিয়ে নিয়মিত চর্চা হলে সন্তানরা আর এই ক্ষেত্রটি থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন মনে করবে না। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু আমেরিকায় নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যারা বসবাস করছেন, তারা নিজ কমিউনিটিতে বাংলা ভাষার বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতা বাড়াতে হবে। বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে মাতৃভাষা প্রীতিকে আরো কীভাবে সুসংহত করা যায়, ভাষার প্রতি তাদের অনীহার জায়গাগুলো চিহ্নিত করে উপযুক্ত ও ফলপ্রসূ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এর বিপরীত হলে প্রবাসে নতুন প্রজন্ম বাংলা ভাষার প্রতি অনাগ্রাহী হবে, যা ভবিষ্যতে দেশ ও জাতির জন্য বড় আক্ষেপের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।

শেয়ার করুন