বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ডেভেলপমেন্ট ফিন্যান্স থেকে ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়নে সাহায্য চেয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এই সাহায্যের পূর্বশর্ত হিসেবে আন্তর্জাতিক লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও)-এর রোডম্যাপ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে। আমেরিকা ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফিন্যান্স করপোরেশন (ডিফেসি) থেকে এই অবকাঠামোগত অর্থায়ন করে থাকে।
গত ২ জুন ওয়াশিংটনে আমেরিকা-বাংলাদেশ উচ্চপর্যায়ের অর্থনৈতিক কনসালটেশনের পর এক যৌথ বিবৃতিতে এই শর্তের কথা প্রকাশ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ইকোনোমিক গ্রোথ, এনার্জি ও পরিবেশ বিষয়ক স্টেট ডিপার্টমেন্টের আন্ডার সেক্রেটারি হোজে ডব্লিউ ফার্নান্দেজ ও বাংলাদেশের প্রাইভেট ইন্ডাস্ট্রি ও বিনিয়োগ-বিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এক রহমান এমপি’র মধ্যে অনুষ্ঠিত ইউএসএ-বাংলাদেশ দ্বিতীয় উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের যৌথ বিবৃতি স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রকাশ করা হয়।
চারটি বিষয়ে সম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এই কনসালটেশন কমিটির বৈঠকে যেখানে মি. ফার্নান্দেজ ও মি. সালমান এফ রহমান উভয়েই এই সভার আহ্বায়ক ও কো-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই অর্থনৈতিক বৈঠকে ঢাকা-নিউইয়র্ক বিমান চালনার ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি হয়নি। প্রথমত. ব্যবসা ও বাণিজ্যসংক্রান্ত সহযোগিতার বিষয়ে প্রস্তাবে বাংলাদেশের দ্বারা গৃহীত বাণিজ্যসংক্রান্ত পদক্ষেপসমূহকে বাহবা দেয়া হয়। বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য এনার্জি, টেলিকমিউনিকেশন, কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে এবং ইপিজেডে যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগের প্রশংসা করে। বাংলাদেশ তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ ওম্যান কাউন্সিল গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবকেও স্বাগত জানায়।
দ্বিতীয়ত. প্রস্তাবে শ্রমবাজার নিয়ে আলোচনার শ্রম আদালত শক্তিশালীকরণসহ গার্মেন্টস সেক্টরে শ্রমিকদের অধিকার, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন, অভিযোগ গ্রহণ প্রক্রিয়া-সংক্রান্ত পদক্ষেপকে অগ্রগতি বলে স্বীকার করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত লেবার অধিকারের যে স্ট্যান্ডার্ড রয়েছে, তা আইএলও রোডম্যাপের সমান্তরালে আনার জন্য আরও ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলে। বাংলাদেশ এই আইএলও রোডম্যাপের চারটি প্রধান পদক্ষেপ বাস্তবায়নে দ্রুত সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলে।
বাংলাদেশ অন্যান্য ক্ষেত্রেও যেমন অ্যাসোসিয়েশন করার ফ্রিডম, এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনে কালেকটিভ বার্গেইনিং এজেন্ট, গঠনে পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলে। বাংলাদেশ ডিএফসি থেকে অবকাঠামো নির্মাণে অর্থায়নের অনুরোধ করলে যুক্তরাষ্ট্র তা আইএলও রোড ম্যাপের বাস্তবায়নের উপর নির্ভরশীল বলে উল্লেখ করে।
তৃতীয়ত. আমেরিকা কোভিড ১৯ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের ভূমিকা ও গ্লোবাল ক্লাইমেট লিডার হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থানের প্রশংসা করে।
চতুর্থত. অবকাঠামো ও বাণিজ্যের মধ্যে উভয় দেশে যুক্ত, খোলা, সর্বজন গৃহীত, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়ে তুলে সমৃদ্ধির পথ রচনার কথা বলে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনোমিক ফ্রেমওয়ার্ক-এর বিষয়ে ব্রিফ করে। বাংলাদেশ ঢাকা-নিউইয়র্কের মধ্যে বিরতিহীন ফ্লাইট পুনঃচালু করার কথা বলেন। তবে এ বিষয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা হবে বলে জানায়।