নিউইয়র্ক রাজ্যের কনজিউমার ডাইরেকটেড পারসোনাল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রাম (সিডিপেপ) এ প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার গ্রাহককে সহায়ক প্রদান করে। প্রোগ্রামটি নিউইয়র্ক স্টেট বর্তমানে একটি বড় সংকটের মধ্যে পড়েছে। এই মেডিকেইড পরিষেবা, যা যোগ্য ব্যক্তিদের নিজের পছন্দের সহায়ক নিয়োগ করার সুযোগ দেয়, নতুন একটি প্রশাসনিক পরিবর্তনের কারণে রাজ্যবাসীকে গভীর উদ্বেগে ফেলেছে। প্রোগ্রামের আওতায় অংশগ্রহণকারীরা তাদের দৈনন্দিন জীবনের জন্য ব্যক্তিগত সহায়ক নিয়োগ করতে পারেন-যার মধ্যে রান্না, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, বিছানা থেকে ওঠা, ওষুধ গ্রহণ এবং অন্যান্য জটিল স্বাস্থ্যগত যত্নের কাজ অন্তর্ভুক্ত। এর মূল উদ্দেশ্য হলো, এসব ব্যক্তির স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে তাদের নার্সিং হোমে না পাঠিয়ে বাড়িতে নিরাপদভাবে জীবনযাপন করার সুযোগ প্রদান করে। ফলে প্রোগ্রামটি একটি অপ্রয়োজনীয় উচ্চ খরচ থেকে স্টেটকে রক্ষা করে। এই প্রোগ্রামটি চালানোর জন্য স্টেট সরকার বিভিন্ন ফিসক্যাল ইন্টারমিডিয়ারির মাধ্যমে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে। এই প্রতিষ্ঠানগুলি গ্রাহকদের সহায়কদের বেতন, সুবিধা, আয়কর, অন্যান্য কাটা এবং কর্মচারি রেকর্ডগুলি বজায় রাখার কাজ করে। একাধিক লাভজনক প্রতিষ্ঠান এই কাজে অংশ নেয়, যার মধ্যে ৮৫০টি কোম্পানি ছিল যারা এ পর্যন্ত এই পরিষেবাগুলোর ব্যবস্থাপনা করছিল।
প্রোগ্রামটির জনপ্রিয়তা দিনে দিনে বাড়ছে। ২০১৯ সালে যেখানে এর বাজেট ছিল ২.৫ বিলিয়ন ডলার, তা ২০২১ সালে ৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। তবে, খরচের এই ব্যাপক বৃদ্ধি এবং সম্ভাব্য দুর্নীতির কারণে, রাজ্য সরকার খরচ কমানোর লক্ষ্যে একক রাজ্যব্যাপী ফিসক্যাল ইন্টারমিডিয়ারি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই কাজের জন্য নির্বাচিত প্রতিষ্ঠান হলো পাবলিক পার্টনারশিপস এলএলসি (পিপিএল) এবং সব সিডিপেপ গ্রাহককে এই প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করতে বাধ্য করা হয়েছে।
৬ জানুয়ারি থেকে ৯৫ হাজার ব্যক্তি সিডিপেপের সঙ্গে সাইনআপ করেছেন বা তাদের স্থানান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। তবে ১ লাখ ৪৫ হাজার এখনো তাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পূর্ণ করেনি এবং স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেনি, যা বৃহৎ সংখ্যক গ্রাহককে দুশ্চিন্তায় ফেলেছে। রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ২৮ মার্চের মধ্যে যারা এই প্রক্রিয়া শেষ করতে পারবে না, তারা সহায়ক সেবা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন, যা তাদের দৈনন্দিন জীবনে গভীর প্রভাব ফেলবে। এই স্থানান্তরের সময়সীমা মাত্র এক মাস-মার্চ ২৮ পর্যন্ত, যা খুব কম সময়। রাজ্য এবং পিপিএল-এর পক্ষে এতো বিশাল সংখ্যক মানুষের স্থানান্তর সম্পন্ন করা কঠিন হতে পারে। দুই মাসে যেখানে ৯৫ হাজার জন নিবন্ধন করা সম্ভব হয়েছে, সেখানে মাত্র এক মাসে ১ লাখ ৪৫ হাজার জন সঠিকভাবে প্রক্রিয়া করা অনেক কঠিন হবে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে, গ্রাহকরা উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন যে, যদি তারা সময়মতো পিএলএলের সঙ্গে সাইন আপ করতে না পারেন, তবে তাদের জন্য কি সেবা বন্ধ হয়ে যাবে? অনেকেই তাদের সহায়ক থেকে বঞ্চিত হতে পারেন এবং এর ফলে তাদের দৈনন্দিন জীবন আরো কঠিন হয়ে পড়বে। অনেক গ্রাহক এমনকি যদি পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়, তবে তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হতে পারেন, যাদের কাছে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং সহায়ক দক্ষতা না-ও থাকতে পারে।
এখনো পর্যন্ত, স্টেট প্রশাসন এই বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়নি এবং গ্রাহকদের এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বিলম্ব করেছে। এর ফলে উদ্বেগের মাত্রা আরো বাড়ছে এবং গ্রাহকদের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দিচ্ছে। এখন স্টেট সরকারকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে গ্রাহকদের সঠিক তথ্য এবং সহায়তা সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়। একটি কার্যকর পরিকল্পনা এবং একটি স্পষ্ট রূপান্তর প্রক্রিয়া গ্রাহকদের মধ্যে দুর্ভোগ কমাতে সহায়ক হতে পারে এবং তাদেরকে উপযুক্ত সহায়ক সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে।