২০ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০২:০৩:৫৩ অপরাহ্ন


টক অব দ্য কমিউনিটি টুটুল সোনিয়ার বিয়ে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৭-২০২২
টক অব দ্য কমিউনিটি  টুটুল সোনিয়ার বিয়ে কণ্ঠশিল্পী এস আই টুটুল ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী শারমিন সিরাজ সোনিয়া/ছবি সংগৃহীত


কণ্ঠশিল্পী এস আই টুটুল ও মডেল-অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদ ২৩ বছরের সংসার জীবনের ইতি টেনেছেন। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী শারমিন সিরাজ সোনিয়াকে দ্বিতীয় বিয়ে করে সেই খবর প্রকাশ্যে এনেছেন এই কণ্ঠশিল্পী। দ্বিতীয় বিয়ে প্রসঙ্গে এস আই টুটুল বলেন, আমি ও তানিয়া সেপারেট ছিলাম ৫ বছর। গত বছর আমাদের অফিশিয়ালি ডিভোর্স হয়। এরপর নিউইয়র্কে কনসার্টসহ নানান কাজেই আমার যাতায়াত। এখানে আরটিভির বাংলা গায়েন থেকেই সোনিয়ার সঙ্গে পরিচয়। দু’জনই যেহেতু আমরা সিঙ্গেল এবং ম্যাচিউরড, তাই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই। ১৯৯৯ সালে তানিয়া আহমেদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এস আই টুটুল। এত দিন ভক্তকুলে এ যুগল ‘হ্যাপি কাপল’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। প্রায় এক সপ্তাহ আগে টুটুল এবং সোনিয়া বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। বিষয়টি প্রথমে দু’জনই গোপন রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাদের বন্ধুবান্ধবদের কারণেই বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়।

টুটুল ভালো থাকুক, তার জন্য শুভ কামনা: তানিয়া

টুটুলের দ্বিতীয় বিয়ের খবরটি জেনেছেন তার প্রথম স্ত্রী তানিয়া আহমেদও। এ বিষয়ে তিনি কথা বলছেন। তানিয়া বলেন, ‘খবরটি আমিও শুনেছি। ও (টুটুল) ভালো থাকুক। তার জন্য শুভ কামনা রইলো। সে যদি ভালো থাকে তাহলে আমার সন্তানরাও ভালো থাকবে। সুতরাং তার ভালো থাকাটা আমার জন্য জরুরি।’

দুজনের মধ্যে ডিভোর্স হয়েছে কিনা? কবে হয়েছে জানতে চাইলে জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী বলেন, ‘সে তো অবুঝ না, গাধাও না, যে নিয়মের বাইরে গিয়ে এমন কিছু করবে। নিয়ম মেনেই সে বিয়ে করেছে।’ তানিয়ার ভাষ্যে, ‘বাচ্চারা এখনো জানে না তাদের বাবা আবার বিয়ে করেছে। তবে তারা জানতো সে বিয়ে করবে। আমিও বাচ্চাদের এসব জানাতে চাই না। আমরা সবসময় ছেলেমেয়েদের ভালো জিনিসিটাই শেখানোর চেষ্টা করেছি। কখনো তাদের সামনে ঝগড়াঝাটি বা খারাপ কোনো শব্দ উচ্চারণ করিনি।’

দু’জনের দূরত্ব প্রসঙ্গে তানিয়া বলেন, ‘এটা ঠিক আমাদের মধ্যে একটা দূরত্ব ছিল। সে মিউজিকের মানুষ। তার জীবনধারণটা একটু অন্যরকম। সে জায়গাটায় হয়তো দূরত্ব হয়েছে।’ প্রায় দুই যুগের দাম্পত্য জীবন আপনাদের। ভালোবাসার জায়গা থেকে ভক্ত-শুভাকাক্সক্ষীরা তো এই সিদ্ধান্তে আহত হতে পারেন। এমন কথার জবাবে তানিয়া বলেন, ‘দু’জন ভালো মানুষও একসঙ্গে থাকতে থাকতে একসময় আলাদা হয়ে যেতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা এটা আমাদের দু’জনের একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। এখানে তো আর সব বলার কিছু নেই।’ সবশষে তানিয়া বলেন, ‘তার জন্য আমার শুভ কামনা থাকলো। দোয়া থাকলো। সে ভালো থাকুক।’

উল্লেখ্য, এস আই টুটুল টুটুল ও তানিয়া আহমেদ বিয়ে করেছিলেন ১৯৯৯ সালে। এরপর থেকে সুখেই সংসার করে আসছিলেন। তাদের ঘর আলো করে পৃথিবীতে আসে দুই ছেলে ও এক মেয়ে। তিন সন্তানকে নিয়ে তানিয়া-টুটুলের সুখের অন্ত ছিল না। কিন্তু সেই সুখের সংসার আর টিকলো না।

যে কারণে ভেঙেছে টুটুল ও তানিয়ার ২৩ বছরের সংসার

 এস আই টুটুল ও তানিয়া আহমেদ; শোবিজ জগতে তারা পরিচিত ছিলেন ‘হ্যাপি কাপল’ নামে। দুই দশকের বেশি সময় ধরে সংসার করেছেন। ভক্তদের কাছেও তাদের গ্রহণযোগ্যতা দারুণ। কিন্তু দাম্পত্য জীবনের লম্বা পথচলায় ছেদ টেনেছেন তারা। এস আই টুটুল জানিয়েছেন, গত বছরই আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে। এর আগে প্রায় ৫ বছর তারা আলাদা ছিলেন। মতের মিল না হওয়ায় দু’জনের সম্মিলিত সিদ্ধান্তেই বিচ্ছেদ করেছেন দম্পতি।

‘চোখের দিকে তাকাও’, তানিয়াকে টুটুল 

সময়টা ১৯৯৮ সালের শেষদিক। যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামির সমুদ্রপাড়ে সন্ধ্যাবেলায় পাশাপাশি হাঁটছিলেন এস আই টুটুল ও তানিয়া আহমেদ। তানিয়াকে হঠাৎ টুটুল বললেন, ‘তোমাকে একটা সিরিয়াস কথা বলতে চাই।’ শুনতে চাইলেন তানিয়া। ‘আমার চোখের দিকে তাকাও’-বলেন টুটুল। তানিয়া অপলক টুটুলের দিকে তাকালেন। চোখের পলক ফেলছেন না। ভয়ে টুটুল নিজেই চোখ সরিয়ে নিলেন। এরপর এক নিঃশ্বাসে তানিয়াকে বলে বসেন, ‘আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই।’

টুটুলের মুখ থেকে এ কথা শোনার পর সেদিন হা হয়ে গিয়েছিলেন স্বভাবে শান্তশিষ্ট তানিয়া। কোনো কথা না বলে সোজা তিনি চলে যান রুমে। তিনদিন সময় নিয়ে অনেক ভেবেচিন্তে টুটুলের প্রস্তাবে সায় দিয়েছিলেন তিনি। ২০১৬ সালে দাম্পত্য জীবনের ১৭ বছর পূর্তিতে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে সিনেমার কাহিনির মতো জীবন শুরুর এই গল্প টুটুল-তানিয়াই জানিয়েছিলেন এক জাতীয় দৈনিককে।

২০১৮ সালের শেষদিকে দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ডদল এলআরবির এক মাসের যুক্তরাষ্ট্র সফরে উপস্থাপক হিসেবে সঙ্গে গিয়েছিলেন তানিয়া আহমেদ। সেখানেই ঝোপ বুঝে কোপ মেরেছিলেন তখনকার এলআরবি সদস্য এস আই টুটুল। এই কাজে ‘বস’ আইয়ুব বাচ্চুর চোখ এড়াতে টুটুলকে সাহায্য করেন তার বন্ধু রিয়াদ। তাও রীতিমতো আলো জ্বালিয়ে-নিভিয়ে সংকেত দিয়ে। প্রেমের পর অবশ্য আইয়ুব বাচ্চুকেই সবার আগে জানান এস আই টুটুল। এরপর তার পরামর্শেই দেশে ফিরে কিছুদিন চেনা-জানা, তারপর বিয়ে। ১৯৯৯ সালের ১৯ জুলাই বিয়ে করেন এস আই টুটুল ও তানিয়া আহমেদ। প্রায় দুই যুগের দাম্পত্য জীবনে তাদের দুই ছেলে সন্তান শ্রেয়াশ আহমেদ ও আরশ আহমেদ  এবং ২ মেয়ে আয়াত ও সামিয়া। এতো দীর্ঘপথ পেরিয়ে অবশেষে কেটে গেছে টুটুল-তানিয়ার মিলনের সুর। গত বছর ডিভোর্স হয়ে গেছে তাদের।


শেয়ার করুন