২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৬:১৭:৪৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


কুমিল্লার বিশাল জনসভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম
‘তারা আবার বলছে নৌকায় ভোট দেন’
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-১১-২০২২
‘তারা আবার বলছে নৌকায় ভোট দেন’


কুমিল্লা টাউন হল মাঠে জনতার যেন ঢল নেমেছিল এদিন।  বিএনপির বিভাগীয় এ জন সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন,  ‘দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে দানবীয় সরকার আমাদের সকল অর্জনগুলো কেড়ে নিয়েছে। আমাদেরকে ভাতে মারছে, পানিতে মারছে, আমাদেরকে কর্মসংস্থানে মারছে। সেই ভয়বহ আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য গোটা দেশ অস্বস্থিতে রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সমাবেশে কথা খুব বেশী নেই। কথা খুব সামান্য। আওয়ামী লীগের সভাপতি। যারা বলে প্রধানমন্ত্রী। আমরা বলি অবৈধ প্রধানমন্ত্রী। জোর করে দুইবার নির্বাচন করেছে, ২০১৪ ও ২০১৮। ২০১৪ তে কেউ ভোট দিতে যায়নি। ১৫৪ জনকে বিনাপ্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত করেছে। আর ২০১৮ তে আগের রাতেই নাকি ভোট শেষ। উনি (প্রধানমন্ত্রী) নাকি আবারও নির্বাচন করবেন। পরশুদিন যশোরে সম্মেলন করেছেন। সরকারী সকল সুযোগ সুবিধা নিয়ে। রাষ্ট্রের সকল যন্ত্র ব্যাবহার করে। হাজার হাজার বাস ট্রাক নিয়ে, তিনি যশোরে একটা সভা করেছেন। এমনকি স্টেডিয়ামের গ্যালারী পর্যন্ত ভেঙ্গে দিয়ে, তারা সভা করেছেন। এ সভায় তিনি ঘোষনা দিয়েছেন, আওয়ামী আসলে সবাই নাকি শান্তি পায়। কি শান্তিতে আছেন আপনারা (প্রশ্ন করেন জনসভার দিকে ইঙ্গিত করে)। আবার কী বলেছেন জানেন, আবার নৌকায় ভোট দেন।’ মির্জা ফখরুল- আব্বাস উদ্দিনের একটা গানের কলি শুনিয়ে বলেন,‘আগে জানলে তো ভাঙ্গা নৌকায় উঠতাম না।’  

তিনি দাবী  করে বলেন, ‘এখন বাংলাদেশের সব মানুষ এই গান গাইতে শুরু করেছে।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন তাদের বিদায় দেখতে চায়। এখন মান সন্মানের সঙ্গে বিদায় নেন। নতুবা মানুষ আপনাদের বিদায় করে দেবে।’ 

আওয়ামী লীগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘তারা আবার ক্ষমতায় থাকার জন্য ফন্দি ফিকির বের করেছে। তারা আগের মতই নির্বাচন করবে। তারা ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করবে। তারা মন্ত্রী - মন্ত্রী অবস্থায় থাকবে। এমপি, এমপি থেকে নির্বাচন করবে। যে যার অবস্থানে থেকে নির্বাচন করবে। আবার কী বলে- তারা নাকি ইভিএমে নির্বাচন করবে। যেমন খুশী তেমন চুরি করবে।’ তিনি বলেণ, এটার জন্য তারা সমস্যা তৈরী শুরু করেছে। ২০১৮ সনের নির্বাচনের আগে গায়েবি মামলা হয়েছিল মনে আছে? এবারও তারা সেভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা শুরু করেছে। এ কুমিল্লায়ও মামলা হয়েছে অনেক। গুম হয়েছে আমাদের ছেলেরা। এ কুমিল্লায় চৌদ্দগ্রামে দেশ নেত্রী বেগম খালেদার জিয়ার বিরুদ্ধেও মামলা দিয়েছে গায়েবি মামলা। রাজশাহীতে গত ১১ দিনে ৩৫ টি মামলা হয়েছে। বলছে ককটেল বিস্ফোরন হয়েছে। কিন্তু জনগন বলছে এখানে তো আমরা এরকম কিছুই শুনিনি। লজ্জা নেই। শরম নেই। বেহায়া হয়ে গেছে। মিথ্যাচার করছে।’ 

তিনি বলেন, ঢাকায়ও একই কাজ শুরু করেছে। কারন ঢাকায় ১০ ডিসেম্বর যাতে সমাবেশ ঠিকমত হতে না পারে। নস্যাৎ করতে পারে। সে জন্য ঢাকায় আগে থেকে মামলা মকদ্দমা শুরু করেছে। ঘরে ঘরে অভিযান চালাচ্ছে। রেইড করছে। তাতে কী ১০ তারিখে ঢাকার সমাবেশ বন্ধ করা যাবে? 

তিনি বলেন,‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে জনগনকে সাথে নিয়ে জনগনের দাবী নিয়ে কথা বলছি। সেখানে আপনারা বলেন অগ্নিসন্ত্রাস। আরে অগ্নি সন্ত্রাস তো আপনারা করছেন। করে নাম দিচ্ছেন বিএনপির নেতাকর্মীর। চৌদ্দগ্রামেও তো তাই হয়েছে।’ 

বিএনপি মহাসচিব বলেন,‘আওয়ামী লীগের চুরির কথা আর বলতে চাইনা। শুধু এটুকু বলি যে ফোকলা করে দিয়েছে। ট্রেজারিতে আর কিচ্ছুই না। কিছুদিন চিৎকার করছে রিজার্ভ রিজার্ভ নিয়ে। রিজার্ভ কী আমরা চিবিয়ে খেয়েছি? আমি বলেছি না চিবিয়ে খাননি। গিলেই খেয়েছেন।’ 


মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিদেশী একটা সংস্থা বলছে গত দশ বছরে বাংলাদেশ থেকে নাকি ৮৬ লক্ষ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ এর দাম আবারও বাড়িয়েছে। আমরা দিতে দিতে সব শেষ করে ফেলছি। আর কত দেবে মানুষ। বলেছিল, তারা চালের দাম দেবে ১০ টাকা। এখন চালের দাম কত? ডালের দাম কত। তেলের দাম আবারও বাড়িয়েছে। পেট্রোল,অকটেন,ডিজেলের দাম বেড়েছে। পিয়াজের দাম বেড়েছে। কিন্তু কৃষকদের আয় বাড়েনি। কিন্তু তাদের ইনকাম বেড়েছে। বাড়ী গাড়ী বেড়েছে। ফুলে ফেপে তারা অনেক সমৃদ্ধ করেছে।’ 


সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশারফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী, অধ্যাপক শাহিদা রফিক, অ্যাডভোকেট বোরহান উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাক মিয়া, জাকারিয়া তাহের সুমন, আবুল কালাম আজাদ, খালেদ মাহবুব শ্যামল, জেড খান মো. রিয়াজ উদ্দিন নসু, হারুনুর রশীদ, রাশেদা বেগম হীরা, অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, সাইয়েদুল হক সাঈদ, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা প্রমুখ।   


শেয়ার করুন