২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০২:৫৪:৩৭ পূর্বাহ্ন


তৈরি পোশাক রফতানি প্রবৃদ্ধিতে শ্রমিকদের এখন পাল্টা প্রশ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৮-২০২৩
তৈরি পোশাক রফতানি প্রবৃদ্ধিতে শ্রমিকদের এখন পাল্টা প্রশ্ন স্মারকলিপি হস্তান্তর


গার্মেন্টস মালিকদের উদ্দেশ্য করে বাংলাদেশের শ্রমিক নেতারা বলেছেন, আপনাদের গেল গেল রবের বিপরীতে পরিসংখ্যান বলছে তৈরি পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। ন্যায্য মজুরির দাবি কে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য কিছু দুর্বল কারখানা আকস্মিক বন্ধ করে দিয়ে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ না করে তাদের দুর্দশার মধ্যে ফেলে উদাহরণ তৈরির যে কোনো ষড়যন্ত্রমূলক প্রচেষ্টার কঠিন জবাব দেওয়া হবে। নেতৃবৃন্দ দেশের অর্থনীতি এবং শিল্পের বিকাশের স্বার্থেই শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

অবিলম্বে তৈরি পোশাকশিল্প শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা নির্ধারণসহ নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণার দাবিতে শ্রমিকরা নেতারা এ দাবি করেন। গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (জি-স্কপ) রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল নিম্নতম মজুরি বোর্ড কার্যালয়ে যায় এবং জি-স্কপ নেতৃবৃন্দ নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যানের হাতে ২৩ হাজার টাকা নিম্নতম মজুরি দাবির যৌক্তিকতার ব্যাখ্যা সংবলিত স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন।

গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (জি-স্কপ)-এর যুগ্ম সমন্বয়কারী শ্রমিক নেতা নঈমুল আহসান জুয়েলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মারকলিপি প্রদানপূর্বক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জি-স্কপ কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের অন্যতম সদস্য আহসান হাবিব বুলবুল, আব্দুল ওয়াহেদ, খালেকুজ্জামান লিপন, রফিকুল ইসলাম রফিক, লুৎফুন নহার লতা, সেলিম মাহমুদ, শিরিন শিকদার, বাবুল আহমেদ, তামরিন আহমেদ, রানি আক্তার, সাইফুল ইসলাম শরিফ, আল আমিন হাওলাদার শ্রাবন, মিজানুর রহমানসহ জি-স্কপের কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক কমিটির নেতৃবৃন্দ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রম আইনের ১৩৯ ধারার বিধান মতে কোনো শিল্পের জন্য গঠিত মজুরি বোর্ড গঠনের ৬ মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট শিল্পের শ্রমিকদের মজুরি কাঠামো ঘোষণা করবে। সেই হিসেবে তৈরি পোশাকশিল্পের জন্য গঠিত বর্তমান মজুরি বোর্ডকে অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য নতুন মজুরি কাঠামো সুপারিশ করতে হবে। অথচ গঠনের পর চার মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও পরিচিতি সভার বাইরে মজুরি বোর্ডের কোনো সভা হয়নি। চিকিৎসাজনিত কারণে মজুরি বোর্ডে গার্মেন্টস মালিক পক্ষের প্রতিনিধির বিদেশে থাকার কারণেই নাকি মজুরি বোর্ডের সভা করা সম্ভব হয়নি। নেতৃবৃন্দ শ্রমিকদের জীবনযাত্রার ব্যয়, প্রতিযোগী দেশসমূহের শ্রমিকদের মজুরি, মুদ্রার মানের অবনমন, মূল্যস্ফীতি, অংশীজনদের গবেষণার বিভিন্ন্ তথ্য তুলে ধরে জি-স্কপের নিম্নতম ২৪ হাজার টাকা মজুরি দাবির যৌক্তিকতা ব্যখ্যা করে বলেন, দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক ব্যাংক কর্মচারীদের জন্য ঘোষিত মজুরি কাঠামোই প্রমাণ করে মাসে কমপক্ষে ২৪ হাজার টাকার কম মজুরিতে মানবিক জীবনধারণ সম্ভব নয়। তবে জি-স্কপ ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলনের স্বার্থে গার্মেন্ট শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা দাবি করছে। নেতৃবৃন্দ, সাবধান বাণী উচ্চারণ করেন অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা না করে দীর্ঘসূত্রতা করা হলে উদ্ভূত পরিস্থিতির দায় গার্মেন্টস মালিকদের বহন করতে হবে। নেতৃবৃন্দ গার্মেন্টস মালিকদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রাখেন গত এক বছরে শুধু ডলারের বিপরীতে টাকার মানের অবমূল্যায়নের কারণে কত হাজার কোটি টাকা বেশি মুনাফা করেছেন? আর আপনাদের মুনাফা বৃদ্ধির বিপরীতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অগ্নিমূল্যে শ্রমিকদের যখন প্রায় অর্ধাহারে জীবনযাপন করতে হচ্ছে, তখন শ্রমিকদের কতটুকু বাড়তি মজুরি দিয়েছেন?

শেয়ার করুন