০৩ মে ২০১২, শুক্রবার, ০৭:১১:৫১ পূর্বাহ্ন


দুর্নীতি বন্ধে সোচ্চার হতে হবে
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-১২-২০২৩
দুর্নীতি বন্ধে সোচ্চার হতে হবে মহিলা পরিষদের মানববন্ধন


মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেছেন, উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন করলে হবে না। সাধারণ মানুষের কল্যাণে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুশাসন নিশ্চিতে বিনিয়োগ করতে হবে। মানবাধিকার কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। দুর্নীতি বন্ধে সোচ্চার হতে হবে।

গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে (জিপিও’র সামনে) ‘বিশ্ব মানবাধিকার দিবস’ উদযাপন উপলক্ষে গত ১১ ডিসেম্বর সোমবার বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম এসব কথা বলেন। 

ডা. ফওজিয়া মোসলেম আরো বলেন, সারা বিশ্ব জুড়ে চলমান যুদ্ধ ও সংঘাতের দামামায় বিশ্বশান্তি আজ বিলুপ্ত। বাংলাদেশের পরিস্থিতিও এর ব্যতিক্রম নয়। সংখ্যালঘু, আদিবাসী, দলিত নারীসহ সকল শ্রেণীর মানুষ আজ সহিংসতার শিকার। তিনি বলেন, ’৭২ এর সংবিধানকে পুন:প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে গড়ে তুলতে হলে শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে উন্নতিসহ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাষ্ট্রকে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান তিনি।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম; আন্দোলন সম্পাদক রাবেয়া খাতুন শান্তি, প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও পাঠাগার সম্পাদক রীনা আহমেদ এবং ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেহানা ইউনুস।

মালেকা বানু বলেন, সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার আলোকে জন্মগত অধিকারসূত্রে সকল মানুষের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলা হলেও বিশ্বজুড়ে বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতি ভিন্ন। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আইন থাকলেও তা যে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে এমনটি বলা যাবে না। গাজার চলমান পরিস্থিতিতে আজ জাতিসংঘেরও উদ্বেগ রয়েছে। তিনি এসময় বলেন নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হলে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চলমান সকল ধরনের সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চলমান সহিংসতা প্রতিরোধ করে তিনি জনজীবনে নিরাপত্তা নিশ্চিতের উপর জোর দাবি জানান।

উপস্থিত অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বলেন, বিশ্ব জুড়ে চলমান যুদ্ধ ও সংঘাতমূলক পরিস্থিতির কারণে মানবাধিকার লংঘনের ইতিহাস ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানবাধিকার লংঘনের ঘটনায় নতুন ধরনের সহিংসতা বৃদ্ধি নারীসহ সকলের জীবনের নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা বন্ধে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হলেও পারিবারিক ক্ষেত্রে, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানসহ সকল পর্যায়ে নারীর প্রতি অধঃস্তন ও বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি পরিলক্ষিত হচ্ছে পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার কারণে। বক্তারা আরো বলেন মানবাধিকার লংঘনের মত পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটিয়ে যুদ্ধ নয় শান্তি চাই নীতির আলোকে নারী-পুরুষের জন্য সমতাপূর্ণ, ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক সহিংসতাসহ সকল প্রকার সহিংসতা বন্ধ; নারীর বুদ্ধিমত্তা ও তাদের দেশপ্রেমকে মূল্যায়ন করা; কালো টাকা ও ক্ষমতার অপব্যবহার, মাদকের ব্যবহার রোধ এবং সকলের জন্য সমান আইন প্রতিষ্ঠা ও বাস্তবায়নের উপর রাষ্ট্রকে গুরুত্ব দিতে হবে। দলিত জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি সিরিষা বলেন, দলিত জনগোষ্ঠীর মানুষের জমির উপর কোনো অধিকার নেই। তারা মানুষ হিসেবে সকল ধরনের নাগরিক সুবিধা হতে বঞ্চিত। সকল ধরনের বৈষম্য দূর করে সমতাপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার তাগিদ দেন তারা। মানববন্ধন কর্মসূচিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ, সম্পাদকমন্ডলী, কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকসহ প্রায় শতাধিকজন উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন শেষে গুলিস্তান থেকে পল্টন মোড় পর্যন্ত একটি র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এডভোকেসি ও লবি পরিচালক জনা গোস্বামী।

শেয়ার করুন