শুধু বাংলাদেশই নয় উপমহাদেশে প্রচীনতম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ঐতিহ্যবাহী এ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ তাদের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দ্বারপ্রান্তে। আগামী ২৩ জুন এ দলের অমন এক মাইল ফলকে উপনীত হবে। ১৯৪৯ সালের ওইদিনে পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেনে প্রতিষ্ঠা হয় আওয়ামী লীগ। দলটির এ গুরুত্বপূর্ণলগ্ন স্মরণীয় করতে প্লাটিনামজয়ন্তী হিসাবে পালন করা হবে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কর্মসূচির মধ্যে থাকবে আলোচনা সভা, সেমিনার, চিত্র প্রদর্শনী, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তবে এসবই গতানুগতিক ধারাতে হবে না। থাকবে ডিজিটাল ও স্মার্টভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা। পাশাপাশি গোটা বাংলাদেশে এর রেশ ছড়িয়ে দিতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রতিটা প্রান্তরে ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড, তোরণ নির্মাণের মধ্যে দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হবে দলটির ইতিহাস ও ঐতিহ্য। স্বাধীনতা সংগ্রাম, গণতান্ত্রিক আন্দোলনসহ উঠে আসবে দেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের গল্প। ওয়ার্ড-ইউনিয়ন পর্যন্ত দলীয় প্রচার-প্রচারণায় গুরুত্ব পাবে পদ্মা সেতু, মেট্রেরেল, বঙ্গবন্ধু টানেলসহ বাস্তবায়ন হওয়া সরকারের বড় বড় মেগা প্রকল্পসমূহের চিত্র সম্বলিত ব্যানার পোস্টার। তাছাড়া দলটি যার আদর্শে লালিত হচ্ছে সে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনার ছবিও প্রদর্শিত হবে।
ক্ষমতাসীন দলটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের প্লাটিনামজয়ন্তীকে স্মরণীয় করতে সব ধরনের প্রস্তুতি হাতে নেওয়া হচ্ছে। আমন্ত্রণ জানানো হবে দেশের নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলকে। এছাড়াও বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, সুশীলসমাজের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দলীয় সূত্র আরো জানাচ্ছে আওয়ামী লীগের ইতিহাস ঐতিহ্য মানুষের কাছে আরো গ্রহণযোগ্যকরে তুলে ধরতে থাকবে প্রাণান্ত চেষ্টা।
এ প্রসঙ্গে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, কেন্দ্র থেকে ওয়ার্ড-ইউনিয়ন পর্যন্ত প্লাটিনামজয়ন্তী জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করা হবে। এতে দেশের সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। কে পক্ষ, কে প্রতিপক্ষ-সেটা বিবেচনার বিষয় নয়। তবে নগরের বিভিন্ন স্থানে সাজসজ্জা আমরা করব না। এই কঠিন সময়ে আমাদের নেত্রী সাজসজ্জা বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। দলের এমনি মুহূর্তে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে ব্যস্ত সময় পার করছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল নেতারা। মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, সিটি করপোরেশনের মেয়র, ঢাকার সংসদ-সদস্য এবং দলের সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে প্রতিনিয়ত নিজেদের মধ্যে সম্পন্ন হচ্ছে বৈঠক। সেখানে প্রতিটা কর্মযজ্ঞের সঙ্গে সম্পৃক্তদের সঙ্গে লিয়াজোঁ ও অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা হচ্ছে যাতে কোথাও কোনো ভূল বা অসম্পপূর্ণ কিছু না থাকে। এ ব্যাপারে সর্বশেষ গত ১০ জুন সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক করা হয়। এর আগে ৯ জুন রোববার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্লাটিনামজয়ন্তীর কর্মসূচি সফল করতে ইতোমধ্যে সব জেলা-উপজেলায় দলের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
২৩ জুন এর কর্মসূচি
২৩ তারিখে সকালে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে প্লাটিনামজন্মজয়ন্তীর শুভ উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে ধানমন্ডি ৩২ বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত আনন্দ র্যালি করা হবে। বিকাল ৩টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হবে। ঢাকা সিটিতে সাইকেল র্যালি, রবীন্দ্র সরোবর ও হাতিরঝিলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়াও সারা দেশে এতিমখানা ও হাসপাতাল এবং কর্মজীবী, গরিব, অসহায় ও দুস্থ মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি থাকবে। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে ব্যস্ত প্রতিটা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা সমন্বয় করে এগিয়ে যাচ্ছেন।
