২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ১০:০১:৪২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


যুক্তরাষ্ট্রে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে শিক্ষার্থীদের জটিলতা
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০৮-২০২২
যুক্তরাষ্ট্রে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে শিক্ষার্থীদের জটিলতা


যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার কোর্সে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেলেও বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, তারা দূতাবাস থেকে ভিসা পেতে গিয়ে জটিলতায় পড়ছেন। ফলে অনেক শিক্ষার্থীরই ভিসা আবেদন আটকা পড়েছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছে, তারা স্টুডেন্ট ভিসা সমস্যার সমাধানের জন্য কাজ করছে। প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৯ লাখ ১৪ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যায় বলে মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে।গত বছর বাংলাদেশ থেকে ৮ হাজার ৫৯৮ জন শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে গিয়েছে বলে দূতাবাস জানিয়েছে।

সাধারণত বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়‘ফল’ ও ‘স্প্রিং’ সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে থাকে। আগস্ট মাসের শেষ থেকে ফল সেমিস্টার শুরু হয়ে থাকে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা সাধারণত ফল সেমিস্টারেই বেশি ভর্তি হয়ে থাকেন।কিন্তু এই বছর ফল সেমিস্টার ধরতে গিয়ে মার্কিন ভিসা জটিলতায় পড়ার কথা জানিয়েছেন অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী।

ভিসা নিয়ে জটিলতা

বাংলাদেশের একজন শিক্ষার্থী পিএইচডি করতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে।তিনি জুন মাসের শেষ সপ্তাহে ভিসা আবেদন জমা দেয়ার পর তাকে ’অ্যাপ্রুভাল’ জানিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন ভিসা কর্মকর্তারা। অনুমোদনের টোকেন হিসাবে তাকে নীল লিফলেটও দেয়া হয়। তখন বলা হয়েছিল, দুই সপ্তাহের পর ভিসাসহ পাসপোর্ট ফেরত পাবেন।কিন্তু তারপর আমাকে একটি ই-মেইলে জানানো হয়, আমার ভিসা আবেদন ’অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ প্রসেসে’ আছে। মাস পার হয়ে গেছে, এখনো কোন জবাব পাওয়া যায়নি। অথচ আমার কোর্স শুরু হয়ে যাবে আর দুই সপ্তাহের মধ্যে। অনিশ্চয়তার কারণে কোন প্রস্তুতিও শুরু করতে পারছি না। কোর্স শুরু হওয়ার মধ্যে যেতে না পারলে আমার ফান্ড বাতিল হয়ে যাবে।

তার মতো আরো অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী একই রকম শঙ্কায় রয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকা দূতাবাস থেকে পয়লা আগস্ট ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানতে চাওয়া হয় যে, ভিসা নিয়ে কারো কোনোপ্রশ্ন আছে কিনা। সেখানে অনেকেই তাদের ভিসা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার ব্যাপারে মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করেছেন।

যুবায়ের জামান নামের একজন সেখানে অনুরোধ করেছেন, তিনি ২৪ জুন ভিসা ইন্টারভিউ দিয়েছেন, তাকে ভিসা কর্মকর্তা অনুমোদনের কথা জানিয়ে সবুজ লিফলেট দিয়েছেন। কিন্তু পরে তাকে জানানো হয়, তিনি এপি অর্থাৎ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ প্রসেসে রয়েছেন। অথচ তার ফ্লাইট ছিল, পয়লা আগস্ট, যা তিনি মিস করতে বাধ্য হয়েছেন।তিনি বলছেন ৮ আগস্টের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে না পারলে তার টিচার্স অ্যাসিস্ট্যান্টশিপ বাতিল হয়ে যাবে। সব মিলিয়ে তিনি হতাশায়ভুগছেন।

মো. দেলোয়ার হোসাইন নামে আরেকজন লিখেছেন, তার ক্লাস শুরু হওয়ার কথা রয়েছে আগস্ট মাসে। কিন্তু তার আবেদন এখনো অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ প্রসেসে রয়েছে বলে দূতাবাসের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে। আবেদন প্রক্রিয়ার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য তিনি অনুরোধ করেছেন।

সাইফুল ইসলাম নামে আরেকজন মন্তব্য করেছেন, তার মতো অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর ভর্তি এবং অ্যাসিস্ট্যান্টশিপ বাতিল হয়ে যাবে যদি তারা সময়মতো ভিসা না পান।

যুক্তরাষ্ট্রে পড়শোনার বিষয় নিয়েএকটি ফেসবুক গ্রুপে দেখা গেছে, এরকম তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর আবেদন আটকে রয়েছে। তাদের বেশিরভাগই পিএইচডি বা মাস্টার্স কোর্সে ভর্তি হয়েছেন। সেখানেও অনেকে মন্তব্য করেছেন, একমাস বা দেড়মাস আগে তারা ভিসার জন্য সাক্ষাৎকার দিলেও এখনো কোনো জবাব পাননি। আবার অনেকে ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাচ্ছেন না বলেও লিখেছেন।

কী বলছে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস

দূতাবাসের মুখপাত্র জেফ রাইডেনাওয়ার বলেছেন, শিক্ষার্থী ভিসা দ্রুত দিতে তারা বিশেষ ক্যাম্পেইন করার কথা ভাবছেন। এজন্য ভিসাপ্রার্থীদের সাক্ষাৎকারের জন্য ’সুপার ফ্রাইডে’ আয়োজন করেন। মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে সারা বিশ্বেই শিক্ষার্থী বিনিময় ব্যবস্থার ওপর প্রভাব পড়েছে।

দূতাবাস জানিয়েছে, যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব তারা এই ভিসা জটিলতা দূর করার চেষ্টা করছে। ফল সেমিস্টার বা শরৎকালীন সেমিস্টার শুরু হওয়ার আগেই যাতে যতো বেশি সম্ভব বাংলাদেশি শিক্ষার্থী সাক্ষাৎকার দিতে পারে, তারা সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

’অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ প্রসেস’ বিষয়ে মার্কিন দূতাবাস ব্যাখ্যা দিয়েছে, কোনো কোনো ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে আরো বেশি প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার দরকার হয়, যেজন্য সাক্ষাৎকারের পরেও বাড়তি সময় লাগতে পারে।

 তারা আরো বলেন, আমরা উপলব্ধি করি যে আবেদনকারীদের সময় নিয়ে টানাটানি রয়েছে, তাই আমরা যতোদ্রুত সম্ভব এই অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ প্রসেস সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি। সেজন্য অনেক সময়কনস্যুলার অফিসের বাড়তি তথ্যের প্রয়োজন হতে পারে। আবেদনকারীদের অনুরোধ করবো, কোন প্রশ্ন করা হলে তারা যেন দ্রুত সেসব উত্তর পাঠিয়ে দেন। তারা যতোদ্রুত এটা করবেন, ততোদ্রুত ভিসা অফিসার সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

ইন্টারন্যাশনাল ওপেন ডোরস রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিশ্বের যেসব দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি গেছে, বাংলাদেশ সেই তালিকায় ১৪ নম্বরে রয়েছে। যেখানে ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশের র‌্যাংকিং ছিল ১৭তম।গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা তিনগুণ বেড়েছে।

 

শেয়ার করুন