২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৫:১১:৩৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :


চিটাগাং অ্যাসোসিয়েশন
বৈধ দাবিদাররাই হারলেন মামলায়
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০৮-২০২২
বৈধ দাবিদাররাই হারলেন মামলায় ২০ মে, ২০২২ বাংলাদেশ প্লাজা, জ্যাকসন হাইটস, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র নিউইয়র্কে চিটাগাং অ্যাসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা’র সংবাদ সম্মেলন/ফাইল ছবি


প্রবাসের অন্যতম আঞ্চলিক সংগঠন চিটাগাং অ্যাসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা ইনক। ২০২১ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই সংগঠনের নেতৃত্ব দুভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। উভয়পক্ষই নিজেদের বৈধ বলে দাবি করে আসছে। কিন্তু এই বৈধতার সার্টিফিকেট দেবে কে? নির্বাচনী জটিলতায় এবং ক্ষমতাসীন কমিটির কারণে মূলত এই সংগঠন বিভক্ত হয়ে পড়ে। যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয় তিনি ছিলেন ক্ষমতাসীনদের পক্ষের। ক্ষমতাসীনরা যা বলতেন তাই তিনি করতেন। মূলত তার কারণেই ক্ষমতাসীনরা লোক দেখানো নির্বাচন করে ক্ষমতায় রয়েছেন।

নির্বাচন কমিশন এবং ক্ষমতাসীন কমিটির স্বেচ্ছাচারিতার কারণেই চিটাগাং অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সেই ক্ষোভের কারণে চিটাগাং অ্যাসোসিয়েশনের অধিকাংশ সদস্য ওই নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অনাস্থাজ্ঞাপন করেন। সেই অনাস্থার কারণেই সাধারণ সদস্যরা বিশেষ জরুরি সাধারণ সভা আহŸান করেন। সেই বিশেষ জরুরি সাধারণ সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ব্রæকলিনের একটি রেস্টুরেন্টে। সেই সভায় চিটাগাং অ্যাসোসিয়েশনের বিপুলসংখ্যক সদস্য এবং নেতা উপস্থিত ছিলেন। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতাকারী মনির-সেলিম প্যানেলের প্রার্থীরা। সেই সভায় অনেক সাবেক কর্মকর্তা এবং নির্বাচর কমিশনের সাবেক এবং পদত্যাগী কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সেই সভায় সভাপতিত্ব করেন ওই সময়ে বা ওই নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী মনির আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম।

ওই বিশেষ সাধারণ সভায় চিটাগাং অ্যাসোসিয়েশনের পুতুল নির্বাচন কমিশনকে বাদ দিয়ে নতুন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। সেই নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। সেই তফসিল অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে মনির আহমেদ সভাপতি এবং মোহাম্মদ সেলিম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয় ২০২১ সালের ১১ মে। অন্যদিকে পুতুল নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক নিয়ম কানুন না মেনেই আরেকটি নির্বাচন করেন। সেই লোক দেখানোর নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয় একই সালের ২৯ মে। সেখানে মোহাম্মদ আহসান হাবিবকে সভাপতি এবং মোহাম্মদ এম বিল্লাহকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। দুটো কমিটিই তাদের কর্মকাÐ পরিচালনা করতে থাকে। যেহেতু আগেও তারা ক্ষমতায় ছিল, সেহেতু তাদের কাছে সমিতির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং ভবন দখলে থাকে। একটি অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে একবার উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। কিন্তু পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এখনো চট্টগ্রাম সমিাতর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং ভবন আহসান হাবিব এবং বিল্লাহ নেতৃাত্বাধীন কমিটির কাছে রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে ২০১৪ সাল থেকেই চট্টগ্রাম সমিতির কোনো হিসাব দেয়া হচ্ছে না। তারাই ভাড়া তুলছে এবং তারাই খরচ করছে। এ নিয়ে মনির আহমেদ এবং মোহাম্মদ সেলিমের নেতৃত্বাধীন কমিটি মামলা দায়ের করে। সেই মামলা এখনো চলছে।

অন্যদিকে মনির-সেলিমের নেতৃত্বাধীন কমিটি চিটাগাং অ্যাসোসিয়েশনের নামে ২০২২ সালের ২২ মে মেলা ঘোষণা করে। মেলার সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে মোহাম্মদ আহসান হাবিব এবং মোহাম্মদ এম বিল্লাহ বাদী হয়ে মামলা দায়ের কারেন। সেই সাথে চিটাগাং অ্যাসোসিয়েশনকেও বাদী করা হয়। মামলাটি করা হয় কিয় কাউন্টিতে ১৯ মে ২০২২ সালে। মামলার ইনডেস্ক নম্বর হচ্ছে ৫১৪৫৮১/২০২২। মামলায় বিবাদী করা হয় মনির আহমেদ, মোহাম্মদ সেলিম, মোহাম্মদ আবু তাহের, মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, মীর কাদের রাসেল, মাকসুদুল হক চৌধুরী, কাজী শাখাওয়াত হোসেন, মোর্শেদ আর চৌধুরী, হাসান চৌধুরী ও আবু তালেব চৌধুরী চান্দুকে।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, তারাই চিটাগাং অ্যাসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকার বৈধ কমিটি। তারা যেহেতু বৈধ কমিটি সেহেতু চিটাগাং অ্যাসোসিয়েশনের নাম অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারবে না এবং সংগঠনের নাম ব্যবহার করে তারা মেলা বা অন্য কোনো অনুষ্ঠান করতে পারবে না।

জানা গেছে, এই মামলার দুটো শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে মাননীয় আদালত গত ৯ আগস্ট ২০২২ সালে রায় ঘোষণা করে। সেই রায়ে বৈধ কমিটি দাবিদারদের সকল দাবি খারিজ করা হয়। মামলার এই রায়ে বৈধ কমিটি দাবিদাররাই হারলেন। মাননীয় আদালত তাদের ডকুমেন্ট দেখে তা ডিনাই করে। ফলে বৈধ কমিটির দাবিদাররা আর নিজেদের বৈধ বলার আর কোনো অধিকার রাখেন কি না তা চিটাগাং অ্যাসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা ইনকের সদস্যদের প্রশ্ন? এই রায়ের ফলে চিটাগাং অ্যাসোসিয়েশনের নাম ব্যবহার করতে পারবেন মনির-সেলিমের নেতৃত্বাধীন কমিটি।


শেয়ার করুন