১৯ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ১১:২২:০১ অপরাহ্ন


নির্বাচনের তারিখ এবং কমিশনের নাম ঘোষণা
বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির সম্প্রীতির সাধারণ সভা
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৯-২০২২
বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির সম্প্রীতির সাধারণ সভা সাধারণ সভায় উপস্থিতির একাংশ


প্রবাসের অন্যতম আঞ্চলিক এবং আদর্শিক সংগঠন বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি। বৃহত্তর নোয়াখালীবাসীর প্রাণের সংগঠন বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির সাধারণ সভা গত ২৭ আগস্ট সন্ধ্যায় সংগঠনে ব্রুকলিনস্থ নিজস্ব ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির প্রবাসের একটি অনুকরণীয় সংগঠনে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে সাবেক সভাপতি আব্দুর রব মিয়া, বর্তমান সভাপতি নাজমুল হাসান মানিক এবং সাধারণ সম্পাদক জাহিদ মিন্টুর দক্ষ পরিচালনায় বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি নোয়াখালীবাসীর গর্বের সংগঠনে পরিণত হয়েছে। এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ মিন্টু শুধু বৃহত্তর নোয়াখালীবাসীর অলংকার এবং অহংকার নয়, তাকে পুরো বাংলাদেশি কমিউনিটি অহংকার মনে করে। বিশেষ করে তার মানব সেবার জন্য। মানব সেবায় তিনি অতুলনীয়। যে সংগঠন প্রবাসের সেরা সংগঠন সেই সংগঠনের সাধারণ সভাও সেরা। কারণ বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির সাধারণ সভা সৌহার্দ্য সম্প্রীতির মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। হল ভর্তি সাধারণ সদস্যরা বর্তমান কমিটির কর্মকান্ডের ভ‚য়সী প্রশংসা করেছেন। এই কমিটিই নোয়াখালী সোসাইটির সবচেয়ে গ্রহণ যোগ্য কমিটি। এই কমিটির নেতৃত্বেই এই সংগঠনের বর্তমানে দুটো নিজস্ব ভবন রয়েছে, ওয়াশিংটন মোমোরিয়ালে নিজস্ব কবর স্থান রয়েছে। প্রবাসের একটি সংগঠন যে সংগঠনের সদস্য পদ গ্রহণ করেলে লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই। মানবধর্মী কর্মকান্ড এবং নোয়াখালীবাসীকে দুটো ভবন দিয়ে বর্তমান কমিটি নোয়াখালীবাসীর মুখ উজ্জ্বল করেছেন।

সেই আদর্শিক সংগঠনের সাধারণ সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি নাজমুল হাসান মানিক এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক জাহিদ মিন্টু। এই সময় মঞ্চে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাবেক সভাপতি আব্দুর রব মিয়া, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হাজী মফিজুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ মহি উদ্দিন। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ট্রাস্টি বোর্ড এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যসহ সাধারণ সদস্যরা।

সহ-সাধারণ সম্পাদক ইউছুপ জসীমের কোরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে সাধারণ সভা শুরু হয়। সাধারণ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গোলাম কিবরিয়া, ইউছুপ জসীম, আহসানুল্লাহ বাচ্চু, জাহাঙ্গীর সরওয়ার্দী, আনোয়ার হোসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার সোহেল হেলাল, হাজী শফিউল্লাহ, খোকন মোশাররফ, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তাজু মিয়া, মোশাররফ হোসেন সবুজ, রফিকুল ইসলাম ভ‚ইয়া, শাহীদুল্লাহ কায়সার প্রমুখ।

আলোচনা পর্ব শেষে সাধারণ সম্পাদক জাহিদ মিন্টু সাংগঠনিক কার্যক্রম তুলে ধরে বলেন, এই প্রবাসে আমার দুটো পরিবার। একটি হচ্ছে আমার নিজের পরিবার, অন্যটি হচ্ছে বৃহত্তর নোয়াখালীবাসী। তিনি বলেন, আমি কাউকে নয়, আল্লাহকে ভয় করে আমি দায়িত্ব পালন করি। কারণ আপনারা আমাদের যে আমানত দিয়েছেন সেই আমনত আমি রক্ষা করি। তিনি বলেন, আমাদের এখানে বাংলা স্কুল চালু রয়েছে, কাউন্সিলওম্যান সাহানা হানিফ সপ্তাহে বুধবার আমাদের অফিসে বসেন এবং আমাদের আপনাদের সকল প্রকার লিগ্যাল কনসালন্টিং দিয়ে থাকেন। তিনি তাছাড়া তার সহযোগীরা এখানে থাকেন। আমাদের এই ভবনে আমরা আপনাদের স্বার্থে বিনামূল্যে কনস্যুলেটে সার্ভিস চালু রেখেছি। মাঝখানে কে বা কারা অভিযোগ করেছিলো আমরা নাকি অর্থের বিনিময়ে এই কাজ করি। সেটা অবশ্য আমরা ভুল প্রমাণ করেছি। আমাদের এখানে কনস্যুলেটে সার্ভিস চালু থাকলে আমাদের প্রায় ২ হাজার ডলারের মতো খরচ হয়। এই অর্থ আমরা যারা কমিটিতে আছি তারাই ব্যয় করি। সংগঠনের কোন অর্থ খরচ করি না। আমাদের এখানে ড্রামের কার্যক্রম চলে। এর ফলে অনেকেই উপকৃত হচ্ছেন। তিনি বলেন, আমাদের এই সংগঠনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩০ অক্টোর। সেই সঙ্গে তিনি নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন। তিনি আরো বলেন, করোনা মহামারির কারণে আমরা ২০২০ এবং ২১ সালের সাধারণ সভা করতে পারিনি। এই মধ্যে আমরা ৫০৫ ম্যাকডোনাল্ড এভিনিউতে বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির দ্বিতীয় ভবন ক্রয় করেছি। আশা করছি আমাদের দায়িত্ব শেষ করার আগেই এই বাড়ির মূল্য পরিশোধ করবো। আমাদের অ্যাকাউন্টে যে অর্থ আছে, তার সাথে আপনাদের সহযোগিতা লাগবে। আগেও আমরা সহযোগিতা নিয়েছি এবং সবার অর্থ সময়মতো ফেরত দিয়েছি। তিনি বলেন, আমাদের দায়িত্ব পালনকালে আমরা আপনাদের প্রায় ১.১ মিলিয়ন ডলারের সম্পদ করে দিয়েছি। তিনি বলেন, গত ২৫ আগস্ট পর্যন্ত আমাদের একাউন্টে রয়েছে প্রায় ৫ লাখ ৭৬ হাজার ২৯০ ডলার ৫৮ সেন্ট। ইতিমধ্যেই আপনাদের দুটো রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। সেই রিপোর্টে আপনারা দেখতে পারেন। প্রথম বাড়ির অর্থ হাজী মফিজুর রহমানের সময় পরিশোধ করা হয়। তিনি বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির সদস্যদের বেনিফিট ঘোষণা করেন। যা আগামী ১ জানুয়ারী ২০২৩ সাল থেকে কার্যকর করা হবে। আগে সদস্যদের মৃত্যুর পর দেয়া হতো ৪ হাজার ডলার, এখন দেয়া হবে ৫ হাজার ডলার, আমেরিকার বাইরে মারা গেলে আগে দেয়া হতো ২৫০০ ডলার, এখন দেয়া হবে ৩ হাজার ডলার। এ ছাড়ার আজীন সদস্য ফি ১ হাজার ডলারের পরিবর্তে ১৫ ডলার করা হয়। বয়সভিত্তিক এই চাঁদার ভিন্নতাও রয়েছে। মাসিক সদস্য ফি ৮০ ডলারের পরিবর্তে ১শত ডলার করা হয়েছে। ৫৯ থেকে ৬৫ বয়সীদের লাইফ মেম্বার ফি ১৮০০ ডলার করা হয়েছে। যারা বিনিফিট নেবেন তাদেরকেও সদস্য হতে হবে। তিনি আরো বলেন, মৃত্যু ব্যক্তিকে যারা সদস্য করতে চায়, তাদের সম্পর্কে আমাদের সমর্ত হতে হবে এবং মামলাবাজরা যেন কোন পদে আসতে না পারে সে ব্যাপারে আপনারা লক্ষ্য রাখবেন।

কোষাধ্যক্ষ মহি উদ্দিন ২০১৯-২০ এবং ২০২১ সালের বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করেন। কোষাধ্যক্ষের রিপোর্টের উপর অনেকেই আলোচনা করেন। বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সাধারণ সম্পাদক জাহিদ মিন্টু।

সাবেক সভাপতি আব্দুর রব মিয়া বলেন, আমার বন্ধুরা যখন আমাকে সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয় তখন সাধারণ সম্পাদক হিসাবে জাহিদ মিন্টুকে দেয়া হয়। নতুন প্রজন্মের ছেলের সাথে আমি কীভাবে মানিয়ে নেব তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেলাম। কিন্তু তার সাথে কাজ করতে গিয়ে দেখলাম সে খুবই সৎ এবং রাইট সেক্রেটারি। আবার জহিদ মিন্টুও বলেন, আমি রব ভাই’র কাছ থেকে কাজ শিখেছি। তিনি আমাকে তার সন্তানের মত স্ণেহ করতেন।

ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হাজী মফিজুর রহমান বলেন, আমার সময়ই এই সংগঠনের ভবটি ঋণ মৃক্ত হয়। তিনি তার বক্তব্যে আলোচকদের বক্তব্যের জের ধরে বলেন, সকলের শুভ বুদ্ধির উদয় হলে আমরাই কোম্পানীগঞ্জের সমস্যার সমাধান করতে পারবো। তিনি বর্তমান কমিটি এবং জাহিদ মিন্টুর প্রশংসা করে গঠনতন্ত্র সংশোধন করে আরো এক মেয়াদে তাকে সাধারণ সম্পাদক থাকার প্রস্তাব করেন। উপস্থিত প্রায় সকলেই তা পাশ করেন। 

সভাপতি নাজমুল হাসান মানিক সাধারণ সভাকে সফল করার জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

শেয়ার করুন