২৯ মার্চ ২০১২, শুক্রবার, ০৪:২৫:৫২ অপরাহ্ন


ডিসেম্বর ’২২-এর মধ্যেই জাতীয় সম্মেলন
সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদের, নাকি অন্য কেউ
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০৯-২০২২
সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদের, নাকি অন্য কেউ


ডিসেম্বর ২০২২ এর মধ্যেই আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন। ইতিমধ্যে বিষয়টা নিশ্চিতও করেছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। দায়িত্ব বন্টন করে দিয়ে সম্মেলন সফল করার কাজগুলো সেরে ফেলা হচ্ছে। যেখানে কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ, সেখানে কমিটি প্রদান। এছাড়াও জাতীয় সম্মেলনের আগে বিভিন্নকাজকর্মগুলো গুছিয়ে আনছে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি।

তবে ওই সম্মেলন ঘিরে একটাই আকর্ষণ। কে হচ্ছেন নতুন সাধারণ সম্পাদক। ওবায়দুল কাদের কী থেকে যাবেন না সে স্থানে দায়িত্বে নিয়ে আসা হবে নতুন কাউকে। এটা আওয়ামী লীগের খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদ। তবে বিভিন্ন সূত্র জানাচ্ছে ওবায়দুল কাদের যেভাবে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন বা দিচ্ছেন তার স্থলাভিষিক্ত খুঁজে বের করা কঠিন। কারণ তার রয়েছে সর্বমহলে গ্রহণযোগ্যতা। তার বাচনভঙ্গি, দায়িত্ব নিয়ে কথা বলা। তার কন্ট্রোলিং পাওয়ার। সবার কাছে সমান গ্রহণযোগ্যতা এমন দ্বিতীয় ব্যাক্তি কে আছেন সেটা খোঁজা শুরু আগ থেকেই। অবশ্যই এ ব্যাপাটা নিয়ে দলীয় প্রধান শর্টলিস্ট অবশ্যই করে ফেলেছেন। তার মধ্যে থেকেই কাউকে না কাউকে দেয়া হবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। তবে ওবায়দুল কাদেরের ওপর আর দায়িত্বটা রাখার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এমনিতেই তিনি ভীষণ অসুস্থ। মৃত্যুর দরজা থেকে আল্লাহ তাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। অসুস্থতা এখনও। তাছাড়া সামনেই দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। ফলে একজন সাধারণ সম্পাদকের ওপর অনেক প্রেশার। দলকে সামলানো এমনকি দেশের রাজনীতিতেও তার থাকতে হবে বিচক্ষণতা। 

কেমন আছেন কে? 

আলোচনার টেবিলে অন্তত তিনজনের নাম উঠে এসেছে ইতিমধ্যে। একজন জাহাঙ্গীর কবির নানক। বাহাউদ্দিন নাসিম ও সোহেল তাজ। দীর্ঘদিন ক্ষমতাসীন দলের থেকে দূরে সোহেল তাজ। অভিমান করে বা মতের অমিলের কারণে ছেড়ে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রিত্ব। দলীয় প্রধানের খুবই আস্থাভাজন ও স্নেহের মানুষ হলেও তাকে বহু চেষ্টা করেও ফেরাতে পারেননি। দীর্ঘদিন পর আবারো তার সঙ্গে আলোচনা হয়। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে তার দায়িত্ব নেয়ার প্রসঙ্গ উঠলে তিনি রাজি হন। এ ব্যাপারে মিডিয়ায় তিনি বক্তব্যও দিয়েছেন। তার নিজস্ব চয়েস নেই। সভাপতি যে দায়িত্বের জন্য তাকে নির্বাচিত করবেন তিনি সেটাই মাথা পেতে নেবেন বলে ইতিমধ্যে জানিয়েও দিয়েছেন। 

অন্য দু’জনের মধ্যে জাহাঙ্গীর কবির নানকের নাম সর্বাগ্রে, পরীক্ষিত সৈনিক। বাহাউদ্দিন নাসিমও সেই একই। দু’জনেরই সমান গ্রহণযোগ্যতা। রয়েছে দলের প্রতি তাদের আনুগত্য। ফলে দায়িত্ব পেলে সুন্দরভাবেই এ দু’জনই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার যোগ্যতা রাখেন। এদের মধ্যে অ্যাডভান্টেজ কে সেটা বললে বাহাউদ্দিন নাসিমকে এগিয়ে রাখা যায়। তবে দিন শেষে, আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের সিদ্ধান্ত। দলীয় প্রধানের মতো। এসবের সমন্বয়ে যাকে নির্বাচিত করা হবে তিনিই দায়িত্ব নেবেন ওই গুরুত্বপূর্ণ পদের। 

তবে দলের অন্যপদেও রয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বিতা। ওই তিন নামের বাইরেও অনেকেরই রয়েছে সাধারণ সম্পাদকের চোখ। বিশেষ করে হাছান মাহমুদ, মাহবুবুল আলম হানিফ, মির্জা আজম প্রমুখদেরও ইচ্ছা গুরুত্বপূর্ণ ওই পদে যাওয়ার। 

ওবায়দুল কাদের নিজে কী ভাবছেন সেটা জানা না গেলেও ওই পদে থেকে যাওয়ার ইচ্ছা তারও থাকা অস্বাভাবিক নয়। তবে তার শরীরটা- এ চিন্তার অন্তরায়। তাই বলে তিনি চুপচাপ তা নয়। সম্প্রতি সময়ে যে ক’জন আওয়ামী লীগ নেতা কথা বলছেন। বিশেষ করে বিএনপির বিরুদ্ধে সমানতালে মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র, ইকবাল হাসান মাহমুদ, আমীর খসরুদের বক্তব্যের জবাব দিয়ে আসছেন তার অন্যতম ওবায়দুল কাদের ও হাছান মাহমুদ। ফলে সবদিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্তটা নেয়া হবে ঐতিহ্যবাহী দলটির জাতীয় সম্মেলনে। 

বেনজীর আহমেদ    

৩০ সেপ্টেম্বর অবসরে যাচ্ছেন আইজিপি বেনজির আহমেদ। ইতিমধ্যে তার স্থলাভিষিক্ত কে হবেন সেটারও নিয়োগ হয়ে গেছে। এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি বেনজীর আহমেদের বিদায়ের। 

ইতিমধ্যে তাকে ঘিরেও জল্পনা। বেনজীর আহমেদ অবসরে যেয়ে মূলত কী করবেন। এ ব্যাপারে গুঞ্জন তিনি গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদে আসতে পারেন। সেটা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কোনো দায়িত্বেও হতে পারে। তবে তার জন্য পারফেক্ট ছিল কোনো বিদেশি দূতাবাস বা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা। কিন্তু তার ওপর রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্যাঙ্কশন। এটাই বড় সমস্যা। এ নিষেধাজ্ঞা তার ওপর থেকে উঠে গেলে তো সমস্যা নেই। না উঠলে ততোক্ষণ তাকে অনেক পছন্দনীয় পদ থেকে দূরেই থাকতে হবে। তবে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটিতে দায়িত্ব দেয়া হলে সেটা সে পালন করতে পারবেন। তবে সেটাতে তিনি আসবেন কি-না, নাকি তাকে ওইসব পদের জন্য বিবেচ্য হবেন কিনা সেটাও প্রশ্ন। যদিও সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরে (জাতিসংঘের আমন্ত্রণ) তিনি কয়েকটি সভাতে অংশ নিয়েছেন। যেখানে তিনি বক্তব্যও দিয়েছেন নিজের প্রসঙ্গেও। তবে এটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

শেয়ার করুন