১৯ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৭:২৭:৫০ অপরাহ্ন


দেশকে জহির উদ্দিন স্বপন
রাজনৈতিক নতুন বন্দোবস্তের কথা বলছি
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ।
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০৮-২০২২
রাজনৈতিক নতুন বন্দোবস্তের কথা বলছি জহির উদ্দিন স্বপন/ফাইল ছবি


বিএনপির সাবেক এমপি ও বিএনপির মিডিয়া সেলের আহবায়ক জহির উদ্দিন স্বপন বলেছেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি একটি অভুতপূর্ব সঙ্কটের মধ্যে পতিত হয়েছে। এমন একটি পরিস্থিতি যে কেবল দেশের মধেই যে বিরাজ করছে তা- না। চলমান বিশ্ব রাজনীতির ও অর্থনীতির যে একটা সঙ্কট তার সাথে সর্ম্পক রয়েছে আমাদের জাতীয় রাজনীতির বর্তমান সঙ্কটের সাথে। এ সঙ্কট থেকে সমাধান পেতে দেশের রাজনীতিবিদদেরকেই এর গভীরতা ও জটিলতা টা বুঝতে পারাটাই হচ্ছে প্রধান কাজ। এজন্য আমরা মাঠের রাজনৈতিক দলগুলি আসলে একটি রাজনৈতিক নতুন বন্দোবস্তের কথা বলছি।

দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পাশাপাশি আরো অনেক বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। আমেরিকা থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার জন্য সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ।

এতে ও ’৯০-এর এরশাদবিরোধী আন্দোলনের তুখোর ছাত্রনেতা জহির উদ্দিন স্বপন আরো বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলে সত্য আমরা বেশিরভাগ রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীরা আমাদের চিরায়ত যে অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান সেই লেন্স দিয়েই সমস্যাটা দেখার চেষ্টা করি। একারণে প্রকৃত অর্থে এধরনের সঙ্কটের সমাধানটা খুঁজে পাওয়াটা কঠিন হয়ে উঠে। আজকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ১৯৪৯ সালে জন্ম নেয়ার পরে পরবর্তীকালে সংগ্রাম আন্দোলন-এসবের সাথে যে তার একটি গৌরবময় ইতিহাস - সেখান থেকে বেরিয়ে এসে যে একটি আধুনিক স্বৈরতান্ত্রিক ধারায় যে রুপান্তরিত হয়েছে তা কিন্তু অনুভব করার ব্যাপার। কেবলমাত্র ক্ষমতার কারণে একটি দেশের এমন ঐতিহ্যবাহী দল কিভাবে তার মৌলিক গুণগত চরিত্রকে পরিবর্তন করে ফেলতে পারে-তাও দেখতে হবে। ফলে ক্ষমতাকে ঘিরে রাজনীতির যে গতি প্রবাহ এবং তার সাথে তাল মিলিয়ে মিলিয়ে রাজনীতির দলগুলি যে দিক দর্শন পরিবর্তন করার যে প্রবণতা- তারমধ্যেই আজকের রাজনীতির গভীর সঙ্কট নিহিত বলে আমি মনে করি। সমাজের বিকাশের ধারায় নানান রকম জটিল পরিস্থিতির মধ্যে পরিচালিত হবে ঠিকই। কিন্তু জটিল সমাজকে মানবকল্যাণমুখী করাটাই হচ্ছে রাজনীতিবিদদের প্রধান লক্ষ্য। এবং সে রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে নেতৃত্ব দেবে সে রাজনৈতিক দল। কিন্তু রাজনৈতিক দল মানবকল্যাণের পথে সে রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে ধাবমান করার বদলে ক্ষমতাকে আকড়ে থাকার জন্য বরঞ্চ সমাজের এই ধারা এবং এই গতিকে সুবিধাকেন্দ্রিক এবং অসমতার ভিত্তিতে দাঁড় করিয়ে ফেলছে। ফলে সাধারণ মানুষ দেশের জনগণ,সংখ্যাগরিষ্টদের মতামত,মানবিকতা উপার্জনেরসুযোগ- সুবিধার সমতা- একথা বললে যে জনকল্যাণের যে লক্ষ্য তা আজকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় চরমভাবে উপেক্ষিত।আর সেকারণে এখন দেখা যাচ্ছে ভোট একটি অপ্রয়োজনীয় প্রক্রিয়ায় পরিণত হয়েছে। ভোট পক্রিয়া নেই বললেই চলে। অর্থনৈতিক উপার্জনের ক্ষেত্রে সমস্ত প্রবৃদ্ধি অল্প কিছু লোকের হাতে কুক্ষিগত হচ্ছে। রাষ্ট্র এঅব-ব্যাস্থাকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে। এবং রাষ্ট্রকে এই অপকর্ম করার নেতৃত্ব ক্ষমতাসীন দল। ফলে রাজনীতিতে গণতন্ত্র জনগণের ভোটাধিকার এবং অর্থনীতির ক্ষেত্রে ন্যূনতম সমতা বিধান কল্যাণ করার চিন্তাই এ সমস্যার সমাধান করতে পারে। এর কোনো ব্যতয় আমাদের কাছে জানা নেই। 

দেশ: রাজনীতিতে এমন পরিস্থিতি বিএনপি আমলে ছিল না? 

জহিরউদ্দিন স্বপন : আমার এতক্ষণ আলোচনায় কিন্তু বিএনপি বা আওয়ামী লীগ নিয়ে তুলনামূলক আলোচনা করিনি। আমি একটি বিস্তৃত একটা প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করেছি। এবং অবশ্যই এই প্রেক্ষাপট শুধু এমুহূর্তের প্রেক্ষাপট নয়। শুরুতেই বলেছি এধরনের পরিস্থিতিটি উপলদ্ধি কেবল দেশের আওয়ামী লীগের মতো রাজনৈতিক দলই না বিএনপিসহ অন্যদলেও এব্যপারে উপলদ্ধি থাকতে হবে। যারা রাষ্ট্রক্ষমতা পরিচালনা করেছেন অতীতে এবং করবেন। এবং সে বিবেচনায় বিএনপি’র ক্ষমতাসীন আমলে এধরনের প্রেক্ষাপট অনুধাবন করার ক্ষেত্রে ঘাটতি ছিল একথা সত্যি। কিন্তু সচেতনভাবে এই রাষ্ট্র লুট করা, দুর্নীতি করা, জনগণের অভাব অনটনকে হাতিয়ায় হিসাবে ব্যবহার করা, রাষ্ট্রকে লুট করার জন্য ধনী গোষ্ঠীকে নানান ধরনের অজুহাত তৈরি করে দেয়া-এই যে একটা প্রাতিষ্ঠানিক দুনীতি,নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে আজকে দলীয় হাতিয়ারে পরিণত করা হয়েছে। এক কথায় পুরো রাষ্ট্রকে ক্ষমতাসীন একটি দলের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এটা কিন্তু রাষ্ট্রোনায়োকোচিত দায়িত্ব না। আজকে ক্ষমতাসীন দলের মূল লক্ষই হয়ে গেছে ক্ষমতায় থাকা। রাষ্ট্রকে শোষণ করা। এবং একটি লুটেরা শ্রেণী তৈরি করা। এবং এই ধারা অব্যাহত রাখা। জরগণের হাতে ক্ষমতা দেয়া, উপার্জন সবার মধ্যে বন্টন করা জনগণের কল্যাণ চিন্তা করার কাজে নেই। তবে হ্যাঁ বিএনপি’র শাসনামলে এসব চিন্তার মধ্যে ঘাটতি ছিল। বা তাদের এনিয়ে পরিকল্পনা করার ঘাটতি ছিল। বোঝাবুঝির ঘাটতি ছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার কিন্তু বুঝে শুনেই একটি গণবিরোধী নীতি অবলম্বন করেছে। এটাই হলো বিএনপি আমলের পার্থক্য। 

দেশ: আপনি কি বুঝাতে চাচ্ছেন যে সব দল মিলে দেশের সমস্যা সমাধানে সব দল বসে একটা সেটেলম্যান্টে আসতে হবে। সবাই মিলেই দেশকে গড়তে হবে-তাই নয় কি?

জহিরউদ্দিন স্বপন: আমি আসলে একটি রাজনৈতিক নতুন বন্দোবস্তের কথা বলছি। যেহেতু বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আসামীর কাঠগড়ায় তার নেতৃত্বে এবন্দোবস্ত হবে না। ফলে মধ্যস্থতাকারিদের সাহায্যেই একটি ফর্মূলা বের করতে হবে। এ সঙ্কট কিন্ত নতুন না। সেকারণেই কিন্তু আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ফর্মূলা বের করতে বাধ্য হয়েছিলাম। আওয়ামী লীগ এটা করেছিল। কিন্তু এটা বোঝা যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সেদিন গণতন্ত্রের লক্ষ্যেই এমন বন্দোবস্তের কথা বলেনি। কারণ নির্বাচনের আগেই সে বিএনপিকে বিপদগ্রস্থ ও সংকটগ্রস্থ করতে চেয়েছে। সে এটাকে অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করেছে। আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে গণতন্ত্রকে উত্তোরণের একটি মাধ্যম হিসাবে চায়নি। 

দেশ: আপনি আসলে মধ্যস্থতাকারী বলতে কাকে বুঝাচ্ছেন? তৃতীয় শক্তির হস্তক্ষেপ?

জহিরউদ্দিন স্বপন: মধ্যস্থতাকারী বলতে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার এই উত্তোরণটার জন্য যারা এ প্রক্রিয়ার প্রধান প্লেয়ার তথা আওয়ামী লীগ- বিএনপিসহ সব দলকে একটি তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে যাবে। এবং সে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার মাধ্যমে জনগণের হাতে ভোটাধিকার ব্যবস্থা প্রকৃত অর্থে চলে আসবে এবং তারপর সে ভোটাধিকার চর্চার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানগুলি সক্রিয় হবে। এবং এভাবেই জনগণ তার অধিকার চর্চা করবে। সে অধিকার চর্চার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র চলতে থাকবে। অবশ্য সামগ্রিক পক্রিয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলিকে একটা সমঝোতা দরকার। 

দেশ: আপনি বা আপনার দল কি চাচ্ছেন আমাদের দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এব্যাপারে কেউ নাক গলাক?  

জহিরউদ্দিন স্বপন: না-তো? আমিতো তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার কথা বলছি। যেমন বলা চলে আমরা আওয়ামী, বিএনপি দু-দলই মেনে নিয়েছিলান যে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি সরকার গঠনের কথা। আমরাতো আওয়ামী লীগ, বিএনপি’র বাইরে গিয়েতো সেদিন কিছু করিনি? সেটা কি বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়া ছিল? অখবা সেটা কি তৃতীয় শক্তি ছিল? তা না কিন্তু। বরং রাজনৈতিক পক্রিয়াকে শক্তিশালি করার মধ্য দিয়েই রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বহির্ভূত একটি অংশকে আমরা ক্ষমতায় বসিয়েছিলাম। আমি সেরকম একটা ব্যবস্থার কথাই বলছি। আমি বা আমরা বলছি রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে একটা সমঝোতার ব্যবস্থা। 

দেশ: আচ্ছা আপনারা আপনাদের দাবি নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম জোরদার কতে পারছেন না কেনো? দুর্বলতা কোথায়?  

জহিরউদ্দিন স্বপন: দেখেন রাষ্ট্র একসময় ছিল পুলিশ, গোয়েন্দা,রাইফেল বা বাই সাইকেল নির্ভর। কিন্তু আধুনিক এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে সরকার একটি ডিজিটাল দৈত্যের চেহারা ধারণ করেছে। দেশের প্রত্যেকটি নাগরিককে সার্ভিলেন্সের মধ্যে আনা এখন রাষ্ট্রের জন্য কঠিন কাজ না। অন্যদিকে রাষ্ট্র পরিচালনায় থাকা ক্ষমতাসীনরা যদি এ ক্ষমতাকে নিজের দলের কাজে লাগায় এবং সে সুবিধামত গণহত্যা,রাষ্ট্র লুন্ঠন,দুর্নীতির পাশাপাশি দায়মুক্তির আইন তৈরি করে তাহলেতো প্রেক্ষাপট ভিন্ন হবে। কারণ এখানে রাষ্ট্র তো জনগণকে সেবা দিচ্ছে না। রাষ্ট্রতো কেবল ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার কাজে লাগছে। অতীতে রাষ্ট্রের চেহারা এমন ছিল না। ছিল না বলে এরশাদ বিরোধী আন্দোলন করতে পেরেছিলাম। এমনকি কি বিএনপির শাসনামলে তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সেভাবে আন্দোলন করতে পেরেছিল। এমুহূর্তে রাষ্ট্রের এমন চরিত্র পাল্টে যাওয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করাটা কঠিন। কতগুলি গুম, খুনের ইতিহাস আপনারাতো জানেন। 

দেশ: তাহলে কি আপনারা ভযে ঘরোয়া রাজনীতি করছেন?বিএনপি’র নেতাকর্মীরা কি ভয়ে ভীত?

জহিরউদ্দিন স্বপন: আপনি কি এই মুহূর্তে আত্মহত্যা করতে রাজি আছেন? (পাল্টা প্রশ্ন প্রতিবেদককে লক্ষ্য করে)। আপনাকে (প্রতিবেদককে লক্ষ্য করে) পাল্টা প্রশ্ন করলে উত্তরটা পাওয়া যাবে। প্রতিটি মানুষ সহজতভাবে জীবনের জন্যইতো লড়াই করে? হ্যাঁ নিশ্চয়তাটা সে যখন পায় যে এই আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমরা একটা সুফল কায়েম করতে পারবো। কিন্তু ক্ষমতায় বসে সরকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার কথা বলে ভীতু ভীতু বলে আক্রমণ করে তাহলেতো বলা যায় এরা- তো নৈরাজ্য চায়। সে তো সমাধান চায় না। আমি মনে করি এ প্রশ্নগুলি সৎ উদ্দেশ্যে করা না। আপনি বন্দুক কারো বুকে তাক করে যদি বলেন- তুমি ভয় পাচ্ছে? অবশ্য সে ভয় পাচ্ছে? কিন্তু আপনি যদি তাকে প্রশ্ন করেন আমার সে ক্ষমতা তাকে কি সম্মান করো? সে বলবে অবশ্যই না। আমার মনে হয় আপনি আমার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন। 

দেশ: এমন কথা শোনা যায় কোন একটি দেশের পক্ষ থেকে সরকারের ওপর আরো নিষেধাজ্ঞা দেয়া হউক সে আশায় বসে আছেন আপনারা মানে বিএনপি’র নেতাকর্মীরা?  

জহিরউদ্দিন স্বপন:শোনেন আমরা আশা করেছি বলেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন তা কিন্তু না। মার্কিন যুত্তরাষ্ট্র একটি আধুনিক রাষ্ট্র। সে তার মতো করেই সব কিছু করে। সে-টা সঠিক না বেঠিক সে বির্তকে আমরা যাবো না। সে তার মতোকরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর রিপোর্ট করে। বিভিন্ন ধরনের তৎপরতা মনিটরিং করে। সে বিবেচনায় বাংলাদেশকে চিহ্নিত করেছে। এখানে মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে। সেক্ষেত্রে তারাতো অপরাধীদেরও চিহ্নিত করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। অবাক হবো না যে তাদের মধ্যে আরো অনেক কর্নধার ও তাদের পরিবারের সদস্যরা নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়বে না। অবশ্য বিএনপি যদি ক্ষমতায় থাকতো ও তাদের মধ্যে কেউ এমন করলেওতো নিষেধাজ্ঞা আসতো। তাই বলে আপনি মনে করবেন না যে এধরনের আরো মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আশায় আমরা বসে আছি তা -না। তবে এধরনের নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পেছনে যদি বস্তুনিষ্ঠতা থাকে তাহলে আমাদের তাতে মনোযোগ থাকা উচিত, সে বস্তুষ্টিতার পক্ষে। 

দেশ: আপনি কি সমর্থন করেন একটা স্বাধীন দেশের বিরুদ্ধে এধরনের পদক্ষেপ?

জহিরউদ্দিন স্বপন: স্বাধীনতার মানে যদি মানবাধিকার লংঘন, তাহলে এই অমানবিক স্বাধীনতার চর্চার বিরুদ্ধে কিন্তু সবারই হস্তক্ষেপ করা উচিত। 

দেশ: আপনাদের দল বৃহত্তর ঐক্যের ডাক দিযেছেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সে ঐক্যে খুব একটা সাড়া মিলছে না। কারণ আপনাদের সাথে জামায়াতের সাথে সম্পৃক্ততা আছে। যে কারণে প্রগতিশীল দল বা ব্যক্তি ভিড়তে চাইছে না বিএনপি’র সাথে। 

জহিরউদ্দিন স্বপন: আপনার কাছে (প্রতিবেদককে উদ্দেশ্য করে)। এব্যপারে পর্যাপ্ত তথ্য নেই। গত কয়েকদিন আগেও তিনটি বাম দলের সাথে বৈঠক হয়েছে। 

দেশ: কিছু দল এসেছে,বাকিরা আসছে না...

জহিরউদ্দিন স্বপন: সরকারি বাম দল ছাড়া সবাই এসেছে আমাদের সাথে। সিপিবি বাসদ ছাড়া বাংলাদেশের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ দল বিএনপি’র সাথে আছে। তারা সবাই একমত হয়েছে যে এসরকারের অধীন কোনো অবাধ নির্বাচন হবে না। 

দেশ: জনগণ সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডে খুশি। তাই তারা বিএনপি’র আন্দোলনের ডাকে সাড়া দিচ্ছে না-এটা ঠিক।

জহিরউদ্দিন স্বপন :১৯৬৮ সালে পাকিস্তানের শাসক আউযুর খান তার একদশক পাশন করেছিলো। ইতিহাস ঘাটাঘাটি করলে দেখা যাবে যে সেসময় ছিল উন্নয়নের ঢাকা। আমাদের এই ঢাকা শহরের বড়ো বড়ো স্থাপনাই ছিল আইয়ুব খান আমলের। সে উন্নয়ন কিন্তু আইয়ুর খানে পতন ঠেকাতে পারেনি। এটা রাজনৈতিক বহির্ভূত একটা চিন্তা। স্বৈরশাসকদের একটা চিন্তা। 

দেশ: সরকারের প্রতি আপনার পরামর্শ কি?

জহিরউদ্দিন স্বপন:সরকারের কাছে আমার পরামর্শ এখনো সময় আছে পদত্যাগ করে অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা দিয়ে একটি সঠিক ব্যবস্থার মধ্যে নির্বাচন দিয়ে দেশে একটি গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার রুপান্তরের উদ্যোগ নেয়া উচিত। এর ব্যতয় অনেক বড়ো পরিনাম ডেকে নিয়ে আনতে পারে। একথা কিন্তু শ্রীলঙ্কার পতিত শাসক কিন্তু শোনেনি। একথা কোনো স্বৈরশাসকই তার চূড়ান্ত পরিণতির আগে শুনতে চায় না।


শেয়ার করুন