২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ১০:৫৫:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


জোনায়েদ সাকির বিশ্লেষণ
বিদ্যুৎখাতে সংকটের নেপথ্যে
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-১০-২০২২
বিদ্যুৎখাতে সংকটের নেপথ্যে জুনায়েদ সাকি


দেশজুড়ে বিদ্যুৎ সংকট ও লোডশেডিংয়ের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সরকারের লুটপাট ও আমদানিনির্ভর নীতির কারণেই বিদ্যুৎখাত আজ গভীর সংকটে নিমজ্জিত বলে মনে করছেন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তার মতে জ্বালানিখাতে এই সংকটময় পরিস্থিতিকে সরকার তৈরি ও ঘনীভূত করে এখন রিজার্ভ সংকটসহ সেগুলোর দায় অন্য বিষয়ের ওপর চাপাচ্ছে। বিদ্যুতের বিপর্যয় তৈরি করে এই সরকার জনগণের জীবনে নাভিশ্বাস তুলেছে এবং এরা দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে অনিশ্চয়তার পরিস্থিতি ডেকে এনেছে। 

জোনায়েদ সাকি ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেলের এ সংকটের কারণ খুঁজতে যেয়ে বলেন, ‘সরকার কথিত জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি’ ইউক্রেন যুদ্ধের ফলাফল নয়, বরং তাদের লুটপাটের নীতি-অব্যবস্থাপনার ফলাফল। আর সে সাথে সরকার বিদ্যুতখাতে নিজেদের ব্যর্থতাকে ঢাকার চেষ্টা করছে। এই সরকার ক্ষমতায় এসে বিদ্যুৎ নিয়ে মানুষের সংকট ও বিক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে লুটপাটের আয়োজন গড়ে তোলে। কুইক রেন্টালের বিভিন্ন কেন্দ্রকে বসিয়ে বসিয়ে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে গত ১৩ বছরে ৭০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়া হয়েছে এবং লুট করা হয়েছে। দেশীয় মালিকানা নিশ্চিত রেখে সমুদ্রের গ্যাস উত্তোলনের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।

অপরদিকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিনির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগের জন্য জনগণের দাবিকেও উপেক্ষা করেছে। বিশেষত এলএনজির ক্ষেত্রে সময়মতো দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি না করতে পারার ব্যর্থতা বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে খোলা বাজার থেকে বর্ধিত দামে এলএনজি ক্রয়ের চাপে দেশকে নিয়ে গেছে। লুটপাটের সুযোগ তৈরির জন্য পুরো বিদ্যুৎখাতকে আমদানিনির্ভর করে ফেলা হয়েছে। ক্ষমতার ছায়াতলে থাকা সুবিধাভোগীদের পকেটে জনগণের টাকা চালান করাই সরকারের বিদ্যুৎ নীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ফলে স্বনির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদনের যথাযথ নীতি গ্রহণ না করা, দুর্নীতি ও লুণ্ঠনের মহোৎসব এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে অতিরিক্ত মুনাফা ও সরকারের বর্ধিত আয়ের জোগান দেয়ার ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করার এই নীতির ফলাফলই পুঞ্জীভূত হয়ে আজকের সংকটের জন্ম দিয়েছে।

তারা আরো বলেন, বিদ্যুৎখাতকে অনিরাপদ করার সাথে সাথে শিল্প, কৃষি ও পুরো অর্থনীতিকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। সরকার চুরি, দুর্নীতি ও লুটপাট এবং ডলার পাচার করে পুরো রিজার্ভ খালি করে ফেলেছে। এখন তেল-গ্যাস-ফার্নেস অয়েল আমদানি করে এর ব্যয় মেটানোর সক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছে তারা। ফলে সৃষ্ট বিদ্যুৎ সংকটের কারণে বর্তমান বৈশ্বিক বাস্তবতায় তারা বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হতে বলছেন। অস্বাভাবিকভাবে লোডশেডিং বাড়ানোর ফলে দেশের শিল্প উৎপাদন, ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাকাল জীবন আরো অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হচ্ছে।

রোববার দেয়া এক বিবৃতিতে তারা আরো জানিয়েছে, এই সরকার দেশকে অর্থনৈতিক সংকটে ফেলে, জনগণের জীবনকে ভয়াবহ একটা বিপজ্জনক খাদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থার কারণে বাংলাদেশে যে লুটপাটতন্ত্র কায়েম হয়েছে যার ওপরে বসে শেখ হাসিনা ভয়াবহ ফ্যাসিবাদ এবং কর্তৃত্ববাদ কায়েম করতে পেরেছে। এই অবস্থা আমরা হতে দিতে পারি না। সরকার দেশকে দেউলিয়াত্বের দিকে নিয়ে যাবার আগেই নেতৃবৃন্দ জনগণের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটাতে জনগণের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

শেয়ার করুন