০১ মে ২০১২, বুধবার, ০৪:২৭:৪৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে এবার বন্দুকধারীর গুলিতে তিন আইনশৃংলাবাহিনীর সদস্য নিহত ‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ


‘একতরফা’ নির্বাচন এবার এতো সহজ হবে না-আমির খসরু
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৯-২০২৩
‘একতরফা’ নির্বাচন এবার এতো সহজ হবে না-আমির খসরু


‘একতরফা’ নির্বাচন এবার এতো সহজ হবে না, বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। গতকাল নির্বাচন নিয়ে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আজকে নির্বাচন কমিশনার আনিসুর রহমানের বক্তব্যের জবাবে সকালে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘শেখ হাসিনা (প্রধানমন্ত্রী) গতকাল বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনে আসতে চায় না। আজকে দেখলাম, একজন নির্বাচন কমিশনার সকালে বলেছেন, জানুয়ারি মাসের প্রথম সাপ্তাহে নির্বাচন হবে। আজকে থেকে তারা কাজ শুরু করেছেন। এটা কার নির্বাচন? কার নির্বাচন আপনারা করতেছে? বাংলাদেশের জনগনের নির্বাচন না কোনো একটি দলের নির্বাচন। মানুষকে বোকা ভাবছেন ওরা। নির্বাচনের একটা ঘোষণা দিলো আর নির্বাচন হয়ে গেলো, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা দিলো আর নির্বাচন হয়ে গেলো… এতো সহজ না।”

‘দুই ভয়ে সরকার’


খসরু বলেন, ‘‘ এই অবৈধ অনির্বাচিত সরকার ভয়ে জনগনের কাছে যেতে পারছে না। বিএনপির এক ভয়, নির্বাচনের আরেক ভয়। দুই ভয়ের মধ্যে তারা আছে। আর এদিকে জনগনের বাইরে রেখে ভোট চুরির প্রকল্প বাস্তবায়নে সবাইকে ব্যবহার করছে। এবার আর সেই কাজ হবে না। মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবার পিছপা হবে না। মুক্তিযুদ্ধের পরে এবার সবচেয়ে বড় যুদ্ধে তারা নেমেছে… এবার মানুষ জয়ী হবে।’’  আমির খসরু বলেন, ‘‘ বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ রাস্তায় নেমেছে তার অধিকার আদায়ের জন্য, তার ভোটাধিকার ফেরানোর জন্য, তার গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক, সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পাবার জন্য। লক্ষ মানুষের হৃদয়ে এই আন্দোলন দোলা দিচ্ছে বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত। প্রত্যেকদিন জিজ্ঞাসা করে আর কয়দিন। বাংলাদেশের জনগন প্রত্যেকদিন প্রত্যাশা করে কালকে একটা কিছু হবে, পরশু একটা কিছু হবে। কারণ পুরো বিষয়টা তাদের সহ্যের বাইরে চলে গেছে। অনেকে দুই বেলা খেতে পারতেছে না, অনেক ধার করে চলতেছে, অনেক মাছ-গোশত ছেড়ে দিয়ে সবজী খেয়ে চলছে, অনেকের পরিবারের চিকিতসা করতে পারছে না. ছেলে-মেয়েদের লেখা পড়া করতে পারছে না।”

সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের নসরুল হামিদ মিলনায়তনে গণতন্ত্র ফোরামের উদ্যোগে ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে ন্যায় বিচার, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রসঙ্গে’


খসরু বলেন, ‘‘ আজকে এর উদ্বোধন। উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে। এই উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতির কাঠামো তারা(সরকার) একেবারে ভেঙে দিয়েছে। ব্যাংকগুলোতে টাকা নাই, ব্যাংকগুলো থেকে লুটপাট করে বাইরে টাকা নিয়ে গেছে, বড় বড় প্রজেক্টের টাকার লুটপাট করে বাইরে টাকা নিয়ে গেছে। ওয়াশিংটন ভিত্তিক গ্লোভাল ফ্যাইনেন্সিয়াল ইনট্রিগ্রেটি হিসেবে প্রত্যেক বছর ৭/৮ বিলিয়ন টাকারা তারা বাইরে নিয়ে গেছে। অর্থাত এই ১৪/১৫ বছরে এক‘শ বিলিয়ন ডলার অর্থাত এক লক্ষ কোটি টাকার উপরে বিদেশে পাচার করেছে।”

তিনি বলেন, ‘‘ ব্যাংকের টাকা শেষ, রিজার্ভ শেষ, সরকারের তহবিলেও টাকা  নেই। এখন টাকা ছাপিয়ে তারা উন্নয়নের কথা বলছে। বাংলাদেশের মানুষের ওপরে ঋণের দায় দিয়ে যাচ্ছে তারা। তাদের লুটপাটের কারণে এই দায় দেশের মানুষকে শুধতে হবে। এই ঋণ এতো গুন বেড়েছে যে বাংলাদেশ আগামী দিনে এই ঋণ পরিশোধ করতে বাংলাদেশ বড় ধরনের সমস্যায় পড়বে। তারা বিদ্যুত উতপাদনের নামে ফিক্সাড চার্জ মানে বিদ্যুত না দিয়ে টাকা নিয়ে গেছে। আপনি চ্যালেঞ্জও করতে পারবেন না। আইন করে করা হয়েছে এটা। যে দেশের আইন করে দুর্নীতি হয়, আবার জনগনকে দেখাচ্ছে আমরা ব্রিজ করতেছি, টানেল করতেছি, এয়ারপোর্ট করতেছি। যে কোনো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত সরকার যদি ১৫ বছর একটানা থাকে এর তিনগুন কাজ হবে।”

খসরু বলেন, ‘‘ তারা দেশের অর্থনীতি সব ধবংস করে দিয়েছে। আমি এটার নাম দিয়েছি আওয়ামী মডেল অব ইকোনমিক্স। অর্থাত এই মডেলের কাজ হচ্ছে লুটপাট ছাড়া আর কিছু না।”

‘‘ এরা লুটপাট করবে আর এই টাকা পরিশোধ করতে হবে সাধারণ মানুষকে।” তিনি বলেন, ‘‘ আজকে যে একটা উদ্বোধন আছে। আরে এগুলো হচ্ছে স্বৈরাচারের আরেকটা বৈশিষ্ট্য। সে লটপাট করবে এবং উন্নয়ন দেখাতে গিয়ে তারা দুই-চার-পাঁচটা বড় বড় জিনিস এরকম করে। বিশ্বের সব স্বৈরশাসনের দেশে এটা দেখবেন। এই আমি এয়ারপোর্ট করছি, ওইটা করছি…। আইয়ুব খানের কথা মনে আছে। ওই আইয়ুব খানও উন্নয়নের গান গাইতো। আজকেও এরকম উন্নয়ন গল্প শুনাচ্ছে তারা। গণতন্ত্র ছাড়া, মানুষের অধিকার ছাড়া কোনো উন্নয়ন টেকসই হতে পারে না। ভয়ভীতির মধ্যে দেশকে রেখে এই অধিকার তাদেরকে কে দিয়েছে?”

সংগঠনের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে ও শরীফুল ইসলাম শাওনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, গাজীপুর জেলা সভাপতি ফজলুল হক মিলন, স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, ছাত্র দলের সাবেক নেতা আজমল হোসেন পাইলট প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

শেয়ার করুন