২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৩:০৬:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :


খলিল বিরিয়ানি হাউজ জ্যামাইকা শাখার গ্র্যান্ড ওপেনিং
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-১০-২০২২
খলিল বিরিয়ানি হাউজ জ্যামাইকা শাখার গ্র্যান্ড ওপেনিং ফিতা কেটে উদ্বোধন


খলিল বিরিয়ানি হাউজের স্বত্বাধিকারী খলিলুর রহমানের স্বপ্ন ছিলো বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যামাইকায় খলিল বিরিয়ানি হাউজের শাখা চালু করার। সেই লক্ষ্যেই তিনি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। অবশেষে তার সেই স্বপ্ন পূরণ হলো। নিউইয়র্কে বাঙালি মালিকানাধীন অন্যতম সেরা রেস্টুরেন্ট খলিল বিরিয়ানি হাউজের জ্যামাইকা শাখার গ্র্যান্ড ওপেনিং হয়েছে ১৯ অক্টোবর। বাঙালি অধ্যুষিত জ্যামাইকার ১৬৭-২০ হিলসাইড অ্যাভিনিউতে খাবারের মান নিয়ন্ত্রণকারী বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান নিউইয়র্কের ‘ইনস্টিটিউট অব কুলিনারি এডুকেশন’ থেকে সনদপ্রাপ্ত মো. খলিলুর রহমানের মালিকানাধীন খলিল বিরিয়ানি হাউজের জ্যামাইকা শাখার উদ্বোধন হয় এদিন বিকেলে। মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে পর ফিতা কেটে বর্ণাঢ্য আয়োজনে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয় নতুন এ শাখার।

প্রতিষ্ঠানটির শুভযাত্রা কামনা করে দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন জ্যামাইকার দারুস সালাম মসজিদের ইমাম ও খতিব মওলানা আব্দুল মুকিত। এ সময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন খলিল বিরিয়ানি হাউজের স্বত্বাধিকারী বিশিষ্ট রন্ধনশিল্পী মো. খলিলুর রহমান। প্রতিষ্ঠানটির শুভযাত্রাসহ দেশ, প্রবাস ও বিশ্ব মানবতার শান্তি ও কল্যাণ কামনায় দোয়া করা হয়। এরপর খলিল বিরিয়ানি হাউজের কর্ণধার মো. খলিলুর রহমান স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান ও সিটি কাউন্সিলম্যানসহ কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে ফিতা কেটে জ্যামাইকা শাখার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ সময় খলিলুর রহমান ছাড়াও নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান ডেভিড উইপ্রিন, সিটি কাউন্সিলম্যান জিম জিনারো, স্থানীয় পুলিশ প্রিসেঙ্কটের কমান্ডার, মূলধারার রাজনীতিক মোর্শেদ আলম, মাজেদা উদ্দিন, মোহাম্মদ এন মজুমদার, কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট এবিএম ওসমান গনি, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার প্রমুখ শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান ও সিটি কাউন্সিলম্যানের পক্ষ থেকে খলিলুর রহমানকে সাইটেশন প্রদান করা হয়। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলা এ অনুষ্ঠানে কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন। খলিল বিরিয়ানি হাউজের কর্ণধার মো. খলিলুর রহমান অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের স্বাগত জানান। জ্যামাইকায় বাঙালিদের প্রাণকেন্দ্র হিলসাইড এলাকায় খলিল বিরিয়ানি হাউজের আরেকটি শাখা উদ্বোধনের ঘটনাটি বেশ সাড়া জাগিয়েছে নিউইয়র্কের বাঙালি কমিউনিটিতে।

উদ্বোধন উপলক্ষে রেস্টুরেন্টটিতে দেখা যায় বাঙালিসহ অন্যান্য কমিউনিটির নানা বয়সী উৎসুক জনতার উপচেপড়া ভিড়। এদিন সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের তৈরি খাবার দিয়ে ৫ শতাধিক অতিথিকে আপ্যায়ন করা হয়। খলিলুর রহমান সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করে তার জ্যামাইকা শাখার গ্র্যান্ড ওপেনিংয়ে সময় স্বল্পতা এবং নানা ব্যস্ততার কারণে অনেককেই আমন্ত্রণ জানাতে পারেননি বলে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন।

বক্তারা তার সাফল্য কামনা করে বলেন, ভিন্ন স্বাদ, আধুনিক মান, রুচি ও স্বাস্থ্য সম্মত নানা খাবার পরিবেশনের মাধ্যমে খলিল বিরিয়ানি হাউজ নতুন প্রজন্মসহ কমিউনিটিতে ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছে। তারা বলেন, প্রবাসে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় শেফ মো. খলিলুর রহমান কমিউনিটির জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন।

অভিজ্ঞ শেফের গড়া আরেকটি রেস্টুরেন্ট গড়ে ওঠায় ভীষণ খুশি জ্যামাইকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তাদের প্রত্যাশা নতুন প্রজন্মের প্রতি লক্ষ্য রেখে আধুনিক রুচিসম্মত বিশুদ্ধ সব হালাল খাবারের নিশ্চয়তা থাকবে এখানে।

খলিল বিরিয়ানি হাউজের স্বত্বাধিকারী মো. খলিলুর রহমান জানান, কাস্টমারদের বিপুল চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রত্যাশা পূরণে খলিল বিরিয়ানি হাউজ জ্যামাইকায় শাখা খোলার সিদ্ধান্ত নিতে হয় তাকে। তিনি জানান, অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী-কাস্টমার তাকে জ্যামাইকায় শাখা খোলার অনুরোধ জানিয়ে আসছিলেন।

আমেরিকান সনদপ্রাপ্ত বাঙালি শেফ খলিল বলেন, ‘কাস্টমার ফার্স্ট’ প্রত্যয়ে সম্মানিত সকল স্তরের গ্রাহকদের কথা বিবেচনা করে কমিউনিটির সেবায় জ্যামাইকা শাখাটি সেভাবে সাজানো হয়েছে। ঘরোয়া নিরিবিলি পরিবেশের নতুন এ রেস্টুরেন্টটিতে একসঙ্গে ৫০ জন বসে খেতে পারবেন কিংবা যে কোনো পার্টিও করতে পারবেন।

শেফ মো. খলিলুর রহমানের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত নতুন জ্যামাইকা শাখায় খলিল বিরিয়ানি হাউজের প্রচলিত খাবরের পাশাপাশি ভিন্ন স্বাদের আধুনিক মান ও রুচিসম্মত নানা খাবারের সংযোজন থাকবে বলে তিনি জানিয়েছেন। খলিলুর রহমান বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের উন্নতমানের হালাল খাবারের প্রতিষ্ঠান গড়তে পেরে মহান আল্লার নিকট অশেষ শুকরিয়া আদায় করছি। নিজের শিক্ষা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কমিউনিটিকে সুলভ মূল্যে বিশুদ্ধ হালাল খাবারের সেবা দেয়াই তার লক্ষ্য। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটির নাম খলিল বিরিয়ানি হাউজ হলেও তার সব শাখাতেই বিরিয়ানির পাশাপাশি বাংলাদেশি ঐতিহ্যবাহী অন্যসব খাবারই থাকছে। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের খাবারের রুচির প্রতি খেয়াল রেখে নানান আইটেম থাকছে। তিনি আরো জানান, সকালের নাশতা, দুপুর ও রাতের খাবার এবং মিলাদ-মাহফিল, ইফতার, বিয়ে, জন্মদিন, পিকনিকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাবার পরিবেশন ও কেটারিংয়ে থাকছে আলাদা বৈচিত্র। তিনি জানান, জ্যামাইকা শাখাটি প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত গ্রাহকদের সেবায় খোলা থাকবে। এ রেস্টুরেন্টটিতেও ফ্রি ডেলিভারীর ব্যবস্থা রয়েছে। উদ্বোধন উপলক্ষে থাকছে বিশেষ ছাড়।

উল্লেখ্য, ব্রঙ্কসের স্টারলিং-বাংলাবাজার এলাকায় ১৪৪৫ ওলমাস্টেড অ্যাভিনিউতে যাত্রা শুরু করে ঢাকা ভার্সিটি থেকে গডুতে মাস্টার্স করা সার্টিফাইড শেফ মো. খলিলুর রহমানের মালিকানাধীন রেস্টুরেন্ট খলিল বিরিয়ানি হাউজ। বাংলাদেশি ঐতিহ্যবাহী খাবারসহ আমেরিকান, চায়নিজ খাবারের সমন্বয়ে যাত্রা শুরু করে খলিল বিরিয়ানি হাউজ। শেফ খলিলুর রহমান তার মেধা আর যোগ্যতায় মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে নিউইয়র্ক সিটিতে খলিল বিরিয়ানি হাউজের প্রসার ঘটিয়ে চলছেন।

উল্লেখ্য, উদ্বোধনের পর থেকেই খলিল বিরিয়ানিতে ক্রেতাদের প্রচণ্ড আগ্রহ রয়েছে। খাবারের জন্য অনেককেই দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। আবার কেউ কেউ দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও তার কাঙ্ক্ষিত খাবার পাননি। কারণ চাহিদার তুলনায় ক্রেতা ছিলেন বেশি। সেই বিষয়টি অবশ্যই মোহাম্মদ খলিলুর রহমানকে বিবেচনায় রাখতে হবে বলে বেশ কয়েকজন ক্রেতা জানিয়েছেন।

শেয়ার করুন